ফাইল চিত্র।
জেলার স্কুলগুলিকে পঠনপাঠনে উৎসাহ দিতে, পর্ষদ পরিচালিত কোনও পরীক্ষায় পরীক্ষার্থীদের একশো শতাংশ পাশ করলে পুরস্কার দেওয়ার প্রথা চালু করেছিল জেলা স্কুলশিক্ষা দফতর। বছর কয়েক ধরে সে পুরস্কারে শুধু পড়ুয়াদের উৎসাহ বাড়েনি, জেলার বিভিন্ন স্কুলের প্রধান শিক্ষকেরা বলছেন, ‘‘স্কুলগুলির মধ্যে একটা সুস্থ প্রতিযোগিতাও শুরু হয়েছিল।’’ কোভিড-আবহের অজুহাতে আচমকা সেই পুরস্কার-প্রথায় দাঁড়ি পড়ে গেল।
পুরস্কারটা চালু করেছিলেন জেলার পূর্বতন স্কুল পরিদর্শক পূরবী বিশ্বাস। পড়াশোনার মান বাড়ানোর জন্য উৎসাহ দেওয়ার পাশাপাশি স্কুলে শিক্ষকদের হাজিরা, ছেলেমেয়েদের পড়ানোর প্রতি উৎসাহ-ও তাঁর অন্যতম লক্ষ্য ছিল। শর্ত একটাই— মাধ্যমিক কিংবা উচ্চমাধ্যমিকে পাশের হার একশো শতাংশ হতে হবে। জেলার বিভিন্ন স্কুলের মধ্যে তা এক সময় হয়ে দাঁড়িয়েছিল ‘প্রেস্টিজ ফাইট’। পুরস্কার প্রথা তুলে দেওয়ার পিছনে জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শক অমরকুমার শীলের সংক্ষিপ্ত জবাব, “ওই পুরস্কার শিক্ষা দফতরের নির্দেশে দেওয়া হত না। জেলা থেকে ব্যবস্থা করা হয়েছিল। করোনা আবহে তা বন্ধ করা হল। পরে আবার ভেবে দেখা যাবে।’’ যা নিয়ে বিভিন্ন স্কুলের প্রধান শিক্ষকদের পাল্টা প্রশ্ন, ‘করোনা আবহে পুরস্কার বন্ধের যোগসূত্র কোথায়!’’ জেলা শিক্ষা দফতরের এক কর্তা অবশ্য জানান, চলতি বছরে, বহরমপুর ব্লকের বেশ কিছু স্কুলে মাধ্যমিকের টেস্ট পরীক্ষায় অকৃতকার্য পড়ুয়াদের পাশ করিয়ে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিলেন ওই স্কুল পরিদর্শক। স্কুল পরিদর্শক বা ডিআই এমন নির্দেশ দিতে পারেন কি না, তা নিয়ে খোলাখুলিই সরব হয়েছিল স্কুল কর্তৃপক্ষ। ডিআইয়ের নির্দেশ মেনে কয়েকটি স্কুল সেই অকৃতকার্য পড়ুয়াদের পাশ করিয়ে দেয়। মাধ্যমিকের ফল প্রকাশ হতেই দেখা যায় অকৃতকার্য সেই ছাত্রছাত্রীদের অনেকেই পাশ করতে পারেনি। যারা করেছে, তাদের অধিকাংশই কোনওক্রমে। দেখা যায় জেলা সদরের ১০৯টি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের মধ্যে মাত্র ১১টি বিদ্যালয়ের একশো শতাংশ পড়ুয়া পাশ করেছে। জেলা স্কুলগুলির অধিকাংশের মতে, সেই কারণেও জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শক এ বছরের ওই অনুষ্ঠান বাতিল করে দিয়েছেন।
ডিআইয়ের নির্দেশ মানতে বাধ্য হওয়া বহরমপুরের একটি স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা চৈতালি চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘সরকারি নির্দেশমতো মূল্যায়ন করে ৪০ জনকে পাশ করানো যায়নি। ফল বেরোলে দেখা যায় তাদের কয়েক জন পাশ করতে পারেনি। ফল খারাপ হয়েছে বাকিদের। ওরা পাশ করলে এ বারও আমাদের সব পরীক্ষার্থী পাশ করত।’’
বহরমপুরের এমন বেশ কয়েকটি স্কুল রয়েছে, ডিআইয়ের নির্দেশে ‘ঢেঁকি গেলায়’ একশো শতাংশ পাশের লক্ষ্যে পৌঁছতে পারেনি তারা। সেই সব স্কুল কর্তৃপক্ষের প্রশ্ন, নিজের সেই নির্দেশকে আড়াল করতেই কি পুরস্কার-প্রথা তুলে দিলেন ডিআই!
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy