বাজারে আনাজ। নিজস্ব চিত্র।
কয়েক মাস ধরেই ঊর্ধ্বমুখী ছিল আনাজের দাম। দিনকয়েক আগে জেলার কয়েকটি খুচরো বাজারে আলুর দাম পঞ্চাশ টাকা ছুঁইছুঁই হয়েছিল। পেঁয়াজের দামও পৌঁছয় কেজিপিছু আশি টাকায়। ব্যাগ হাতে বাজারে গিয়ে আনাজের আগুন-দামে ছ্যাঁকা খেয়ে ফিরছিলেন আমজনতা। বেগুন, পটল, করলা, টম্যাটো, শিমের মতো আনাজের দাম ছিল ৪০-৫০ টাকা প্রতি কেজি।
তবে গত কয়েক দিনে আনাজের দাম কিছুটা কমায় স্বস্তি ফিরেছে ক্রেতাদের। আনাজের কারবারিরা বলছেন, গত দু’দিনে আলুর দাম কমেছে বস্তাপিছু ৫০০-৬০০ টাকা। ফলে জেলার বিভিন্ন বাজারে আলুর কেজিপিছু দাম ৫০ থেকে কমে ৪০ টাকা। তবে তাতে স্বস্তি ফেরেনি ক্রেতার। তাঁরা বলছেন, অন্যবার ডিসেম্বরের গোড়ায় আলুর দাম থাকে বড়জোর ১০-১২ টাকা কেজি। নতুন আলু বাজারে উঠলে পুরনো আলু কেনার খদ্দের মেলে না। আলুর কারবারিরা বলছেন, নভেম্বর মাসের শেষ পর্যন্ত হিমঘর গুলিতে আলু মজুত ছিল। সেই আলু হিমঘর থেকে বের করে খোলা বাজারে বিক্রি করতে হচ্ছে। ফলে দাম কিছুটা কমেছে। অনেকেই মনে করছেন, একশ্রেণির অসাধু কারবারি আলু মজুত করার জন্যই আলুর দাম ৫০ টাকা ছুঁয়েছিল। তবে গত কয়েক দিনে মরসুমি আনাজের দাম অনেকটাই কমেছে। বিক্রেতাদের দাবি, বাজারেও ঢুকতে শুরু করেছে শীতকালীন ফুলকপি, বাঁধাকপি, বেগুন, মুলো, পালংশাক, শিম-সহ রকমারি আনাজ। তাতেই দাম কিছুটা কমেছে মরসুমি আনাজের।
গত কয়েক দিন বহরমপুর, হরিহরপাড়া, নওদা, বেলডাঙা, ডোমকল, লালবাগ—জেলার বিভিন্ন বাজারে মরসুমি আনাজের দাম রয়েছে নাগালের মধ্যেই। মাঝারি মাপের ফুলকপি, বাঁধাকপি বিক্রি হয়েছে ৮-১০ টাকা প্রতিটি, ২০০ টাকা কেজি লঙ্কার ঝাঁজ কমেছে। এখন ৮-১০ টাকায় একশো গ্রাম লঙ্কা মিলছে। বেগুন বিক্রি হয়েছে ১০-১৫ টাকা প্রতি কেজি, শিম ১০ টাকা কেজি। পটল, বরবটি ৩০ টাকা কেজি, টম্যাটো ৪০-৫০ টাকা কেজি। পালংশাক, মুলো, লালশাকের আঁটি মিলছে ৫-৭ টাকায়। সোনারুদ্দিন খান নামে হরিহরপাড়ার এক আনাজ বিক্রেতা বলেন, ‘‘আলুর দাম কেজি প্রতি ১০ টাকা কমেছে। পেঁয়াজ বাদে সব আনাজের দাম অর্ধেকের বেশি কমেছে, ফলে বিক্রিও বেড়েছে।’’
হরিহরপাড়ার শ্রীপুর, রায়পুর, কোমনগর, রমনা, ধরমপুর দস্তুরপাড়া-সহ বিস্তীর্ণ এলাকায় প্রচুর মরসুমি আনাজ চাষ হয়। এই এলাকার আনাজ জেলা সদর-সহ রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে, এমনকি, ভিন রাজ্যেও রফতানি হয়। কয়েক দিন ধরে হরিহরপাড়ার বিভিন্ন গ্রামীণ হাটে ভিড় করছেন আনাজের পাইকাররা।
শ্রীপুর গ্রামের চাষি জয়দেব মণ্ডল বলেন, ‘‘এক সপ্তাহ আগেও আনাজের দাম অনেক বেশি ছিল। কিন্তু হাটে-বাজারে প্রচুর আনাজ আমদানি হওয়ায় দাম পেলাম না।’’ দাম কমায় মুখে হাসি ক্রেতার। স্বজন দাশ নামে হরিহরপাড়ার এক বাসিন্দা বলেন, ‘‘দিনকয়েক আগেও আনাজ কিনতে গিয়ে রেস্ত খালি হয়ে যাচ্ছিল। আনাজের দাম কমায় কিছুটা হলেও স্বস্তি পাচ্ছি।’’ তবে বাজারে নতুন আলু ঢুকতে শুরু করলে আলুর দাম আরও কমতে পারে বলে মত আনাজ কারবারিদের।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy