দুয়ারে রেশন প্রকল্পে বিলি সামগ্রী। বুধবার শান্তিপুরে। নিজস্ব চিত্র
সকাল ৮টা নাগাদ ছোট গাড়িতে করে চাল, আটা, গম নিয়ে বেরিয়ে পড়েছিলেন চাকদহের ১৪ নম্বর ওয়ার্ডের পাবনা কলোনির রেশন ডিলার সুদীপ সাহা। সঙ্গে ইলেকট্রনিক ওজন মেশিন। গাড়ি দাঁড়াল কাকলি শর্মার বাড়ির সামনে। তিনি থলি হাতে বেরিয়ে এসে নিলেন চাল আর গম। গাড়ি গেল পর পর বাড়িতে।
তবে এই ছবি বেশির ভাগ জায়গায় তেমন চোখএ পড়েনি। বুধবার থেকে গোটা রাজ্যের সঙ্গে নদিয়াতেও পরীক্ষামূলক ভাবে শুরু হয় ‘দুয়ারে রেশন’ কর্মসূচি। এ দিন জেলায় মোট ১৮৪ জন রেশন ডিলার যোগ দেন। তবে সব জায়গায় বাড়ি-বাড়ি যাননি ডিলারেরা। বহু ক্ষেত্রে একটা জায়গায় রেশনের সামগ্রী নিয়ে গাড়ি দাঁড়িয়ে থেকেছে। উপভোক্তারা এসে সেখান থেকে সামগ্রী নিয়েছেন।
নবদ্বীপে সাতটি ওয়ার্ডে এ দিন প্রকল্প শুরু হয়েছে। কল্যাণীরও বেশ কয়েক জায়গায় এই কর্মসূচি নেওয়া হয়। তবে কল্যাণী ‘বি’ ব্লকের বাসিন্দা সুবীর ভৌমিক নিজে রেশন নিয়েও দাবি করেন, “কল্যাণীর অনেক বাড়িই আছে, যারা অতিমারি পরিস্থিতিতে রেশন ডিলারকে ঢুকতে দেবে না।”
চাকদহ পুরসভার প্রশাসক বোর্ডের চেয়ারম্যান স্বপন গুপ্ত বলেন, “এ দিন চারটি ওয়ার্ডে দুয়ারে রেশন দেওয়া হয়েছে। সব জায়গায় বেশ সাড়া পাওয়া গিয়েছে। মানুষ ঘর থেকে বেরিয়ে রেশন নিয়েছেন।” স্থানীয় রেশন ডিলার সুদীপ সাহা বলেন, “এ বার অনেকেই দোকান থেকে রেশন নিয়ে গিয়েছেন। যাঁরা বাকি ছিলেন, তাঁদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে রেশন দেওয়া হচ্ছে।” তবে তাঁর অভিযোগ, “সার্ভারের সমস্যা রয়েছে। ঠিক মতো নেট পাওয়া যাচ্ছে না।”
কৃষ্ণনগর শহরেও ছ’টি এলাকায় বাড়ি বাড়ি রেশন পৌঁছে দিয়েছেন ডিলাররা। শান্তিপুর ব্লকের সাতটি গ্রাম পঞ্চায়েতের ছ’জন ডিলার ও শান্তিপুর শহরের পাঁচ জন ডিলারও বাড়ি-বাড়ি গিয়ে রেশন দিয়েছেন। কোথাও টোটো, কোথাও ছোট গাড়িতে করে সামগ্রী নিয়ে যাওয়া হয়েছে। তেহট্ট ১ ব্লকে আবার ১১টি দোকান থেকে রেশন বিতরণ করা হয়েছে। তবে করিমপুরে প্রথম দিনেই ডিলারেরা লোকসানের কথা তুলে জানিয়ে দেন, বাড়ি-বাড়ি রেশন পৌঁছনো তাঁদের পক্ষে সম্ভব নয়। করিমপুর ১ ব্লকের রেশন ডিলার অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি উত্তম কুমার বিশ্বাস বলেন, “প্রত্যেক রেশন ডিলারের এলাকা ১৬টি ক্লাস্টারে ভাগ করা হয়েছে। আমরা ক্লাস্টার অনুযায়ী সপ্তাহের দিন ভাগ করে নির্দিষ্ট দিনের নির্দিষ্ট সময়ে সেই জায়গা থেকে সামগ্রী বণ্টন করব বলে জানিয়ে দিয়েছি। বাড়ি-বাড়ি গিয়ে রেশন দেওয়া সম্ভব হবে না। তবে বাড়িতে একা কোনও বয়স্ক ব্যক্তি থাকলে তাঁদের যে কোনও মূল্যে বাড়িতে রেশন পৌঁছে দেওয়ার ব্যবস্থা করব।” তবে অনেক পাড়ায় গাড়ি তো দূরের কথা, রিকশা যাওয়ারও রাস্তা নেই বলে ডিলারেরা আক্ষেপ করছেন।
নদিয়া জেলা খাদ্য নিয়ামক দুলালচন্দ্র ভক্ত বলেন, “এ দিনের কর্মসূচি পুরোপুরি সফল। মানুষের উৎসাহ ছিল চোখে পড়ার মত। গোটা সেপ্টেম্বর মাসে মঙ্গল থেকে শুক্রবার পর্যন্ত এ ভাবেই বাড়ি-বাড়ি রেশন দেওয়া হবে। শনি ও রবিবার রেশন দোকান খোলা থাকবে। অক্টোবর মসের জন্য যা নির্দেশিকা আসবে, সেই মতো কাজ হবে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy