Advertisement
২৫ নভেম্বর ২০২৪
Vegetables

বাজারে আগুন, পুজোর মুখে পাতে বাড়ন্ত তরকারিও

পুজোর মরসুমেও  ক্রমাগত ঊর্ধ্বমুখী আনাজের দাম।

প্রতীকী ছবি

প্রতীকী ছবি

মফিদুল ইসলাম
হরিহরপাড়া শেষ আপডেট: ২০ অক্টোবর ২০২০ ০৩:৪৩
Share: Save:

পুজোর বাকি আর মাত্র দু’টো দিন। তার আগেই অগ্নিমূল্য আনাজের বাজার। যার আঁচ পড়েছে আমবাঙালির পকেটে। আনাজের কারবারিরা বলছেন,এবছর অতিবৃষ্টির কারণে খেতে জল জমে নষ্ট হয়েছে বিঘার পর বিঘা খেতের মরসুমি আনাজ। অতিবৃষ্টির কারণে এখনও জল জমে রয়েছে বেশ কিছু খেতে। ফলে ব্যাহত হচ্ছে জলদি আনাজ চাষও। বাজারে আনাজের জোগান কমেছে চাহিদার তুলনায় অনেকটাই কম।

এদিকে পুজোর মরসুমেও ক্রমাগত ঊর্ধ্বমুখী আনাজের দাম। স্বভাবতই বিপাকে পড়েছেন ক্রেতা সাধারণ। জেলার অধিকাংশ মরসুমি আনাজ চাষ হয় সদর মহকুমার হরিহরপাড়া, বহরমপুর, বেলডাঙা ব্লকের বিস্তীর্ণ এলাকায়। ওই এলাকার উৎপাদিত আনাজ জেলার সদর শহর বহরমপুর সহ জেলার বিভিন্ন বাজারের চাহিদা পুরনের পাশাপাশি পাড়ি দেয় রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে। এমনকি ভিন্ রাজ্যেও। মরসুমি আনাজ চাষ করে চাষিরাও কিছুটা বাড়তি পয়সার মুখ দেখেন। কিন্তু এবছর তাতেও জল ঢেলেছে অতিবৃষ্টি। তার দোসর হয়েছিল আশ্বিনের অকাল বৃষ্টি।

চাষিরা বলছেন এই সময়ে বিঘার পর বিঘা খেতে ফুলে, ফলে ভরে থাকে লঙ্কা, বেগুন, পটল, কাকরোল, ঝিঙে, করলা সহ রকমারি আনাজ। জলদি জাতের ফুলকপি, বাধাকপি, পালংশাক, মুলো, টম্যাটো,ধনেপাতার মত শীতকালীন শাক-সবজিও বাজারে আসতে শুরু করে। কিন্তু এ বছর জলদি আনাজ চাষেও জল ঢেলেছে আশ্বিনের অকাল বর্ষণ। হরিহরপাড়ার রমনা, শ্রীহরিপুর, দস্তুরপাড়া, বহরমপুরের নগড়াজোল, সুন্দিপুর,রাজধরপাড়া, বেলডাঙার বেগুনবাড়ি, দেবপুর, পুলিন্দা সহ বিভিন্ন এলাকার চাষিরা শীতকালীন জলদি আনাজ চাষ করে ব্যাপক ক্ষতির মুখে।

চাষিরা বলছেন চড়া দামে বীজ ছড়ানোর পরেও অতিবৃষ্টির কারণে একাধিকবার নষ্ট হয়েছে বীজতলা। তা ছাড়া আশ্বিনেও ভারি বৃষ্টিতে নষ্ট হচ্ছে লাল শাক, পুঁই শাক, কাটোয়া ডাঁটা, ধনেপাতা, পালংশাক। অপেক্ষাকৃত উঁচু খেতে আনাজ চাষ হলেও বেড়েছে রোগ পোকার আক্রমণ। ফলে আনাজের উৎপাদন কমেছে অনেকটাই। স্বভাবতই আনাজের দাম বেড়েই চলেছে। উৎসবের মরসুমে আনাজের দাম চিন্তা বাড়িয়েছে আম বাঙালির।

বিগত দু'দিন ধরে জেলার বিভিন্ন বাজারে মরসুমি আনাজের গড় দাম ছিল লঙ্কা ২০০ টাকা কেজি, বেগুন, পটল ৪০-৫০ টাকা কেজি, ঢেঁড়শ, কাকরোল ৬০ টাকা কেজি, শশা, ঝিঙে, ওল, কুমড়ো ৪০ টাকা কেজি, করলা, টম্যাটো ৭০-৮০ টাকা কেজি, ফুলকপি, বাঁধাকপি (ছোট সাইজের) ২০ টাকা পিস। বিনস, ক্যাপসিকাম ২৫০-৩০০ টাকা কেজি। ধনেপাতা ৩৫০-৪০০ টাকা কেজি। এমনকি পুঁই শাক, মুলো বিক্রি হচ্ছে ২০ টাকা কেজি, লাল শাক ৪০ টাকা কেজি। এই সমস্ত শাক মাস দুয়েক' আগেও ৫-৭ টাকা আঁটি বিক্রি হত। হরিহরপাড়ার এক বিক্রেতা বলছেন, ‘‘আনাজের জোগান কমেছে। বেশি দামে কিনতে হচ্ছে, তাই বেশি দামেই বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছি।’’ তা ছাড়া আলু ৩৫ টাকা কেজি, পেঁয়াজ ৫০-৬০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। নওদার বাসিন্দা সুজয় বিশ্বাস বলেন, ‘‘করোনা আবহে অনেকেরই রোজগার কমেছে। এদিকে আনাজের দামও বেড়েই চলেছে। আমরা খাব কী?’’

মহকুমা সহ কৃষি অধিকর্তা (বিষয় বস্তু) বরুণ কুমার ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘লক্ষ্য রাখতে হবে আনাজের খেতে যাতে জল না জমে। রোগ পোকার উপদ্রব কমাতে কৃষি বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ অনুযায়ী প্রয়োজন মত ছত্রাক নাশক ও কীটনাশক স্প্রে করতে হবে।" সহকারী কৃষি বিপণন আধিকারিক (প্রশাসন) মুহাম্মদ আলি বলেন, ‘‘আনাজের দাম নিয়ে যাতে কালোবাজারি না হয় তার জন্য বিভিন্ন বাজারে যৌথ অভিযান চলছে।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Hariharpara Vegetables Durga Puja
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy