Advertisement
২১ জানুয়ারি ২০২৫
Farmers

মহাজনের চড়া সুদে ধারই ভরসা

জেলাজুড়ে সহায়ক মূল্যে বহু চাষি ধান বিক্রি করতে পারছেন না অভিযোগ তুলেছেন।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ০৫ ফেব্রুয়ারি ২০২১ ০৬:৪৬
Share: Save:

বড়ঞার ধান চাষি রাজেশ গুঁইয়ের বিঘা তিনেক জমি চাষ করে সংসার চলে। আড়াই মাস আগে মাঠ থেকে ঘরে ধান তুলেছেন। সেই ধান বিক্রি করে বোরো ধান চাষ করার কথা ছিল। তাই স্থানীয় কিসান বাজারে সহায়ক মূল্যে ধান বিক্রির জন্য মাস দুয়েক আগে তিনি নাম লিখিয়েছেন। কিন্তু দু’মাস পার হলেও এখনও সহায়ক মূল্যে ধান বিক্রি করতে পারেননি। রাজেশ বলছেন, ‘‘সহায়ক মূল্যে ধান বিক্রি করতে পারিনি। অন্যদিকে বোরো ধান লাগানোর সময় চলে যাচ্ছিল। তাই মোটা সুদে মহাজনের কাছ থেকে ঋণ নিয়ে বোরো চাষ শুরু করেছি।’’ বড়ঞা পঞ্চায়েত সমিতির খাদ্য কর্মাধ্যক্ষ সামশের দেওয়ান বলেন, “সহায়ক মূল্যে ধান বিক্রি করতে কিচ্ছু ক্ষেত্রে চাষিদের হয়রানি হতে হচ্ছে। আমি বিষয়টি বিডিওকে জানিয়েছি। যাতে আরও দ্রুত ধান কেনা যায় সেটা দেখছি।”

যদিও জেলা চালকল মালিক সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক জয়কুমার মারাঠি বলেন, “সহায়ক মূল্যে ধান দেওয়ার ক্ষেত্রে চাষিদের উৎসাহ অনেক বেশি। অন্য বছরের তুলনায় এবারে ধানের ফলন অনেক বেশি। ফলে চাষিদের ঘরে ধান মজুত হয়ে আছে।”

ভরতপুর ১ ব্লকের ধান চাষি পূর্ণচাঁদ ঘোষ বলেন‌, ‘‘একদিনে পাঁচশো কুইন্টালের বেশি ধান নেওয়া হচ্ছে না। অথছ বোরো ধান রোপণ শুরু হয়ে গিয়েছে। এই সময় খেতের কাজ ফেলে ধান দেওয়া অসুবিধা। ধান কেনার গতি বাড়লে চাষিদের সুবিধা হয়।”

রাজেশ গুঁই বা পূর্ণচন্দ্র ঘোষ উদাহরণ মাত্র। জেলাজুড়ে সহায়ক মূল্যে বহু চাষি ধান বিক্রি করতে পারছেন না অভিযোগ তুলেছেন। অথচ ধান কেনার লক্ষ্যমাত্রার কাছাকাছি পৌঁছে গিয়েছে েজলা। তাই অনেকেই বোরো ধান লাগানোর খরচ চালাতে অনেকেই মহাজনের কাছ থেকে চড়া সুদে ঋণ নিতে বাধ্য হচ্ছেন।

তবে অভিযোগ উড়িয়ে জেলা খাদ্য দফতরের আধিকারিকরা জানান, ধান কেনার ক্ষেত্রে যে কয়েকটি জেলা রাজ্যের শীর্ষে রয়েছে তার মধ্যে মুর্শিদাবাদ অন্যতম। জেলা খাদ্য নিয়ামক রাজু মুখোপাধ্যায় বলেন, “সরকারি নিয়ম মেনে ও খাদ্য দফতরের কর্মীদের সক্রিয় নজরদারিতে সুষ্ঠু ভাবে চাষিদের কাছ থেকে ধান কেনা হচ্ছে। এখনও পর্যন্ত ধান কেনার ক্ষেত্রে রাজ্যের মধ্যে এগিয়ে আছে আমাদের জেলা। আমাদের জেলায় সব থেকে বেশি কৃষকের কাছ থেকে ধান কেনা হয়েছে।”

মুর্শিদাবাদ জেলা পরিষদের সভাধিপতি মোশারফ হোসেন মণ্ডল বলেন, ‘‘নিয়ম মেনে কৃষকদের কাছ থেকে সহায়ক মূল্যে ধান কেনা হচ্ছে। প্রকৃত চাষি ধান বিক্রি করতে না পারলে, আমাদের জানালে পদক্ষেপ করা হবে।’’

জেলা জুড়ে ৩৩ টি চালকল জেলার ২৫ টি কিসান বাজারে নিয়মিত ভাবে চাষিদের কাছ থেকে সরাসরি ধান কিনছে। এছাড়াও সমবায় সমিতি এবং স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মাধ্যমে শিবির করে ধান কেনা হচ্ছে। এখনও পর্যন্ত জেলাজুড়ে প্রায় ১ লক্ষ ৪০ হাজার চাষি সরাসরি সহায়ক মূল্যে ধান বিক্রি করেছেন। চাষিদের অভিযোগ, ধান দেওয়ার জন্য কুপন সংগ্রহ করা থেকে ধান দেওয়ার ক্ষেত্রে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। ভরতপুর ১ পঞ্চায়েত সমিতির কৃষি কর্মাধ্যক্ষ মিত্রা সরখেল বলেন, “সহায়ক মূল্যে ধান বিক্রি করতে পেরে চাষিরা খুশি হলেও ধান কেনার গতি
বাড়ানো জরুরি।”

অন্য বিষয়গুলি:

Farmers
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy