Advertisement
২১ জানুয়ারি ২০২৫
Coronavirus

টর্চ নিয়ে গ্রামে ঘুরছেন দিদিমনি

ডোমকল পুরসভার জুগিন্দার বাসিন্দাদের এই আক্ষেপ এখন রোজ শোনা যাচ্ছে।

 বাসিন্দাদের বোঝাচ্ছেন শামিমা ছবি: সাফিউল্লা ইসলাম

বাসিন্দাদের বোঝাচ্ছেন শামিমা ছবি: সাফিউল্লা ইসলাম

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ১০ এপ্রিল ২০২০ ০৬:২৮
Share: Save:

কপট রাগটা ঝরে পড়ল গ্রামের এক বয়স্ক মানুষের মুখ থেকে। বললেন, ‘‘সারাদিন ঘরবন্দি। সন্ধ্যায় পাড়ার মাচায় গিয়ে বসব, তার উপায় নেই দিদিমনির জন্য। বকাবকি করে বাড়িতে পাঠিয়ে দিচ্ছেন।’’ আরেক বাসিন্দার গলায় এক সুর, ‘‘ছ'মাস পর ভিন রাজ্য থেকে বাড়ি ফিরেছি। দিনভর বাড়িতে বন্দি। সন্ধ্যার পরে একটু বেরিয়ছিলাম। তাতেই দিদিমনির বকুনি জুটল।’’

ডোমকল পুরসভার জুগিন্দার বাসিন্দাদের এই আক্ষেপ এখন রোজ শোনা যাচ্ছে। স্থানীয় সূত্রে খবর, দেশে লকডাউন ঘোষণার পর গত কয়েক দিন ধরে গ্রাম চষে ফেলছেন ‘দিদিমনি’ আশাকর্মী শামিমা বিশ্বাস এবং তাঁর সঙ্গীরা। গ্রামীণ এলাকায় ঘুরে ঘুরে তাঁরা লকডাউনে কেন বাড়িতে থাকা দরকার, সে কথাই গ্রামবাসীদের বোঝাচ্ছেন শামিমারা। প্রতিদিন সন্ধে হলেই এক গোছা কাগজপত্র এবং টর্চ হাতে বেরিয়ে পড়ছেন শামিমা। নিজের উপ স্বাস্থ্যকেন্দ্র এলাকার গ্রামগুলিতে ঘুরে ঘুরে মানুষকে লকডাউনে বাড়িতে থাকার কথা বলছেন তাঁরা। এ ছাড়া, ওই এলাকায় ভিন রাজ্য থেকে ফেরা শ্রমিক বা অন্য পেশায় যুক্ত কেউ থাকলে তাঁদেরও হোম কোয়রান্টিনে থাকার পরামর্শ দিচ্ছেন তাঁরা। শুধু এ-ই নয়, লকডাউনে যানবাহন না চলায় বাড়ি থেকে কর্মস্থলে আসা সমস্যার বলে সন্তান, পরিবা ছেড়ে বাড়ি থেকে আট কিমি দূরে জুগিন্দায় পড়ে রয়েছেন তিনি। থাকছেন সহকর্মী তানজিলা খাতুনের বাড়িতে।কিন্তু বাড়িঘর ছেড়ে এ ভাবে দায়িত্বপালনে অসুবিধা হচ্ছে না? শামিমার উত্তর, ‘‘করোনার সংক্রমণ রোজ বাড়ছে দেশে। এই অবস্থআয় পরিবার ছেড়ে স্বাস্থ্যকর্মী, চিকিৎসকরা হাসপাতালে পড়ে থাকছেন দিনের পর দিন। আমি নিজে স্বাস্থ্যকর্মী হয়ে এটুকু কষ্ট করব না, তাই আবার হয়!’’

স্থানীয় বাসিন্দারা শামিমার প্রশংসায় পঞ্চমুখ। বাবর আলি নামে এক বৃদ্ধ বললেন, ‘‘অনেকেই স্বাস্থ্যকর্মী দিনের বেলায় কাজ করে এলাকা ছাড়ছেন। কিন্তু দিদিমনি (শামিমা) রাতেও গ্রামে ঘুরছেন। এমন নিষ্ঠা দেখা যায় না।’’ ডোমকলের এসিএমওএইচ মামুন রশিদ বলেছেন, ‘‘করোনার বিরুদ্ধে স্বাস্থ্যকর্মীরা সকলেই লড়ছেন। তবে শামিমা যে কাজ করছেন তা কুর্নিশ করার মতো।’’

(অভূতপূর্ব পরিস্থিতি। স্বভাবতই আপনি নানান ঘটনার সাক্ষী। শেয়ার করুন আমাদের। ঘটনার বিবরণ, ছবি, ভিডিয়ো আমাদের ইমেলে পাঠিয়ে দিন, feedback@abpdigital.in ঠিকানায়। কোন এলাকা, কোন দিন, কোন সময়ের ঘটনা তা জানাতে ভুলবেন না। আপনার নাম এবং ফোন নম্বর অবশ্যই দেবেনআপনার পাঠানো খবরটি বিবেচিত হলে তা প্রকাশ করা হবে আমাদের ওয়েবসাইটে।)

অন্য বিষয়গুলি:

Coronavirus Health Coronavirus Lockdown
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy