প্রতীকী ছবি
সরকারের ধার্য করা মূল্যে ধান কেনা নিয়ে দুর্নীতির অভিযোগ উঠছে করিমপুর কিসান মান্ডির বিরুদ্ধে।
স্থানীয় চাষিদের অভিযোগ, তাঁদের থেকে সরাসরি সরকারি দরে ধান কেনার কথা বলা হলেও তাঁরা সেখানে ধান বিক্রি করতে পারছেন না। তৃণমূলের কয়েক জন নেতার অনুগত কিছু ফড়ে ও সরকারি আধিকারিকের যোগসাজসে বেনিয়ম চলছে। তবে সোমবার রাত পর্যন্ত কোথাও তাঁরা লিখিত অভিযোগ জানাননি।সরকারি নিয়ম অনুযায়ী, যে সকল চাষিদের কৃষকবন্ধু কার্ড রয়েছে তাঁরা প্রত্যেকে বছরে সর্বাধিক নব্বই কুইন্টাল ধান বিক্রি করতে পারবেন। অথচ ফড়েরা কয়েক জন চাষির কার্ড একত্রিত করে অনেক বেশি পরিমাণ ধান বিক্রি করে লাভজনক ব্যবসা করছেন। সরকারি মুল্য থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন গরিব চাষিরা। গত বছরের হিসেবে করিমপুর ২ ব্লকে প্রায় দেড় হাজার এমন চাষি আছেন। স্থানীয় চাষি কাপাতুল্লা বিশ্বাস জানান, তাঁর মোট ১৩ বিঘা জমির মধ্যে এ বছর পাঁচ বিঘা জমিতে ধান চাষ করেছেন এবং প্রায় ৩০ কুইন্টাল ধান উৎপন্ন হয়েছে। অথচ এক কেজি ধানও তিনি বিক্রি করতে পারেননি। দু’বছর আগেও একই ঘটনা ঘটেছিল।
নাজমুল শেখের অভিযোগ, তিনি এ বছর সাড়ে পাঁচ বিঘা জমিতে ধান ফলিয়েছেন। বাড়ির খাওয়ার জন্য তার কিছুটা রেখে বাকি ২০-২৫ কুইন্টাল ধান বিক্রি করার জন্য কিসান মান্ডিতে নিয়ে গিয়েও বেচতে পারেননি। তাঁর আক্ষেপ, “খোলা বাজারে ধানের দাম মাত্র ১৩০০ থেকে ১৩৫০ টাকা। সেখানে কিসান মান্ডিতে সরকার কুইন্টাল পিছু দাম দিচ্ছে ১৮৮৮ টাকা। এই সুযোগে স্থানীয় কিছু ফড়ে মুর্শিদাবাদ ও অন্য নানা জায়গা থেকে কম দামে ধান কিনে এনে নিজের নিজের গুদাম ভর্তি করছেন। পরে সেই ধান সাদা বস্তায় এক সঙ্গে অনেক লছিমন বোঝাই হয়ে পৌঁছে যাচ্ছে কিসান মান্ডিতে। তাতে তাঁরা কুইন্টাল পিছু প্রায় পাঁচশো টাকা লাভ করছেন। অথচ এলাকার বহু সাধারণ গরিব চাষি কম দামে ধান বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছেন। ৩০ কুইন্টাল ধান সরকারি দামে বিক্রি করতে পারলে চাষিরা উপকৃত হতেন এবং সেই টাকা চাষের সেচ, সার ও অন্য কাজে লাগাতে পারতেন।
ধান চাষি রাজু বিশ্বাসের অভিযোগ, “ধান বিক্রি করার জন্য করিমপুর কিসান মান্ডিতে তিন দিন ঘুরেছি। ধান বিক্রি করতে ওই অফিসে টাকা দেওয়ার কথা বলা হয়েছে।” তাঁর দাবি, “এর প্রতিবাদ করায় পিকে-র (প্রশান্ত কিশোর) টিম থেকে আমায় ফোন করে বলা হয়, আমার ধান বেচে দেওয়া হবে। এই নিয়ে আর কাউকে বা সংবাদমাধ্যমকে জানাতে হবে না।”
করিমপুর কিসান মান্ডির ক্রয় আধিকারিক (পারচেজ় অফিসার) সৌমিক সাহার দাবি, চাষিদের কাছে টাকা চাওয়ার কথা মিথ্যা এবং ফড়েদের বিষয়ে তিনি কিছু জানেন না। তাঁর বক্তব্য, “কে চাষি আর কে ফড়ে বোঝা যায় না। তবে চাষিদের রেজিস্ট্রেশন কার্ড দেখে ধান বিক্রির নির্দিষ্ট দিন দেওয়া হয়। আগের বছর যাদের কার্ড রেজিস্ট্রেশন করা হয়েছে কিছু ক্ষেত্রে তাঁদের আগে ধান বিক্রির সুযোগ দেওয়া হয়েছে। সব চাষিই ধান বিক্রি করতে পারবেন।”
করিমপুর ২ ব্লক তৃণমূল তথা পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি রাজু মল্লিকেরও দাবি, ধান কেনার ব্যাপারে তাঁদের দলের কোনও নেতা জড়িত নন। তিনি বলেন, “পিকে-র টিমের নাম করে আদৌ কে ফোন করেছিল, তা বলতে পারব না। তবে এই ব্লকের কোনও চাষি যদি কিসান মান্ডিতে ধান বিক্রি করতে না পারেন, তাঁরা আমায় বা বিডিও-কে জানালে নিজেরা উপস্থিত থেকে ব্যবস্থা করে দেব।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy