নেই নিকাশি নালা। রাস্তায় বাড়ির জল। ৯ নম্বর ওয়ার্ডে। নিজস্ব চিত্র
সন্ধে নামলে ঘরে থাকা যায় না। মশা এসে ছেঁকে ধরে। কোথাও নর্দমার জমা জল থেকে এত দুর্গন্ধ ছড়ায় যে, বাড়ির জানলা-কপাট খোলার জো থাকে না। কোনও ওয়ার্ডে পাকা নর্দমা থাকলেও পরিষ্কার করা হয় না। কোথাও আবার পাকা নর্দমাই হয়নি। এমনই ভাবে শহরের নিকাশি ব্যবস্থা নিয়ে চাকদহের বাসিন্দাদের অভিযোগের তালিকা বেশ লম্বা।
স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশের অভিযোগ, বছরের পর বছর কেটে গেলেও নিকাশি নিয়ে পরিকল্পনা মাফিক কিছু হয়নি। যেটুকু হয়েছে সেটাও অধিকাংশ জায়গায় অবৈজ্ঞানিক। নিকাশি বলতে যা বোঝায় সেটাই হয়ে ওঠেনি। গত পাঁচ বছরে সুযোগ পেয়েও পুরসভা নিকাশির ব্যাপারটি কার্যত এড়িয়ে গিয়েছে। জেলার রাজনৈতিক মহলের ধারণা, চাকদহ শহরে নিকাশির সমস্যা এতটাই প্রকট যে, আসন্ন পুরভোটে বিরোধীরা সেটিকে ইস্যু করতে পারে।
চাকদহ শহরে মোট ২১টি ওয়ার্ড রয়েছে। তার মধ্যে ১, ২, ৩, ৭, ৮, ৯, ১০ ও ২১ নম্বর ওয়ার্ডে নিকাশির অবস্থা বেহাল বলে জানান স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশ। তা নিয়ে তাঁদেরও ক্ষোভও লুকিয়ে রাখেননি। তাঁরা জানান, চাকদহ থানার সামনে দিয়ে রানিনগরের দিকে যে রাস্তাটি চলে গিয়েছে তার ডান দিকে রয়েছে পাকা নর্দমাটি গাছ-গাছালিতে ভরেছে। দূর থেকে দেখে বোঝার উপায় নেই সেটি নর্দমা। দীর্ঘ দিন ধরে ৭ নম্বর ওয়ার্ডের উত্তরঘোষপাড়ায় জঙ্গল কাটা হয় না। ১ নম্বর ওয়ার্ডের ভবানীপুরে আবার নর্দমা পাকা হয়নি। অপেক্ষাকৃত নিচু এলাকা হওয়ায় নানা এলাকার জল সেখান দিয়ে যায়। প্লাস্টিক আর নানা আবর্জনায় নালা দিয়ে ঠিক মতো জল প্রবাহিত হয় না। ফলে, একটু বৃষ্টি হলে এলাকা জলমগ্ন হয়ে যায়। সেই নোংরা জল ঠেলে যাতায়াত করতে হয়। শহরের পশ্চিম দিকে ৯ নম্বর ওয়ার্ডে অনেক জায়গায় আবার নর্দমাই তৈরি হয়নি। বাড়ির নোংরা জল রাস্তায় এসে জমা হয়। নর্দমা না থাকায় সেই জল বার হতে পারে না।
১ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা কমল দাস বলেন, “কোনও ভাবেই আমাদের ওয়ার্ড পুরসভার কাছে গুরুত্ব পেল না। আমরা যে এখানে বসবাস করি তার কোনও মূল্য নেই। পাকা নর্দমা না করে দেওয়ার জন্য সমস্যার পড়তে হচ্ছে। তা দেখার কেউ নেই।” ৯ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা প্রতিমা বিশ্বাস বলেন, “একটু বৃষ্টি হলে বুড়িমাতলায় জল জমে যায়। খানিক দূরে বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে। জল জমায় পড়ুয়াদের জল ভেঙে যেতে-আসতে হয়। ১০ নম্বর ওয়ার্ডের সিংহেরহাট এলাকার বাসিন্দা সতীশ রায় বলেন, “জল জমে থাকে। মানুষ ঠিক ভাবে চলাচল করতে পারে না।” ৭ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা অসিত দত্ত বলেন, “নর্দমা উপরে জঙ্গল হয়ে গিয়েছে। সেগুলো পরিষ্কার করা হয় মা। নর্দমা তো দূরের কথা।’’
৩ নম্বর ওয়ার্ডের রবীন্দ্রনগরের বাসিন্দা সমীর মজুমদার বলেন, “নর্দমা পরিষ্কার না-হওয়ায় মশার উপদ্রব হয়। সন্ধ্যায় ঘরে থাকা যায় না। ছড়ানো হয় না মশা মারার ওষুধও।”
কাউন্সিলরদের কেউ কেউ অবশ্য বলছেন, নিকাশির ব্যাপারটি মোটেও এড়িয়ে যাওয়া হয়নি। সংস্কার করা হলেও পুরনাগরিকদের একাংশ নিকাশি নালায় নির্বিচারে প্লাস্টিক ফেলে জল যাওয়ার রাস্তা কার্যত বন্ধ করেছেন। তাই সংস্কার করেও যথাযথ সুফল মেলেনি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy