এমনই বেহাল সুন্দরপুরের কয়থা গ্রামের রাস্তা। —নিজস্ব চিত্র
বন্যা কবলিত এলাকা বলে পরিচিত এই গ্রাম পঞ্চায়েত। এলাকার পাশ দিয়েই বয়ে গিয়েছে ময়ূরাক্ষী নদী। ওই নদীতে বন্যা নিয়ন্ত্রণের জন্য মাস্টার প্ল্যানের কাজ শুরু হয়েছে। কিন্তু ওই কাজ হচ্ছে নদীর বাম দিকে। ডান দিকে কি মাস্টার প্ল্যানের কাজ হবে না?
শুভেন্দু ঘটক, মালিয়ান্দি
বাম দিকের বাঁধের যেমন ভাবে হচ্ছে একই ভাবে ডান দিকেও মাস্টার প্ল্যানের কাজ হবে। আমি রাজ্যের সেচমন্ত্রী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় ও সেচ দফতরের স্থায়ী সমিতির সভাপতির কাছে সেই দাবি জানিয়েছি। সেচমন্ত্রী আশ্বাস দিয়েছেন কালীপুজোর পর কাজ শুরু হবে।
হলদিয়া-ফরাক্কা বাদশাহি সড়কের মাত্র দেড় কিলোমিটার দূরে সোনাভারুই গ্রামের অবস্থান। গ্রামে রাস্তার অবস্থা তথৈবচ। বর্ষায় নৌকাই একমাত্র যাতায়তের মাধ্যম হয়ে দাঁড়ায়। পঞ্চায়েত কী ব্যবস্থা নিয়েছে।
বীরেন ঘোষ, নবগ্রাম
ওই গ্রামের রাস্তার প্রয়োজন আছে। রাস্তার দু’ধারে কৃষি জমি রয়েছে। জমির মাঝে ওই রাস্তাটি উঁচু করলে কৃষি জমির ক্ষতি হতে পারে। তাই রাস্তাটি উঁচু করে হলেও সেচের জল নেওয়া ও অতিরিক্ত জল বয়ে যাওয়ার জন্য অনেক সেতুর দরকার। জেলা পরিষদ যাতে রাস্তাটি করে সেই দাবি জেলা পরিষদকে জানিয়েছি।
অঞ্চলের অধিকাংশ বাসিন্দা কৃষির উপর নির্ভরশীল। এলাকায় ময়ূরাক্ষী, কুয়ে ও লাঙলহাটার মতো বিল থাকার পরেও সেই সব নদী ও বিলে সুইচগেট না থাকায় জল সেচের কাজে ব্যবহার করা যায় না। একই ভাবে বর্ষায় অতিরিক্ত জলে গাছ ডুবে যায়। আবার বর্ষা শেষে জলের অভাবে চাষ করা যায় না। এলাকায় কৃষি কাজের জন্য সেচের বিষয়ে পঞ্চায়েত কী ব্যবস্থা নিয়েছে?
প্রলয় মাঝি, মজলিশপুর
এলাকায় সেচের সমস্যা আছে। নদী ও বিল থেকে নালার মাধ্যমে জল নিয়ে যাতে সেচের কাজে ব্যবহার করা যায় সেই বিষয়ে পঞ্চায়েত থেকে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। কিন্তু পঞ্চায়েতের তেমন ফান্ড না থাকায় বিষয়টি রাজ্যের সেচ মন্ত্রীকে জানানো হয়েছে।
এলাকায় একটি প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র আছে। কিন্তু সেখানে নিয়মিত চিকিৎসক না আসায় চিকিৎসার কোনও সুবিধে পাওয়া যায় না। চিকিৎসক না থাকায় এলাকার বাসিন্দাদের প্রায় সাত কিলোমিটার দূরে বড়ঞা হাসপাতালে যেতে হয়। পঞ্চায়েত কোনও ব্যবস্থা নিচ্ছে কি?
মোহনলাল শেখ, সুন্দরপুর
এলাকায় স্বাস্থ্য পরিষেবা নেই বললেই চলে। বাসিন্দাদের কথা মাথায় রেখে আমি পঞ্চায়েতের পক্ষ থেকে বেশ কয়েকবার ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক ও বিডিওওকে বিষয়টি জানিয়েছি। এবং স্বাস্থ্য পরিষেবা দেওয়ার জন্য জানিয়েও ছিলাম। কিন্তু কোনও ব্যবস্থা না নেওয়াও স্বাস্থ্য পরিষেবা তলানিতে ঠেকেছে। আমি ফের বিষয়টি বিডিও ও ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিককে জানাব।
বড়ঞা জাঁওহাড়ি গ্রামে সামান্য বৃষ্টি হলেই রাস্তা দিয়ে যাতায়াত করা যায় না। বছর বারো আগে রাস্তায় মোরাম হয়েছে তারপরে মাঝে মধ্যে ভাঙা ইঁট কখনও মাটি দিয়ে রাস্তা সংস্কার করা হয়। ওই রাস্তা দিয়ে স্বাস্থ্যকেন্দ্রে যাওয়ার সময় মাঝ রাস্তাতে প্রসব হয়েছে এমন ঘটনাও ঘটেছে। কিন্তু পঞ্চায়েত কেন ওই রাস্তাটি সংস্কারের ব্যবস্থা নিচ্ছে না?
তপন ঘোষ, জাঁওহাড়ি
রাস্তাটি মেরামতি করার মতো অর্থ পঞ্চায়েতের নেই। আমরা চলাচলের যোগ্য করার জন্য মাঝে মধ্যে কিছু সংস্কারের কাজ করি। ওই রাস্তাটি তৈরি করার জন্য জেলা পরিষদের কাছে দাবি জানানো হয়েছে।
এলাকায় একটি উচ্চ বিদ্যালয় হয়েছে। কিন্তু সেটি এখনও উচ্চ মাধ্যমিক স্তরে উত্তীর্ণ হয়নি। ফলে মাধ্যমিক পাশ করার পরে উচ্চশিক্ষার জন্য সাত থেকে দশ কিলোমিটার দূরে ছুটতে হয় এলাকায় পড়ুয়ায়াদের। পঞ্চায়েত এ বিষয়ে কী কোনও
ব্যবস্থা নিচ্ছে?
মহম্মদ সাবির শেখ, সুন্দরপুর
বিষয়টি আমি বহুবার জেলা স্কুল পরিদর্শকের নজরে আনার চেষ্টা করেছি। স্কুলটি উচ্চ মাধ্যমিকে স্তরে উত্তীর্ণ করার জন্য ব্বস্থাও নেওয়া হয়। কিন্তু স্কুল কর্তৃপক্ষ প্রয়োজনীয় নথি দিতে না পারার কারণে স্কুলটি তা আর কার্যকরী হয়নি। আমি ফের চেষ্টা করব।
বছর সাতাশ আগে এলাকায় বিদ্যুতের সংযোগ এসেছে। কিন্তু বিদ্যুৎ থেকেও তা না থাকার সমান। নিয়মিত বিদ্যুৎ সরবরাহ না হয় না। ভোল্টেজও থাকে না। ফলে এলাকার পড়ুয়াদের ক্ষতির মুখে পড়তে হয়। একই ভাবে ত্ক্ষতির মুখে পড়ছে এলাকার চাষবাসও।
মিলন প্রামাণিক, হাতিশালা
সমস্যাটি বহু দিনের। আমি বিদ্যুৎ দফতরকে বারবার জানিয়েছি। আশ্বাসও মিলেছে। কিন্তু কাজের কাজ কিছু হয়নি। তবে করালিতলাতে একটি সাবস্টেশন হচ্ছে সেটি চালু হলে বিদ্যুতের সমস্যা থেকে এলাকাবাসী রেহাই পাবে বলেও বিদ্যুৎকর্তারা জানিয়েছেন।
বড়ঞা ব্লকে আলু চাষ একটি লাভজনক চাষ। অথচ এলাকায় আলুর বীজ পাওয়ার কোনও ব্যবস্থা নেই। এলাকার চাষিদের আলু হুগলি, বর্ধমান এমনকী পঞ্জাব থেকে আলুর বীজ এনে চাষ করতে হচ্ছে। তাতে চাষের খরচ বাড়ছে। এলাকায় আলুর বীজ রাখার জন্য একটি হিমঘর ও বীজ সংশোধনের ব্যবস্থা থাকলে চাষিদের ওই চাষ করতে অনেক খরচ কম হবে। পঞ্চায়েত কি ভাবছে?
সেন্টু শেখ, বৈদ্যনাথপুর
বিষয়টি নিয়ে আমি কৃষি আধিকারিকদের কাছে দাবি জানাব। প্রয়োজনে রাজ্যের কৃষিমন্ত্রীর কাছেও দাবি জানাব।
আলো জ্বলে না ময়ূরাক্ষী সেতুতে। —নিজস্ব চিত্র
হলদিয়া-ফরাক্কা বাদশাহি সড়ক এই পঞ্চায়েতের উপর দিয়ে গিয়েছে। অবিরাম যানবাহন চলে। এলাকার পথচারী, যাত্রীদের কথা মাথায় রেখে একটি পান্থশালা করলে বিশ্রামের যেমন ব্যবস্থা হয় তেমনই পান্থশালাকে কেন্দ্র করে কর্মসংস্থানও হতে পারে। পঞ্চায়েত কী কোনও ভাবনা চিন্তা করছে?
মহম্মদ জিন্না শেখ, মজলিশপুর
একটা পান্থশালা করার ভাবনাচিন্তাও রয়েছে। একবার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল। কিন্তু তাতে প্রচুর অর্থের প্রয়োজন। তাই পিছিয়ে আসা হয়। জেলা পরিষদকে বিষয়টি জানিয়েছি। একই ভাবে রাজ্যের পরিবহণ মন্ত্রীকে জানানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
দীর্ঘদিন ধরে এলাকার বাসিন্দাদের চাহিদা, পাইপ লাইনের মাধ্যমে বিশুদ্ধ পানীয় জল সরবরাহ করা হোক। বহু বার সেই দাবি পঞ্চায়েত বাসিন্দারা জানিয়েছে। কিন্তু এখনও তা কার্যকরী হয়নি।
অজয় চক্রবর্তী, হাতিশালা
জেলা পরিষদের মাধ্যমে ওই দাবি রাজ্যের জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতরে জানানো হয়েছে। আমি ফের বিষয়টি খোঁজ নেব। তবে জলের প্রয়োজন বুঝে এলাকার সব নলকূপের উপর কড়া নজর রাখা হয়। বিকলের খবর পাওয়া গেলেই সেটা আগে মেরামত করা হয়।
মজলিশপুর বাসস্টপের পাশেই এলাকার কবরস্থান। ওই কবরস্থানে দেওয়াল না থাকায় অনেকেই ওই কবরস্থানে শৌচক্রিয়া সারছে। বিষয়টি নিয়ে পঞ্চায়েত কী কোনও ব্যবস্থা নিয়েছে?
দানিক শেখ, মজলিশপুর
কবরস্থানের চারদিকে দেওয়াল তোলার মতো আর্থিক পরিকাঠামো পঞ্চায়েতের নেই। আমি বিষয়টি জেলা পরিষদকে জানাব।
মালিয়ান্দি গ্রামে অধিকাংশ পুকুর গ্রামের প্রধান রাস্তার উপর। ওই পুকুরগুলিতে গার্ডওয়াল না থাকায় রাস্তা ভেঙে পুকুরে গিয়ে মিশছে। পঞ্চায়েত কেন কোনও ব্যবস্থা
নিচ্ছে না ?
সমীর দত্ত, মালিয়ান্দি
বাঁশ ও বালির বস্থা দিয়ে পুকুরের ধারগুলি বাঁধানোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আমি বিষয়টি দেখে শীঘ্রই ব্যবস্থা নেব।
২০০৬ সালে ময়ূরাক্ষীর বাঁধ ভেঙে কৃষিজমিগুলি বালিতে ভরে গিয়েছিল। সেখানে মালিয়ান্দি , নবগ্রাম এলাকার বাসিন্দাদের প্রায় ৫০ একর জমি বালির নীচে চাপা পড়েছে। পঞ্চায়েত বহুবার দাবি জানিয়েও সেই বালি তোলার কোনও ব্যবস্থা পঞ্চায়েত নিচ্ছে না।
কৃষ্ণ বাগদি, নবগ্রাম
দশ বছর আগে ঘটনাটি ঘটলেও ওই জমি থেকে একশো দিনের প্রকল্পের আইবিএস প্রকল্পের মাধ্যমে জমি থেকে বালি তোলার কাজ শুরু হয়েছে। প্রায় ৩৫ বিঘা জমিতে নতুরন করে চাষ শুরু হয়েছে। এখনও ওই বালি তোলার কাজ চলছে। সমস্ত জমি চাষযোগ্য করে চাষিদের ফিরিয়ে দেওয়া হবে।
আমাদের এলাকায় একটি স্কুল নেই। গ্রামের খুদেরা এক কিলোমিটার রাস্তা পেরিয়ে প্রাথমিক স্কুলে যায়। পঞ্চায়েত থেকে কেন কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না?
কালীচরণ ঘোষ, মামদপুর
মামদপুর গ্রামে একটিও স্কুলে নেই। স্কুলের দাবি গ্রাম থেকে কখনও তা জানানো হয়নি। আমি বিষয়টি ব্লকের অবর স্কুল পরিদর্শককে জানাব। নতুন স্কুল যাতে ওই গ্রামে হয় সেই দাবিই জানানো হবে।
অধিকাংশ অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রে নিয়ম মেনে শিশুদের খাওয়ার ব্যবস্থা করা হয় না। পুষ্টিকর খাবার থেকে বঞ্চিত হচ্ছে পড়ুয়ারা। বাসিন্দারা বহুবার ওই সব কেন্দ্রগুলিতে নজদারি চালানোর পরেও কোনও উন্নতি হয়নি। পঞ্চায়েত থেকে কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
সুকুমার ঘোষ, রঘুনাথপুর
আমি বহু অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি বিডিওর নজরে এনেছি। কিন্তু সমাধান হয়নি। বিষয়টি জেলাশাসককে জানাব।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy