গাফিলতির অপরাধে আটকে দেওয়া হল কৃষ্ণনগর সদর হাসপাতালের প্রসূতি বিভাগের এক চিকিৎসকের তিন বছরের বেতন বৃদ্ধি ও পদোন্নতি। সেই সঙ্গে কড়া বার্তা দেওয়া হয়েছে অন্য চিকিৎসকদেরও।
রাজ্য স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর, মাস সাতেক আগে সদর হাসপাতালে সুপ্রতিম মিত্র নামে ওই চিকিৎসকের তত্ত্বাবধানে ভর্তি হন এক প্রসূতি। এক দফা চিকিৎসার পরে তাঁকে কল্যাণী জেএনএম হাসপাতালে স্থানান্তরিত করেন সুপ্রতিম। সেখানেই মৃত্যু হয় ওই প্রসূতির। চিকিৎসায় গাফিলতির অভিযোগ পেয়ে জেলা স্বাস্থ্য দফতর তদন্ত শুরু করে।
জেলা থেকে স্বাস্থ্য ভবনে তদন্তের রিপোর্ট পাঠানো হয়েছিল। তাতে গাফিলতির কথা বলা হয়েছিল। ওই রিপোর্ট পেয়ে কয়েক জন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসককে তদন্ত করতে পাঠায় স্বাস্থ্য দফতর। তাঁদের রিপোর্টেও গাফিলতির বিষয়টি উঠে আসে। তার পরেই স্বাস্থ্য ভবনের এই পদক্ষেপ। জেলার স্বাস্থ্যকর্তাদের বক্তব্য, ওই চিকিৎসকের বিরুদ্ধে আগে একাধিক বার অভিযোগ উঠেছে। সুপ্রতিম এ নিয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাননি। তবে জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক তাপস রায় বলেন, “স্বাস্থ্যভবন ওঁর বিরুদ্ধে যা-যা পদক্ষেপ করতে বলেছে, তার সব ক:টিই করা হবে।”
স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর, শুধু সুপ্রতিম মিত্রকে শাস্তি দিয়েই ক্ষাম্ত হবে না প্রশাসন। এর মাধ্যমে অন্য চিকিৎসকদেরও বার্তা দেওয়া হল। এর পরেও যদি তাঁরা না শুধরোন, তা হলে অন্যদের ক্ষেত্রেও একই ধরনের পদক্ষেপ করা হতে পারে। গত কিছু ধরেই জেলার সরকারি চিকিৎসকদের সতর্ক করা হচ্ছে। জনপ্রতিনিধিরাও বৈঠক করেছেন নানা হাসপাতালের কর্তৃপক্ষ ও চিকিৎসকদের সঙ্গে। কারা কেমন কাজ করছেন, তাও খুঁটিয়ে পরীক্ষা করেছে জেলা হাসপাতালের রোগীকল্যাণ সমিতি। সিন্ধান্ত হয়েছে, নতুন করে চিকিৎসকদের ডিউটির সময়সূচি তৈরি করে প্রকাশ্যে টাঙিয়ে দেওয়া হবে।
জেলা হাসপাতালে গাফিলতির অভিযোগ অবশ্য এই নতুন নয়। বছর কয়েক আগে চিকিৎসায় গাফিলতি প্রমাণ হওয়ায় প্রসূতি বিভাগের এক চিকিৎসক সাসপেন্ড হয়েছিলেন। দিন কয়েক আগে জরুরি অস্ত্রোপচার না করে গোটা দিন ফেলে রেখে দেওয়ায় শান্তিপুরের এক প্রসূতির গর্ভস্থ সন্তানের মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছিল সুপ্রতিম মিত্রের বিরুদ্ধেই। তারও তদন্ত শুরু হয়েছে।
কিন্তু স্বাস্থ্যভবনের কড়া অবস্থান দেখে চিন্তায় পড়ে গিয়েছেন সরকারি চিকিৎসকদের একাংশ। তাঁদের মতে, এতে চিকিৎসকদের মনোবল ভেঙে যাবে। কঠিন পরিস্থিতে পড়লে তাঁরা সিদ্ধান্তহীনতায় ভুগবেন। তাতে ভুলই বাড়বে। পরিকাঠামোর উন্নতি না করে শুধু ডাক্তারদের দায়ী করলে
সমস্যা ঘোরালো হবে বলেও মনে করছেন তাঁরা। ডাক্তারদের অন্য
একটি অংশ আবার স্বাস্থ্য ভবনের অবস্থানকে সাধুবাদ জানিয়েছেন। তাঁদের মতে, স্বার্থান্বেষী কিছু চিকিৎসকের কারণে প্রশাসন ও আমজনতার কাছে তাঁদের সকলের নাম খারাপ হচ্ছে। স্বাস্থ্য দফতর কড়া হলে এই সব ডাক্তারেরা ফাঁকি মারতে ভয় পাবেন। তাতে পরিস্থিতি অনেকটাই শুধরোবে। জেলা হাসপাতাল সুপার শচীন্দ্রনাথ
সরকার অবশ্য এ নিয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাননি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy