মুর্শিদাবাদের জঙ্গিপুরে পিরোজপুর সীমান্তে বি এ সেফের নজরদারি। ৫ অগস্ট, ২০২৪। ছবি : অর্কপ্রভ চট্টোপাধ্যায়।
প্রতিবেশী দেশ বাংলাদেশে অস্থিরতা তৈরি হওয়ার পর থেকেই উদ্বেগ দেখা গিয়েছে ভারতীয় সীমান্ত এলাকার গ্রাম-গঞ্জগুলিতে। কারণ, দেশ ভাগ হয়ে গেলেও এখনও পর্যন্ত দুই বাংলায় নিজেদের আত্মীয়-স্বজন ছড়িয়ে আছে হাজারও পরিবারের। মূলত এখন তাঁদের নিয়েই উৎকণ্ঠায় সময় কাটছে এ পারের আত্মীয়দের। সামাজিক মাধ্যমে বাংলাদেশের আন্দোলনের ছবি দেখেও আঁতকে উঠছেন তাঁরা। বিশেষ করে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী পদত্যাগ করে দেশ ছাড়ার পরেই এই উদ্বেগ আরও বেড়ে গিয়েছে এ পারে থাকা আত্মীয়দের মনে। কারণ এর পরবর্তী সময়ে কোন দিকে যাবে বাংলাদেশ, কোন পথে হাঁটবে জনতা, আর কী পদক্ষেপ নেবেন সেখানকার সেনাপ্রধানেরা, তা নিয়েই দুশ্চিন্তার প্রহর গুনছে আত্মীয়রা।
ডোমকলের কুপিলা গ্রামের হাফিজুর রহমানের আত্মীয়দের বড় একটা অংশ থাকেন বাংলাদেশের বিভিন্ন এলাকায়। অস্থির সময়ে তাঁদের সঙ্গে বারবার যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়েছে। হাফিজুরের কথায়, ‘‘মাস কয়েক থেকেই আমরা উদ্বেগের মধ্যে আছি। একটা খারাপ পরিস্থিতির দিকে যে বাংলাদেশ এগোচ্ছে তার আঁচ পাচ্ছিলাম আত্মীয়-স্বজনদের কথাবার্তা থেক। এখন কী অবস্থা সেখানে বিরাজ করবে, সেটা পরিষ্কার নয় আমাদের কাছে। ফলে আমরা যারা এ পারে আছি, সকলেই একটা দুশ্চিন্তার মধ্যে দিন কাটাচ্ছি আত্মীয়দের নিয়ে।’’ রানিনগর সীমান্তের প্রবীণ নাগরিক খয়ের আলি বলছেন, ‘‘দুই মেয়ের বিয়ে দিয়েছি বাংলাদেশে। তাদের সন্তান থেকে নাতিপুতি হয়ে গিয়েছে। ফলে আমার আধখানা হৃদয় ও দেশেই পড়ে আছে। এ দিন ওদের সঙ্গে যোগাযোগ করাও সম্ভব হয়নি। বড্ড দুশ্চিন্তায় আছি আমরা সকলে।’’
ছাত্র আন্দোলনের জেরে বেশ কিছু দিন ধরেই উত্তাল বাংলাদেশ। প্রথমে কোটা আন্দোলনকে ঘিরে উদ্ভূত পরিস্থিতি তৈরি হলেও পরবর্তী সময়ে আন্দোলন একমুখী হয়ে যায়। প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগ দাবি করে আরও জোরদার হয় আন্দোলন। এই সময়ে পুলিশের গুলিতে শতাধিক আন্দোলনকারীর মৃত্যু হয় বলে জানা গিয়েছে বিভিন্ন সূত্রে। পরিস্থিতি এমন হয়েছে যে বেশ কয়েক জন পুলিশ কর্মীরও মৃত্যু হয় আন্দোলনকারীদের আক্রমণে। আর সেই আন্দোলনের জেরে সোমবার দেশ ছেড়েছেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। গণভবনের দখল নিয়েছে জনতা। এরপরে কোন দিকে যাবে বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ তা নিয়ে উদ্বেগে দুই বাংলার সাধারণ মানুষ।
কেবল আত্মীয়-স্বজন নয়, ভারতীয় অনেক পড়ুয়া এখনও বাংলাদেশে আছেন লেখাপড়ার জন্য। বিশেষ করে মেডিকেল কলেজগুলিতে অনেকেই আটকে আছেন এমন পরিস্থিতিতে। চেষ্টা করলেও অনেকেই দেশে ফিরতে পারছেন না সেখান থেকে। ফলে তাদের পরিবার অত্যন্ত দুশ্চিন্তার মধ্যে আছেন এই পরিস্থিতিতে। উল্টো দিকে নানা বিধ কাজে এবং চিকিৎসার জন্য ভারতে এসেও অনেক ও পারের মানুষ আটকে আছেন এমন পরিস্থিতিতে। আর তাদের নিয়েই ঘুম ছুটেছে এখন এ পার বাংলার আত্মীয়দের।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy