ভেসে ভেসে: কৃষ্ণনগরে জলঙ্গিতে। নিজস্ব চিত্র
র্যাম্প না-থাকায় ভারতে এসে দূর থেকে তাজমহল দেখে ফিরে যান সদ্যপ্রয়াত পদার্থবিজ্ঞানী স্টিফেন হকিং। ২০০১ সালে হকিং যখন ভারত সফরে আসেন তখন তাজমহলে র্যাম্প তৈরি হয়নি। র্যাম্প ছাড়া প্রতিবন্ধীদের হুইলচেয়ার চালানো অত্যন্ত অসুবিধাজনক। তাই তাজমহলের কাছে পৌঁছতে পারেননি পৃথিবীবিখ্যাত বিজ্ঞানী।
তবে তাঁর জন্য কাঠের র্যাম্প তৈরি করা হয় কুতুবমিনার এবং যন্তরমন্তরে। হকিং ফিরে যেতেই তা খুলে ফেলা হয়। বিষয়টি আদালত পর্যন্ত গড়ায়। কেন দ্রষ্টব্য স্থানগুলিতে প্রতিবন্ধীদের জন্য র্যাম্প থাকবে না, সেই প্রশ্ন ওঠে। তার পরেই ভারতীয় পুরাতত্ত্ব সর্বেক্ষণ তাদের অধীনে থাকা দর্শনীয় স্থানগুলিতে উপযুক্ত পরিকাঠামো তৈরির সিদ্ধান্ত নেয়। সম্প্রতি হাজারদুয়ারি প্যালেস ও মিউজিয়ামে ঢোকার মূল প্রবেশ পথেও নির্মিত হয়েছে র্যাম্প।
হাজারদুয়ারি মিউজিয়ামের দায়িত্বপ্রাপ্ত পুরাতত্ত্ববিদ তথা সুপারিন্টেন্ডেন্ট গোপীনাথ জেনা জানান, দর্শনীয় স্থানে শারীরিক প্রতিবন্ধীদের সমানাধিকার দেওয়ার অন্যতম ধাপ ওই র্যাম্প। এর ফলে প্রতিবন্ধী মানুষেরা হুইল চেয়ারে সহজে মিউজিয়াম ঘুরে দেখতে পারবেন। র্যাম্পের মাধ্যমে হুইল চেয়ারে করে সোজা দোতলায় উঠে আসা যাবে। তার পর তিন তলায় যেতে গেলে লিফট ব্যবহার করে হুইলচেয়ার তোলা যাবে।
মুর্শিদাবাদ ‘হেরিটেজ অ্যান্ড কালচারাল ডেভেলপমেন্ট সোসাইটি’র কর্ণধার স্বপন ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘ভারতীয় পুরাতত্ত্ব সর্বেক্ষণের (কলকাতা মণ্ডল) অধীনে হাজারদুয়ারি ছাড়াও রয়েছে কাটরা মসজিদ, আজিমুন্নেশার সমাধিস্থল এবং খোশবাগে সিরাজদ্দৌলা ও তাঁর স্ত্রী লুৎফুন্নেষা, দাদু আলিবর্দি খাঁয়ের সমাধি। সেখানে দ্রুত র্যাম্প গড়া দরকার।’’
প্রতিবন্ধী মানুষের অসুবিধার কথা তথাকথিত ‘সুস্থ’রা এতদিন অনুভব করেননি বলেই বাড়ির পাশে হলেও বছর পনেরোর শিপ্রা ভট্টাচার্য আজও পৌছতে পারেনি ধামেশ্বর মহাপ্রভু মন্দিরে। সেরিব্রাল পলসি-আক্রান্ত শিপ্রার পক্ষে ছটা সিঁড়ি টপকে বিষ্ণুপ্রিয়া দেবী সেবিত ধামেশ্বর মহাপ্রভু মন্দিরের গর্ভগৃহে পৌঁছনো সম্ভব নয়। অন্য দিকে সোনার গৌরাঙ্গ মন্দিরের নির্মাণ শৈলীর অন্যতম বৈশিষ্ট হল শ্বেতপাথরের ধাপ। রাস্তা থেকে মূল মন্দির পৌঁছতে অতিক্রম করতে হয় তিরিশটিরও বেশি সিঁড়ি। নবদ্বীপের দেড়শো মঠমন্দিরের প্রায় কোনওটিতেই হুইলচেয়ার চলার ব্যবস্থা নেই। নবদ্বীপের মহাপ্রভু মন্দিরের পরিচালন সমিতির সম্পাদক জয়ন্ত গোস্বামী বলেন, “আমরা বিষয়টি নিয়ে আলোচনা শুরু করেছি। খুব দ্রুত সর্বত্র র্যাম্পের পরিকল্পনা বাস্তবায়িত হবে।” মায়াপুর ইস্কন মন্দিরে অবশ্য হুইল চেয়ারের ব্যবস্থা আছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy