প্রতীকী ছবি।
করোনা আবহের মধ্যেই অনেকের সর্দি-জ্বর লুকোনোর প্রবণতা বিপদ ডেকে আনতে পারে বলে মনে করছেন জেলার চিকিৎসকদের একটা বড় অংশ।
গ্রামাঞ্চলে অনেকেই সর্দি-জ্বরে ভুগছেন। কিন্তু তাঁরা হাসপাতালমুখী হচ্ছেন না। পাছে কোয়রান্টিনে থাকতে হয়। অনেকেই ভাবছেন, জ্বর বা সর্দি নিয়ে হাসপাতালে গেলেই আইসোলেশন বা কোয়রান্টিনে চলে যেতে হবে। বাড়ির অন্যরাও সমস্যায় পড়বেন। গ্রামের লোক পরিবারকে একঘরে করবে বা দোষ দেবে। আত্মীয়েরা সম্পর্ক রাখবে না। কোভিড সম্পর্কে অনেকের ভ্রান্ত ধারণা ও সচেতনতার অভাব এর জন্য দায়ী বলে মনে করা হচ্ছে।
চিকিৎসকেরা জানাচ্ছেন, এঁদের অনেকেই সর্দি-কাশি-জ্বর হলে নিজের থেকেই প্যারাসিটামল ট্যাবলেট খেয়ে দিব্যি বাড়িতে থাকছেন এবং আশপাশের সকলের সঙ্গে মেলামেশা করছেন, দোকানবাজারেও যাচ্ছেন। অনেকে আবার এমনও বলছেন যে, ‘‘হাসপাতালে ভর্তি হলে এর থেকে বেশি পরিষেবা তো আর দেবে না। সেই প্যারাসিটামল খাইয়েই ফেলে রাখবে আর জ্বর মাপবে। তার চেয়ে হাসপাতালে কিছু না জানানোই ভাল।’’
কল্যাণীর কোভিড হাসপাতালের নোডাল অফিসার অয়ন ঘোষের মত, ‘‘কিছু মানুষের মধ্যে রোগ চেপে রাখার প্রবণতা রয়েছে। এটা ঠিক নয়। তবে গ্রামগঞ্জেও যে ভাবে স্বাস্থ্যকর্মীদের নজরদারি চলছে তাতে মনে হয় না খুব বেশি মানুষ সর্দি-কাশি হলে হাসপাতাল এড়িয়ে বাড়িতে থাকতে পারবেন।’’ তবে স্বাস্থ্য দফতরের একাংশের খবর, ‘‘বাড়িতে কারও জ্বর হলে তা চিহ্নিত করেন মূলত আশাকর্মীরা। অনেক গ্রামে তাঁদের ভয় দেখিয়ে বা একঘরে করার হুমকি দিয়ে খবর জানাতে মানা করা হচ্ছে। খবর দিলে পড়ে দেখে নেওয়ার হুমকিও দেওয়া হচ্ছে।’’
ধুবুলিয়ার বাসিন্দা পেশায় প্রাথমিক স্কুলের এক শিক্ষক যেমন দিন দশেক ধরে সর্দি-কাশিতে ভুগছেন। কিন্তু ওই শিক্ষক দিব্যি বাড়িতেই থাকছেন। মাঝেমধ্যেই পাড়ার মোড়েও আড্ডা দিতে যাচ্ছেন। কিন্তু সরকারি হাসপাতালের ফিভার ক্লিনিকমুখো হচ্ছেন না! তাঁর কথায়, ‘‘আগে শ্বাসকষ্ট শুরু হোক, তার আগে হাসপাতালে যাব না।’’
কালীগঞ্জ হাসপাতালে লম্বা লাইন পড়ত আউটডোরের টিকিটের জন্য। সেখানে এখন হাতে গোনা রোগী আসেন। এর কিছুটা যাদি যানবাহনের সমস্যা হয় তা হলে বাকি অনেকটা হল করোনা-আতঙ্ক। সাধারণ মানুষ করোনার জন্য হসপাতালকেই সবচেয়ে বেশি আতঙ্কের জায়গা বলে মনে করেছেন। যাঁরা আগে জ্বর ও সর্দি কাশি হলেই হাসপাতালে ছুটতেন, তাঁরাও এই সময়ে জ্বর হলে হাসপাতাল যেতে চাইছেন না। তাঁদের মনে দু’টি ভয় কাজ করছে। প্রথমত, হাসপাতাল গেলে সেখান থেকেই করোনা সংক্রমণ হতে পারে। আর দ্বিতীয়ত, হাসপাতালে গেলে কোয়রান্টিন কেন্দ্রে পাঠিয়ে দেওয়া হবে।
তবে এই বিষয়টি মানতে রাজি নন কালীগঞ্জ ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক তিমিরকান্তি ভদ্র। তাঁর কথায়, ‘‘উপ স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলিতে এএনএম, নার্স ও আশাকর্মীরা এলাকার উপর নজর রাখছেন। কারও সর্দি-কাশি-জ্বর হলেই তাঁরা হাসপাতালে যাওয়ার পরামর্শ দিচ্ছেন। নিয়েও যাচ্ছেন কিছু ক্ষেত্রে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy