প্রতীকী ছবি
ফের করোনা আক্রান্তের মৃত্যু হল মুর্শিদাবাদে। রবিবার সকাল ১০টায় বহরমপুরে করোনা হাসপাতালে সেই যুবকের মৃত্যু হয়। তাঁর বাড়ি নবগ্রামে। মৃত্যুর আগে পর্যন্ত তিনি যে করোনা পজ়িটিভ তা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের জানা ছিল না। মৃ্ত্যুর পরে রবিবার বিকেলে মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ল্যাবরেটরি থেকে রিপোর্ট আসে তাঁর করোনা পজিটিভ হয়েছে। মাসদেড়েক আগে ক্যান্সারে আক্রান্ত সালারের এক বৃদ্ধের করোনা পজিটিভ হওয়ার পরে কলকাতায় চিকিৎসাধীন ছিলেন। সেখানতাঁর হয়। পরে রাজ্য স্বাস্থ্য দফতর থেকে জানানো হয় তাঁর কো-মর্বিডিটির কারণে মৃত্যু হয়েছে। নবগ্রামের যুবককে নিয়ে জেলায় করোনা আক্রান্ত দু’জনের মৃত্যু হল।
মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের সুপার শর্মিলা মল্লিক বলেন, ‘‘নবগ্রামের ওই যুবক করোনা উপসর্গ নিয়ে ভর্তি হয়েছিলেন। তার পরেই তাঁর লালারস সংগ্রহ করে পরীক্ষায় পাঠানো হয়েছিল। আমরা রিপোর্ট হাতে পাওয়ার আগে তাঁর মৃত্যু হয়। ফলে মৃতদেহ মর্গে রাখা হয়েছে।’’ সুপারের দাবি, ‘‘এ দিন বিকেলে তাঁর রিপোর্ট পজ়িটিভ এসেছে। বিষয়টি মৃতের পরিবারের পাশাপাশি জেলা প্রশাসনকে জানানো হয়েছে। করোনা পজিটিভের মৃতদেহ যে ভাবে কবরোস্থ করার নির্দেশ রয়েছে সেই পদক্ষেপ করে দেহ পরিবারকে দেওয়া হবে।’’
ওই যুবক মুম্বইতে শ্রমিকের কাজ করতেন। ৬ দিন আগে আরও চারজনের সঙ্গে নিজের উদ্যোগে প্রথমে লরিতে, পরে বাসে করে বাড়ি ফেরেন। তবে তিনি আগে থেকেই কিডনির রোগ ভুগছিলেন। সঙ্গে রক্তাল্পতাও ছিল। বাড়িতে ফিরে অসুস্থ হয়ে পড়েন। গত ২০মে পরিবারের লোকজন তাঁকে স্থানীয় স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যান। সেখান থেকে তাঁকে নবগ্রাম ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হয়। তাঁকে সেখান থেকে চিকিৎসকেরা মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠান। করোনার উপসর্গ থাকায় তাঁকে করোনা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে করোনা সন্দেহজনকদের ওয়ার্ডে তাঁদের ভর্তি রাখা হয়েছিল। সেখানেই রবিবার সকাল ১০টা নাগাদ তাঁর মৃত্যু হয়েছে। ওই যুবকের বাড়িতে তাঁর মা বাবা, স্ত্রী, সাত বছরের একটি মেয়ে ও আট মাসের একটি ছেলে রয়েছে।
অন্যদিকে করোনা আক্রান্তের বিরাম নেই মুর্শিদাবাদে। প্রায় প্রতিদিনই জেলার কোথাও না, কোথাও করোনা আক্রান্তের খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে। শনিবার রাত থেকে রবিবার পর্যন্ত দু’দিনে ফের জেলায় দশ জন করোনা আক্রান্তের খোঁজ মিলেছে। প্রত্যেকেরই সঙ্গে মহারাষ্ট্রের সঙ্গে যোগ রয়েছে। ওই দশ জনের মধ্যে সাগরদিঘি ও ডোমকলের দু’জন করে, নবগ্রামের দু’জন। রবিবার কান্দি মহকুমা এলাকাতেও তিন জনের কোভিড-১৯ পজ়িটিভ বলে জানানো হয়েছে। ভরতপুর ১ ব্লকের গীতগ্রাম এলাকায় এক জন কোভিড ১৯ আক্রান্ত হয়েছেন। ওই এলাকায় কন্টেনমেন্ট জ়োন করা হয়েছে। নতুন করে আক্রান্ত সকলকেই বহরমপুরে মাতৃসদন করোনা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এই নিয়ে জেলায় ৪৯ জন করোনা আক্রান্ত হলেন। এক জনের কলকাতায় চিকিৎসা চলছে, বাকিদের মধ্যে ৮ জন সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন এবং ৩৮ জন বহরমপুরে করোনা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
মুর্শিদাবাদের মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক প্রশান্ত বিশ্বাস বলেন, ‘‘শনিবার রাত থেকে রবিবার পর্যন্ত দশ জনের করোনা পজ়িটিভ হয়েছে। ৯ জনকে করোনা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তাঁরা যাঁদের সংস্পর্শে এসেছিলেন তাঁদের চিহ্নিত করে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করা হচ্ছে।’’
গত ১৭মে মুম্বই থেকে একটি লরিতে করে ৫২ জন পরিযায়ী শ্রমিক জেলায় ফেরেন। তাঁদের আগেই লালারসের নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। ইতিমধ্যে ওই লরি করে ফেরা ডোমকলের সারাংপুরের দু’জনের করোনা পজিটিভ হয়েছে। তাঁরা বহরমপুর করোনা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। ফের ওই লরিতে ফেরা ডোমকলের আরও দু’জনের শনিবার রাতে করোনা পজ়িটিভ হয়েছে। ডোমকলের মানিকনগর ও গাড়াবেড়িয়ার ওই দু’জনকে সোমবার বহরমপুরে মাতৃসদন করোনা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
নবগ্রামের মহারাষ্ট্র ফেরত এক যুবকের শনিবার রাতে করোনা পজ়িটিভ হয়েছে। শনিবার রাতেই তাঁকে গ্রাম থেকে তুলে এনে বহরমপুরে মাতৃসদন করোনা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়ে। সূ্ত্রের খবর দিন পাঁচেক আগে ব্যক্তিগত খরচে লরিতে করে গ্রামের আরও দশ জন যুবকের সঙ্গে করোনা আক্রান্ত ওই যুবক গ্রামে ফিরেছেন। গ্রামে ফেরার পরের দিন তাঁদের লালারস সংগ্রহর করেছিল স্বাস্থ্য দফতর। তাঁদের মধ্যে এক যুবকের করোনা পজিটিভ হয়েছে।
অন্যদিকে সাগরদিঘির হলদি এবং সিয়ারা গ্রামের দুই যুবক গত ১৮ মে বাড়ি ফেরেন। পরের দিন তাঁদের লালারসের নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছিল। শনিবার রাতেই তাঁদের করোনা পজ়িটিভ হয়েছে। সেদিন রাতেই তাঁদের বহরমপুরে মাতৃসদন করোনা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। জেলা প্রশাসন সূত্রের খবর তিনটি ব্লকের আক্রান্তদের গ্রাম ঘিরে দেওয়া হয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy