শ্যামনগর পঞ্চায়েতের এই সেই জায়গা। নদিয়ার শ্যামনগরে। ১৩ জুলাই ২০২৪। ছবি: সাগর হালদার।
সরকারি জমি দখল হওয়া নিয়ে সরব হয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। দখল নিয়ে তাঁর নিশানা থেকে বাদ যায়নি দলের নেতারাও। এর মধ্যেই সরকারি জমি দখল করে বিক্রি ও বাড়ি তৈরির অভিযোগ উঠল শ্যামনগর পঞ্চায়েতের আশরফপুরে়। এক্ষেত্রেও অভিযোগের তির শাসক দলের বিরুদ্ধেই।
কয়েক দিন আগে শ্যামনগরের বিজেপির পঞ্চায়েত প্রধান মানসী স্বর্ণকার বিশ্বাস প্রশাসনের বিভিন্ন জায়গায় অভিযোগ জানালেও কোনও ব্যবস্থা নেওয়া দূরের কথা। জমি দখল মুক্তই করা হয়নি। এই অবস্থায় সুরাহা পেতে মানবাধিকার কমিশনে অভিযোগ জানিয়েছেন প্রধান।
আশরফপুরে তেহট্ট -পলাশিপাড়া রাজ্যসড়কে শ্যামনগর বাসস্ট্যান্ডের কয়েকশো মিটার আগে ওই সরকারি জমি। পঞ্চায়েত সূত্রে খবর, বেশ কয়েক শতক ওই খাস জমিতে বর্জ্য ব্যবস্থাপনার সরকারি প্রকল্প হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু ওই জমিতে প্রকল্প তৈরিতে বাধা দেয় এলাকার কয়েকজন। অভিযোগ, কয়েক মাস পর ওই জায়গা দখল করে বাড়ি তৈরি শুরু করে বাধাদানকারীরা। এলাকায় তৃণমূলের কর্মী-সমর্থক বলে পরিচিত ওই লোকেরা ওই জায়গা দখল করে রেখেছিল বলে অভিযোগ। গ্রামের কিছু মানুষ প্রধানের কাছে লিখিত অভিযোগ জানান। প্রধান বেশ কয়েক মাস আগে তেহট্ট মহকুমা শাসকের দফতর এবং তেহট্ট-১ ব্লক অফিস ও ভূমি দফতরে লিখিত অভিযোগ করেন।
প্রধানের দাবি, বিভিন্ন দফতরে অভিযোগ জানালেও কাজ হয়নি। উল্টে, আরও বেশি শ্রমিক লাগিয়ে বাড়ি তৈরি হয়ে যায়। এমনকি বেশ কয়েকজনকে ওই জমি বিক্রি করাও হয়েছে। শনিবার গিয়ে দেখা গেল, ওই জমিতে নির্মীয়মাণ বাড়িতে বসবাস শুরু করেছেন কয়েকজন। তাঁদের মধ্যে এক মহিলাকে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বলেন, “এটা খাস জমি জানি তো। তবে আশরফপুরের কয়েকজন এখানে আমাদের থাকা ব্যবস্থা করে দিয়েছে।’’ যাদের বিরুদ্ধে সরকারি জমি দখলের অভিযোগ, তাদের একজন স্বরূপ শেখ বলেন, “এ সব অভিযোগ সঠিক নয়।”
প্রধান মানসী স্বর্ণকার বিশ্বাস বলেন, “মুখ্যমন্ত্রী যেখানে সরকারি জমি দখলমুক্ত করার কথা বলছেন। সেখানে তাঁরই দলের লোকজন এই কাজ করছে। অথচ প্রশাসন নিষ্ক্রিয়। তাই ব্যবস্থা নিতেই মানবাধিকার কমিশনে অভিযোগ জানিয়েছি।” তেহট্টের তৃণমূল বিধায়ক তাপস সাহা বলেন, “ঘটনাটা শুনেছি। তবে দলগত কোনও ব্যাপার নয়। প্রশাসন ব্যবস্থা নিয়ে ওই সরকারি জমি দখলমুক্ত করুক।”
তেহট্ট-১ ব্লক ভূমি ও ভূমি রাজস্ব আধিকারিক স্বপন সাহা বলেন, “ওই জমি খাস। তদন্ত করে তেহট্ট থানায় চারজনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে।” বিডিও সঞ্জীব সেন বলেন, “পঞ্চায়েত আইনে ধারা আছে। যেখানে প্রধান তাঁর এলাকায় কোনও সরকারি জমিতে অবৈধ নির্মাণ হলে তা দখলমুক্ত করতে পারেন। এই মর্মে প্রধানকে ব্যবস্থা নিতে চিঠি দেওয়া হয়। এমনকি তাঁকে সব ধরনের সহযোগিতা করার কথাও বলা হয়। কিন্তু তিনি তা করেননি।” মহকুমা শাসক অনন্যা সিংহ বলেন, “খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy