বাড়িতে চলছে শুশ্রূষা। ধানতলার কামালপুরে। নিজস্ব চিত্র।
তখন রাত সাড়ে বারোটা। চার দিক নিঃস্তব্ধ। সেই সময়ে রোগাক্রান্ত তৃণমূল নেতার বাড়ির সময়ে এসে পৌঁছল একটি গাড়ি। ভিতর থেকে চার যুবক নেমে এলেন অক্সিজেন সিলিন্ডার হাতে। এলাকায় যাঁদের ‘রেড ভল্যান্টিয়ার্স’ নামেই চেনেন সাধারণ মানুষ।
অক্সিজেন-সহ থার্মাল স্ক্যানার, অক্সিমিটার হাতে নিয়ে ওই চার যুবক রাতের বেলাতেও ছুটেছেন। কোনও করোনাক্রান্ত মানুষের সাহায্যের প্রয়োজন শুনলেই পৌঁছে যাচ্ছেন ওঁরা। বুধবার রাতেও তার ব্যতিক্রম হয়নি। এ দিন যুব তৃণমূলের নেতা সাধন দাসের স্ত্রীকে বাঁচাতে এগিয়ে এল বাম ছাত্র-যুব সংগঠন ‘রেড ভল্যান্টিয়ার্স’। ওই তৃণমূল নেতা বর্তমানে রানাঘাট ২ নম্বর পঞ্চায়েত সমিতির সদস্য। তবে তাতে সাহায্যের হাত পিছিয়ে যায়নি বাম করোনা-সেবকদের।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, রানাঘাট ২ নম্বর ব্লকের কামালপুর অঞ্চল যুব তৃণমূলের সভাপতি সাধন দাসের স্ত্রী স্বাতী দাস হঠাৎ করেই অসুস্থ হয়ে যান বুধবার রাতে। তাঁর অল্পমাত্রায় শ্বাসকষ্ট শুরু হয়। শরীরে অক্সিজেন স্যাচুরেশনের মাত্রা নেমে যায়। সেই খবর পেয়ে রেড ভল্যান্টিয়ার্স সংগঠনের সদস্যরা ধানতলা থানার কামালপুর এলাকায় ওই নেতার বাড়িতে চলে যান। তাঁরা অসুস্থ মহিলাকে অক্সিজেন দেওয়ার পর খানিক সুস্থ হন। যদিও অক্সিজেন সাপোর্ট সরিয়ে নিলে আবার অক্সিজেনের মাত্রা কমে যাচ্ছিল। সেই কারণে পর দিন সকালে তাঁকে রানাঘাট মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি করে দেন সংগঠনের সদস্যেরা।
এ দিন সকালে হাসপাতাল থেকে বাড়ি ফেরার সময়ে সাধন দাস বলেন, “একজনের কাছ থেকে ফোন নম্বর নিয়ে ওঁদের কাছে সমস্যার কথা জানাই। কিছুক্ষণের মধ্যে দেখি রেড ভল্যান্টিয়ার্সেরা অক্সিজেন সিলিন্ডার নিয়ে বাড়িতে এসে হাজির হয়েছেন। তাঁরা আমার স্ত্রীকে অক্সিজেন দিয়ে সুস্থ করে তোলেন। ভেবেছিলাম, পরের দিন স্ত্রীকে কোনও নার্সিংহোমে ভর্তি করে দেব। এর মধ্যে ওঁরা জানান, রানাঘাট মহকুমা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে ওঁদের কথা হয়ে গিয়েছে। সেখানেই তাঁরা আমার স্ত্রীকে ভর্তি করবে। ওঁদের কথা ফেলতে পারিনি।”
তৃণমূল নেতা সাধনবাবু আরও বলছেন, “দেবদূতের মতো হাজির হয়ে ওঁরা আমার সমস্যাকে নিজের সমস্যা বলে মনে করে কাজ করতে শুরু করে দেন। ওঁরা যে ভাবে আমার স্ত্রীর জন্য ভাবতে শুরু করেছেন, তাতে আমার দলের কাউকে জানাতে মন চায়নি। তাতে ওঁদের ছোট করা হবে। সেই কাজ করতে পারিনি।” অন্য দিকে রেড ভল্যান্টিয়ার্স সংগঠনের পক্ষ থেকে স্বরূপ মুখোপাধ্যায় বলেন, “আমরা দল বা রং দেখিনি। একজন অসুস্থ মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছি। সব জায়গায় আমরা এই কাজই
করে চলেছি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy