Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪
pregnant

সংস্কারের ঠেলায় হোম-ডেলিভারি ঠেকায় কে!

গত বছর এই গ্রামীণ হাসপাতাল  রাজ্যের  ব্লক ও গ্রামীণ হাসপাতালগুলির মধ্যে শিশু প্রসবের সংখ্যায় প্রথম স্থান অধিকার করে। প্রসবের সংখ্যা ছিল  ৯০৪৭। 

গর্ভধারণ বেড়েছে গোটা দেশ জুড়েই। প্রতীকী চিত্র।

গর্ভধারণ বেড়েছে গোটা দেশ জুড়েই। প্রতীকী চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
ধুলিয়ান শেষ আপডেট: ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ০১:৫৩
Share: Save:

দিন কয়েক আগে, ধুলিয়ান শহরের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের খরবোনা পল্লিতে বাড়িতেই প্রসব হয়েছিল মেরিনা বিবির। অনুপনগর স্বাস্থ্যকেন্দ্র থেকে মাত্র এক কিলোমিটার দূরে তাঁর বাড়ি। তবু প্রসব হয়েছিল বাড়িতেই। উচ্চ রক্তচাপ জনিত সমস্যা থাকায় রক্তক্ষরণ শুরু হলে তাকে অনুপনগর গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।

কিন্তু হাসপাতালের চিকিৎসক তাঁকে রেফার করে ছিলেন জঙ্গিপুর মহকুমা হাসপাতালে। রাস্তাতেই মারা যান প্রসুতি। বৃহস্পতিবার ঘটেছিল একই ঘটনারই পুনরাবৃত্তি। প্রসুতির শ্বশুরবাড়ি ধুলিয়ান শহরের গাজিনগরে। সেখান থেকে অনুপনগর স্বাস্থ্যকেন্দ্র মেরেকেটে দেড় কিলোমিটার। অথচ সন্তান হওয়ার জন্য প্রসুতিকে নিয়ে যাওয়া হয় বাবার বাড়ি ঝাড়খণ্ড লাগোয়া ভাসাই পাইকরে। যেখানে স্থানীয় পুটিমারি স্বাস্থ্যকেন্দ্র প্রায় কুড়ি বছর বন্ধ। অগত্যা বাড়িতেই প্রসব। এবং সমস্যা দেখা দেওয়ায় ফের গন্তব্য সেই অনুপনগর স্বাস্থ্যকেন্দ্র। সেখান থেকে চেনা নিয়মে রেফার করা হয় জঙ্গিপুর হাসপাতালে। ভর্তির কিছুক্ষণের মধ্যেই মারা যান শ্যামলী বিবি। শমসেরগঞ্জের ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক তারিফ হোসেনের অভিযোগ, দাইয়ের হাতে প্রসব করাতে গিয়েই এমনটা ঘটেছে। প্রায় সাড়ে তিন লক্ষ ঘন জন বসতির শমসেরগঞ্জ ব্লকে তিনটি স্বাস্থ্যকেন্দ্রের দু’টিতে অন্তর্বিভাগ বন্ধ দীর্ঘদিন। তাই অনুপনগর গ্রামীণ স্বাস্থ্য কেন্দ্রের উপর চাপ খুব বেশি।

গত বছর এই গ্রামীণ হাসপাতাল রাজ্যের ব্লক ও গ্রামীণ হাসপাতালগুলির মধ্যে শিশু প্রসবের সংখ্যায় প্রথম স্থান অধিকার করে। প্রসবের সংখ্যা ছিল ৯০৪৭। এ বারে তা ১১ হাজার ছাড়িয়েছে। কিন্তু সমস্যাবহুল এমন একটি অতি ব্যস্ত হাসপাতালে যেখানে শিশুর জন্মহার প্রতি দিন গড়ে ২৫ জন, সেখানে চিকিৎসকের সংখ্যা ৫। পাশাপাশি অন্য গ্রামীণ স্বাস্থ্য কেন্দ্রে মাসে প্রসবের সংখ্যা দিনে ২জন হলেও সেখানে ৫ জন চিকিতসক।

শুধু তাই নয়, ৩৩টি উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রে রয়েছে মাত্র ১৪জন এএনএম কর্মী। ৩৬০ জন আশাকর্মীর জায়গায় রয়েছে মাত্র ১১৬ জন। প্রত্যেক প্রসুতিকে অন্তত তিন বার প্রাক-প্রসব চেকআপ দরকার। কিন্তু কর্মীর অভাবে সবসময় তা হয়ে ওঠে না। তা ছাড়া এখনও অনেক প্রসুতিকেই স্বাস্থ্যকেন্দ্রে প্রসবের জন্য রাজিও করানো যায় না। প্রসূতিদের অকাল মৃত্যু তারই ফল বলে মনে করেন স্বাস্থ্য কর্তারা।

ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক বলছেন, “শমসেরগঞ্জ অত্যন্ত পিছিয়ে পড়া ব্লক। বহু প্রতিকূলতার মধ্যে কাজ করতে হয় এই এলাকায়। তবু গত বছর যেখানে হোম ডেলিভারি ছিল ১৭৮০, এ বার তা কমে দাঁড়িয়েছে প্রায় ৭০০। কিন্তু বাড়িতে প্রসব পুরোপুরি বন্ধ করা গেল কোথায়, তাই মৃত্যুর ঘটনা ঘটেই চলেছে।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Pregnancy Delivery Block Health Centers
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy