Advertisement
১৮ নভেম্বর ২০২৪
Coronmavirus in West Bengal

নাকছাবিতে করোনার ভয়ে রেজিস্ট্রি করে বিয়ে

বেলডাঙা বঙ্গীয় স্বর্ণ-শিল্পী সমিতির সম্পাদক অভিমন্যু কর্মকার বলেন, “যাঁরা নাকছাবির কারবার করেন, তাঁদের অবস্থা সব থেকে খারাপ।’’

প্রতীকী ছবি

প্রতীকী ছবি

সেবাব্রত মুখোপাধ্যায়
বেলডাঙা শেষ আপডেট: ০৫ জুন ২০২০ ০৫:২৮
Share: Save:

করোনাভাইরাস নিয়ে নানা কথা রটছে গ্রামে-গঞ্জে। তার সরাসরি প্রভাব পড়ছে জীবনেও। যেমন, কোনও ভাবে রটে গিয়েছে, ধাতুর উপরে এই ভাইরাস বেশি দিন বেঁচে থাকে। সেই আতঙ্কে সোনার গয়না কিনতে চাইছেন না অনেকেই। এমনকি, গয়না ছাড়াই বিয়ে করার জন্য অনেকেই রেজিস্ট্রি করে বিয়ের পর্ব সেরে ফেলছেন গ্রামে-গঞ্জে।

বেলডাঙা বঙ্গীয় স্বর্ণ-শিল্পী সমিতির সম্পাদক অভিমন্যু কর্মকার বলেন, “যাঁরা নাকছাবির কারবার করেন, তাঁদের অবস্থা সব থেকে খারাপ।’’ তিনিই বলেন, ‘‘একটা কথা রটেছে যে, সোনার গয়না নাকি করোনাভাইরাসকে দীর্ঘ ক্ষণ রাখতে পারে। এটা ঠিক নয়, কিন্তু মানুষ বিশ্বাস করছেন। তাই আংটি বা নাকছাবি পরার ভয়ে অনুষ্ঠান না করে রেজিস্ট্রি করে বিয়ে দেওয়া হচ্ছে। যাতে বেশি সোনা না কিনে ও গয়না না পরে বিয়ে হয়।” তিনি বলেন, ‘‘সোনার দামও যে ভাবে বেড়েছে, তাতেও অনেক দিন ধরেই মানুষ গয়না কেনার কথা ভাবছেন না।’’

সোনার ব্যবসাও তাই গত ছ’মাস ধরে টানা পতনের দিকে। সোনার গয়নার মধ্যে বেলডাঙার নাকছাবি খুবই জনপ্রিয়। সেই নাকছাবি নিয়েই হয়েছে সব থেকে বেশি সমস্যা। গত ২০-৩০ বছর যাঁরা নাকছাবির কারবারের সঙ্গে যুক্ত, তাঁরা বলছেন এই অবস্থা আগে দেখেননি। কবে এই মন্দাদশা কাটবে তাও কেউ বুঝতে পারছেন না। বৃহস্পতিবার বেলডাঙায় ১০ গ্রাম পাকা সোনার দাম ছিল ৪৬, ৩০০ হাজার টাকা।

অবস্থাটা ঠিক কেমন, তা বুঝতে গেলে কয়েক মাস পিছিয়ে যেতে হবে। গত ডিসেম্বরের এনআরসি ও সিএএ বিরোধী ক্ষোভের আঁচ পরে জেলায়। ট্রেন ও স্টেশন পুড়িয়ে দেওয়া হয়। তার জেরে বেলডাঙার নাকছাবি শিল্পে সরাসরি প্রভাব পডে। বেলডাঙার হাতে তৈরি নাকছাবি সারা দেশে নানা হাত ঘুরে বিক্রি হয়। কিন্তু রেলপথ বন্ধ থাকায় কারবার শিকেয় ওঠে। এই জের মিটতে না মিটতে করোনা আতঙ্ক মানুষকে গ্রাস করে। তারপর টানা লকডাউন ও সোনার আকাশছোঁয়া দাম। সব মিলে সোনার কারবারকে অনিশ্চিত করে দেয়।

বেলডাঙায় গত ২০ বছর ধরে নাকছবি কারবারে যুক্ত হিমাংশু রজক বলেন, “আমি ১৯৯৯ সালের অক্টোবর থেকে নাকছাবি কারবারে রয়েছি। ২০০০ সালে বন্যা হয়েছে। তখন রেলপথ ভীষণ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। কিন্তু কিছু দিনের মধ্যেই পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়। কিন্তু গত ডিসেম্বর থেকে চলতি জুন, এই একটানা মন্দা কেউ দেখেনি।” বেলডাঙায় প্রায় ৩০০০ মানুষ এই কারবারে নানা ভাবে যুক্ত। তাঁদের অনেকেই অনটনে দিন কাটাচ্ছে। এই প্রসঙ্গে মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজের মনোরোগ বিভাগের বিভাগীয় প্রধান রঞ্জন ভট্টাচার্য বলেন, “ইউনিভার্সিটি অফ লস অ্যাঞ্জেলসের গবেষণায় দেখা গিয়েছে, করোনাভাইরাস বাস্পীভূত কণাতে তিন চার ঘণ্টা থাকতে পারে। ঠিক একই সময় ধাতব পদার্থে থাকতে পারে। তাই অহেতুক গয়নার প্রতি বিরাগভাজন হওয়ার অর্থ নেই।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Coronmavirus in West Bengal Covid 19
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy