অনিরুদ্ধ। নিজস্ব চিত্র।
মূমুর্ষু রোগীর রক্তের প্রয়োজন বলে শুনলেই সেখানে ছোটেন তিনি। দুর্ঘটনায় আহত, থ্যালাসেমিয়া রোগী— যখনই যাঁর রক্তের প্রয়োজন হয়, খবর পেলেই ছোটেন তিনি। করোনা আবহে যখন জেলার বিভিন্ন ব্লাডব্যাঙ্কে রক্তের আকাল, তখন আর্তকে রক্তদান করে বাঁচানের কাজে ব্রতী হয়েছেন নদিয়ার বাসিন্দা অনিরুদ্ধ সান্যাল। গত দু’ দশকে ৬২ বার রক্তদান করে বহু মূমুর্ষু রোগীকে বাঁচিয়েছেন তিনি।
কৃষ্ণনগরের বাসিন্দা হলেও অনিরুদ্ধ বর্তমানে নওদা থানায় হোমগার্ড হিসেবে কর্মরত। গত মঙ্গলবার তিনি খবর পেয়েছিলেন, রক্তের তীব্র আকালে থ্যালাসেমিয়া আক্রান্ত এক নাবালককে রক্ত দেওয়া যায়নি। সেই খবর পেয়েই সব কাজ ফেলে মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ছুটে যান তিনি। তবে শুধু নিজে রক্তদানে এগিয়ে আসা নয়, তাঁর সহকর্মীদেরও এই সেবায় উৎসাহিত করেন তিনি।
জানা গিয়েছে, বেলডাঙা থানার বেনাদহ গ্রামের থ্যালাসেমিয়া আক্রান্ত ন’বছর বয়সী ইমরান শেখ এবং গঙ্গাধারী গ্রামের থ্যালাসেমিয়া আক্রান্ত হাউজ় শেখের পরিবার গত কয়েক দিন ধরে রক্তের জন্য হন্যে হয়ে ছোটাছুটি করছিলেন। তা জানতে পারেন একটি সংগঠনের সদস্য তাজমত শেখ। তিনি ওই সংগঠনের হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে দুই বালকের তথ্যাদি পোস্ট করেন। কিছুক্ষণের মধ্যেই স্বেচ্ছায় রক্তদানের জন্য সাড়া দেন অনিরুদ্ধ। 'ও' পজ়িটিভ গ্রুপের রক্ত তাঁর। আরেক নাবালকের ‘এ’ পজ়িটিভ রক্তের প্রয়োজন ছিল। ওই গ্রুপের রক্তের জন্য সহকর্মীকে অনুরোধ করেন তিনি। মঙ্গলবার দুপুরে ওই দুই থ্যালাসেমিয়া আক্রান্তদের জন্য মুর্শিদাবাদের ব্লাডব্যাঙ্কে গিয়ে রক্ত অনিরুদ্ধ ও সিভিক ভলান্টিয়ার মলয় হালদার। ১৯৯৮ সালে প্রথমবার রক্ত দেন অনিরুদ্ধ। তারপর থেকে যখনই যাঁর রক্তের প্রয়োজন হয়েছে তিনি পাশে দাঁড়িয়েছেন। তবে নিজের এক সহকর্মীকে রক্ত দিয়েও বাঁচাতে না পারার আক্ষেপ এখনও তাড়া করে তাঁকে। অনিরুদ্ধ জানান, ২০১৪ সালে রেজিনগর থানায় কর্মরত অবস্থায় ফজলুর রহমান নামে এক কনস্টেবল মোটরবাইক দুর্ঘটনায় আহত হয়েছিলেন। মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজে অনিরুদ্ধ ও রেজিনগর থানার তৎকালীন ওসি মৃণাল সিংহ সহকর্মীকে রক্ত দিলেও বাঁচানো যায়নি ফজলুরকে। অনিরুদ্ধ এদিন বলেন, ‘‘ রক্তদান করে মানসিক শান্তি পাই। অন্যদেরও এই কাজ উৎসাহিত করব।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy