গয়েশপুর পঞ্চায়েতের সিপিএম এর বিজয়ী প্রার্থী শান্তিপুর এর বিধায়কের হাত ধরে যোগ দিচ্ছেন তৃণমূলে, নদিয়ার শান্তিপুর। ছবি: প্রণব দেবনাথ (সংগৃহীত)
সিপিএমের টিকিটে জয়ী প্রার্থী ‘বাধ্য হয়ে’ যোগ দিলেন তৃণমূলে। নদিয়ার গয়েশপুর পঞ্চায়েতে বিদায়ী প্রধানকে হারিয়ে জয়ী হন তৃণমূল ছেড়ে আসা সিপিএম প্রার্থী আব্দুল শেখ। বৃহস্পতিবার তিনি তৃণমূলে যোগ দেন। আব্দুল জানান, অত্যাচারের মাত্রা বাড়ছিল। তাই ‘বাধ্য হয়ে’ যোগ দিয়েছেন। আব্দুল যোগ দেওয়ায় ত্রিশঙ্কু হয়ে থাকা ওই পঞ্চায়েতে তৃণমূল ম্যাজিক ফিগারের কাছাকাছি এল। যাবতীয় অভিযোগ অস্বীকার করেছে তৃণমূল।
শান্তিপুর ব্লকের গয়েশপুর পঞ্চায়েতে ২১টি আসনের মধ্যে ১০টি আসনে জয়ী হয়েছে বিজেপি। ন’টিতে তৃণমূল এবং একটি করে আসনে জয়ী হয়েছে সিপিএম এবং নির্দল। পঞ্চায়েত দখল করতে দড়ি টানাটানি চলছিল দু’পক্ষের। এর মধ্যেই বৃহস্পতিবার সিপিএমের টিকিটে জয়ী পঞ্চায়েত সদস্য আব্দুল শেখ তৃণমূলে যোগ দেন। এ দিন সকালে শান্তিপুরের বিধায়ক ব্রজকিশোর গোস্বামীর উপস্থিতিতে তিনি তৃণমূলে যোগ করেন। এক সময় তৃণমূলেই ছিলেন আব্দুল। গয়েশপুরের তৃণমূলের স্থানীয় রাজনীতিতে বিদায়ী প্রধান সুকিলা বিবির বিরোধী গোষ্ঠীর বলে পরিচিত ছিলেন আব্দুল। এ বারের নির্বাচনে অবশ্য আব্দুলকে প্রার্থী করেনি দল। সিপিএমে যোগ দিয়ে সিপিএমের প্রার্থী হন তিনি। প্রার্থী হয়েছিলেন বিদায়ী প্রধান সুকিলা বিবির বিরুদ্ধেই। জিতেও যান আব্দুল।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, নির্বাচনের ফল প্রকাশের পর বুধবার থেকে উত্তপ্ত হয়ে উঠেছিল গয়েশপুরের টেংরিডাঙা। ওই এলাকা থেকেই নির্বাচিত হন আব্দুল। বুধবার দুপুরে সিপিএম এবং তৃণমূলের একটি বিজয় মিছিলকে কেন্দ্র করে উভয় পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ, বোমাবাজির ঘটনাও ঘটে। জখম হন বেশ কয়েক জন। সেই ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতেই আব্দুলের যোগদান। এ দিন যোগদানের পর আব্দুল শেখ বলেন, "আমি আগের পঞ্চায়েত প্রধানকে হারিয়ে দিয়েছিলাম। সেই আক্রোশে ফল প্রকাশের পর থেকেই প্রাক্তন প্রধানের দলবল আমার উপরে হামলা করছিল। আগের দিন ঝামেলা হয়েছে। এলাকায় ঢুকতে ভয় পাচ্ছিলাম। তাই বাধ্য হয়ে তৃণমূলে যোগ দিলাম। এখন পুলিশকে জানিয়েছি।"
যদি ওই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন বিদায়ী প্রধান তৃণমূলের সুকিলা বিবি। তিনি বলেন, "এ রকম কোনও ঘটনাই ঘটেনি। বরং আব্দুলের লোকজনই আগের দিন ঝামেলা করেছে। হামলা করেছে। উনি আগে তৃণমূলই ছিলেন। টিকিট না পেয়ে সিপিএম এ যান। উনি নিজের ইচ্ছাতেই যোগদান করেছেন। এখন এ সব অজুহাত দিচ্ছেন।"
সিপিএমের শান্তিপুর এরিয়া কমিটির সম্পাদক সঞ্জিত ঘোষ বলেন, "ওই এলাকার মানুষ তৃণমূলের বিরুদ্ধে ভোট দিয়েছিলেন আমাদের উপর আস্থা রেখে। এই দল বদলের ঘটনায় আমাদের সংগঠনে কোনও প্রভাব পড়বে না। বরং এর পর আমাদের কর্মীরা আর ঐক্যবদ্ধ হলেন। তাঁদের মধ্যে লড়াইয়ের জেদ বাড়ল।"
শান্তিপুরের বিধায়ক তৃণমূলের ব্রজকিশোর গোস্বামী বলেন, "উনি আগে তৃণমূলেই ছিলেন। পরে সিপিএমের প্রার্থী হয়েছিলেন। তৃণমূলে যোগ দেওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করেছিলেন তিনি। দলীয় নেতৃত্ব তাতে সম্মতি দিয়েছেন।"
গয়েশপুর পঞ্চায়েতে এই মুহূর্তে কারও নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা নেই। ১০টি আসনে জয়ী হয়েছিল বিজেপি। এ দিনের যোগদানের পর তৃণমূলের সদস্য দাঁড়াল ১০। বোর্ড গড়তে চাই ১১ সদস্য। এখন জয়ী নির্দল প্রার্থী কোন দিকে ঝুকবেন তার উপরে নির্ভর করছে গয়েশপুর পঞ্চায়েতের বোর্ডের ভবিষ্যৎ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy