প্রতীকী ছবি।
পঞ্চায়েত ভোটের আগে শাসকদলের দুর্নীতিকে হাতিয়ার করে মাটি কামড়ে আন্দোলনে ঝাঁপিয়ে পড়তে চাইছে সিপিএম। একেবারে দাবি আদায় না-হওয়া পর্যন্ত তারা লাগাতার আন্দোলন চালিয়ে যাবে বলে সিন্ধান্ত নিয়েছে। তবে এই সাংগঠনিক দুর্বলতার সময় তারা যে গোটা জেলায় আন্দোলনে নামতে পারবে না বিলক্ষণ জানেন জেলা নেতৃত্ব। আর তাই অপেক্ষাকৃত সাংগঠনিক শক্তি আছে এমন পঞ্চায়েতগুলিকে বেছে নিয়ে সেখানেই আন্দোলন সংগঠিত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সিপিএম। সেই মতো জেলায় একশোটির মতো পঞ্চয়েতকে তারা বেছে নিয়েছে।
ক্ষমতা থেকে সরে যাওয়ার পর থেকে নদিয়া জেলায় সিপিএমের রক্তক্ষরণ অব্যাহত। প্রায় প্রতিটা নির্বাচনেই কার্যত ধরাশায়ী হতে হচ্ছে তাদেরকে। গত পঞ্চায়েত ভোটেও একই চিত্র। নদিয়া উত্তর অংশে ভাল ফল করেছিল বিজেপির। জেলা পরিষদ, পঞ্চায়েত সমিতি ও পঞ্চায়েত স্তরে নজরকাড়া ফল করেছিল বিজেপি। সেই অর্থে বামেদেরকে কার্যত খুঁজেই পাওয়া যায়নি। ফের পঞ্চায়েত ভোট দুয়ারে। সিপিএম সূত্রে খবর, বিগত নির্বাচন থেকে শিক্ষা নিয়ে ঘুরে দাঁড়াতে বেশ কিছু পরিকল্পনা নিয়েছে সিপিএম। তারা এ বার দুর্নীতিকে হাতিয়ার করে লাগাতার ভাবে পথে নামতে চাইছে।
সিপিএমের এক জেলা নেতার কথায়, “এ বার কিন্তু পরিস্থিতি অনেকটাই ভিন্ন। কারণ পঞ্চায়েত থেকে শুরু করে রাজ্য স্তরে নিয়োগ সংক্রান্ত বিষয়ে দুর্নীতি প্রবল ভাবে মানুষের সামনে উঠে আসছে। মানুষ তাতে ক্ষুব্ধ। তাঁরা বিকল্প চাইছেন। বিজেপির উপরে তাঁদের সেই ভরসাও আর নেই। এখন আমাদের কাজ হবে লাগাতার রাস্তায় থেকে আন্দোলন-সংগ্রামের মাধ্যমে মানুষের আস্থা অর্জন করা। নিজেদেরকে বিকল্প হিসাবে তুলে ধরা।”
সিপিএম সূত্রে খবর, সম্মেলনগুলিতে প্রশ্ন উঠেছিল যে, সিপিএম নানা বিষয়ে আন্দোলনে নামলেও কেন তারা দাবি আদায় না-হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছে না। কেন তারা আন্দোলনকে নেহাত একটা কর্মসূচি হিসাবে দেখেছে। একেবারে নিচুস্তর থেকে উঠে আসা এই ধরনের প্রশ্ন যথেষ্ট ভাবিয়েছে নেতৃত্বকে।
জেলা নেতৃত্ব সূত্রে জানা গিয়েছে, গোটা জুন মাস ধরে টানা আন্দোলনের মধ্যে থাকবে সিপিএম। জেলার একশোটি পঞ্চায়েতকে বেছে নেওয়া হয়েছে। সেই পঞ্চায়েতগুলিতে কী কী সমস্যা আছে তা শনাক্ত করে আন্দোলনে নামা হবে। দাবি না-মেটা পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাওয়া হবে। আর সেই আন্দোলনের সাফল্যকে তুলে ধরা হবে এলাকার মানুষের মধ্যে। সেই মতো পঞ্চায়েতভিত্তিক একাধিক বুথ কমিটিকে নিয়ে ছোট ছোট বৈঠক করছে সিপিএম। সেখানে স্থানীয় নেতা, কর্মী, সদস্য, সমর্থকদের নিয়ে বৈঠক করছেন জেলা নেতারা। এই একশো পঞ্চায়েতের কর্মসূচি শেষ হয়ে গেলে বাকি ৮৪টি পঞ্চায়েতেও একই ভাবে আন্দোলনে নামবে সিপিএম।
সিপিএম সূত্রে খবর, প্রার্থী নির্বাচন নিয়েও কড়া অবস্থান নিচ্ছে দল। জেলার নেতাদের কথায়, স্থানীয় ভাবে কেউ কেউ তলায় তলায় তৃণমূল বা বিজেপির সঙ্গে সমঝোতা করে চলেন। তাঁদেরকে শনাক্ত করা হচ্ছে। এই ধরনের নেতা-কর্মীকে কোনও ভাবেই টিকিট দেওয়া হবে না। পাশাপাশি এ বার দলীয় প্রতীকে দাঁড়ানো প্রার্থী ছাড়া কাউকে সমর্থন করা হবে না বলে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সে ক্ষেত্রে নির্বাচনে প্রার্থী হতে গেলে দলের প্রতীকেই প্রার্থী হতে হবে।
জেলার এক নেতার কথায়, “এ বার তৃণমূলের টিকিট না-পেয়ে অনেকেই নির্দল প্রার্থী হতে চাইবেন। তৃণমূলের প্রতীকের প্রার্থীকে হারাতে কোনও ভাবে তাঁদের ফাঁদে পা দেওয়া যাবে না।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy