ছবি রয়টার্স।
বাড়ির ছেলেরা আটকে রয়েছেন ভিন্ রাজ্যে। লকডাউনের জন্য তাঁরা কাজে যেতে পারছেন না, বাড়িতে ফেরা তো দূরের কথা। কিন্তু তাঁরা টাকাও পাঠাতে পারছেন না। নিজেরা অনেক সময় না খেয়ে রয়েছেন। এই পরিস্থিতিতে প্রচণ্ড সমস্যায় পড়েছেন হরিহরপাড়া, নওদার বিভিন্ন গ্রামের মানুষ। তাঁদের পাশে দাঁড়ালেন প্রশাসন ও জনপ্রতিনিধিরা। শুক্রবার খাবার বিলি করা হয়েছে। কিন্তু এলাকার ামনুষ জানাচ্ছেন, তা যথেষ্ট নয়। আরও ব্যাপক হারে খাবার বিলি করতে হবে। বিধায়ক নিয়ামত শেখ জানান, আটকে পড়া শ্রমিকদের তালিকা করা হচ্ছে। তাঁদের সাহায্য করা হবে।
এই পরিবারগুলোর হাতে নগদ টাকা নেই। অথচ, জিনিসপত্রের দাম কোথাও কোথাও বেশ চড়া। দোকানবাজার এক রকম বন্ধ। যে টুকু খুলছে, তাতে ছুটছেন বাড়ির মেয়েরা। তাতে এক দিকে করোনাভাইরাসের ভয়, অন্য দিকে না খেয়ে মরার উদ্বেগ।
যেমন, হরিহরপাড়ার কেশাইপুর গ্রামের জুলেখা বিবি জানাচ্ছেন, তাঁর তিন সন্তান। পরিবারে রয়েছেন বৃদ্ধ শ্বশুর ও শাশুড়ি। স্বামী আশরাফুল শাহ কেরলে কাজ করতে গিয়ে আটকে পড়েছেন। কার্যত অনাহারে, অর্ধাহারে দিন কাটাচ্ছিলেন তাঁর স্ত্রী জুলেখা বিবি। তাঁর কথা জানার পরে নড়েচড়ে বসেছে প্রশাসন। উদ্যোগী হয়েছেন জনপ্রতিনিধিরাও।
বৃহস্পতিবার হরিহরপাড়ার বিধায়ক নিয়ামত শেখের উদ্যোগে কেরলে আটকে পড়া কেশাইপুর গ্রামের শ্রমিকদের বাড়ি পৌঁছে দেওয়া হল ৫০ কেজি চাল, ৫০ কেজি আলু, সর্ষের তেল, আনাজ সহ অন্য খাদ্যসামগ্রী। এ দিন জেলা পরিষদের কর্মাধ্যক্ষ সামসুজ্জোহা বিশ্বাস সহ দলীয় কর্মীরা এ দিন ভিন্ রাজ্যে আটকে পড়া শ্রমিকদের বাড়িতে খাদ্যসামগ্রী পৌঁছে দেন। বিধায়ক বলেন, ‘‘কেশাইপুর গ্রামের শ্রমিকদের পরিবারকে সহায়তা করা হল। প্রতিটি গ্রামে আটকে পড়া শ্রমিকদের তালিকা তৈরি করা হচ্ছে।’’ লকডাউনের জন্য আটকে পড়া শ্রমিকদের পরিবারের লোকজন যাতে অভুক্ত না থাকেন, তার জন্য প্রশাসন উদ্যোগী হচ্ছে। তিনি জানান, আটকে পড়া সেই শ্রমিকরাও যাতে ঠিক মতো খাবার পান, সে জন্যও উদ্যোগী হয়েছে সরকার। জুলেখা বিবি বলেন, ‘‘যা খাবার পেয়েছি তাতে হয়তো পনেরো- বিশ দিন চলে যাবে।’’ খাবার পেয়ে কিছুটা হলেও স্বস্তিতে জুলেখা বিবি। তবে ঘরের মানুষ কবে ফিরবেন, সেই চিন্তা কুড়ে খাচ্ছে তাঁকে।
লকডাউনের জেরে বিপাকে পড়েছেন ভিক্ষাজীবীর মতো দিন আনা দিন খাওয়া মানুষগুলো। একে দোকানপাট বন্ধ। তার উপরে বাইরে বেরোতেও রয়েছে নিষেধাজ্ঞা। তাতে ভিক্ষাজীবীরা এবং এলাকার দুঃস্থ মানুষেরা কোথায় যাবেন, জানেন না। তাঁদের পাশে দাঁড়াতে এগিয়ে এলেন হরিহরপাড়া ব্লকের প্রশাসনিক আধিকারিকেরা। গাড়িতে প্যাকেট করা রয়েছে চাল, ডাল, সর্ষে তেল, নুন, আলু সহ অন্য কিছু আনাজ। বিভিন্ন এলাকায় খোঁজখবর নিয়ে হরিহরপাড়ার বিডিও পূর্ণেন্দু সান্যাল, ওসি রবীন্দ্রনাথ বিশ্বাস হরিহরপাড়ার বিভিন্ন এলাকায় দুঃস্থ মানুষের বাড়িতে পৌঁছে দিচ্ছেন খাবার। তা ছাড়া, চলতি অবস্থায় কোনও ভিক্ষুক বা দুঃস্থ মানুষজন দেখলে তাঁদের হাতে তুলে দিচ্ছেন খাদ্যসামগ্রী। শুধু তা-ই নয়, আগামী ১৪ এপ্রিল পর্যন্ত ঘরের বাইরে না বেরোনোর পরামর্শও দিচ্ছেন তারা।
এলাকার কয়েকজন শ্রমিক অবশ্য ফিরে এসেছেন। কিন্তু এখনও কয়েক হাজার শ্রমিক আটকে পড়েছেন
বিভিন্ন রাজ্যে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy