Advertisement
০২ নভেম্বর ২০২৪
ঘোষণাকে স্বাগত, তবু...
Coronavirus in America

কপালে ভাঁজ ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী, বিড়ি শ্রমিকের

বিপাকে পড়েছেন ছোট যানচালক থেকে ফুটপাতের ছোট ব্যবসায়ীরাও।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

বিমান হাজরা
জঙ্গিপুর শেষ আপডেট: ১৬ মে ২০২১ ০৫:৪১
Share: Save:

রাজ্য সরকারের সিদ্ধান্ত মতো, আজ রবিবার থেকে ৩০ মে পর্যন্ত দোকান-বাজার এবং অন্য ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান খোলার ক্ষেত্রে বিধিনিষেধ আরও কড়া হচ্ছে। এই আবহে আজ থেকে বন্ধ হয়ে যাচ্ছে মুর্শিদাবাদের সমস্ত বিড়ি কারখানা। এর ফলে জেলায় অন্তত সাত লক্ষ বিড়ি শ্রমিক সাময়িক ভাবে কাজ হারাতে চলেছেন। শনিবার রাজ্য সরকার নতুন বিধিনিষেধ চালুর বিষয়ে ঘোষণা করতেই কারখানা বন্ধের সিদ্ধান্তের কথা জানিয়ে দিয়েছে বিড়ি মালিক সমিতি।

সমিতির সম্পাদক রাজকুমার জৈন বলেন, “কাজ বন্ধের আওতা থেকে পাট ও চা বাগান ছাড় পেলেও ছাড় দেওয়া হয়নি বিড়ি শিল্পকে। ফলে সমস্ত বিড়ি কারখানা রবিবার থেকে বন্ধ করে দিতে হচ্ছে। সোমবার জেলাশাসকের সঙ্গে দেখা করে ৫০ শতাংশ শ্রমিক নিয়ে বিড়ি কারখানা চালু রাখার অনুরোধ করা হবে। অনুমতি পেলে কারখানা খুলবে। তা না হলে কারখানা আপাতত বন্ধ রাখা হবে।’’

করোনা আবহেও ইদের দিন বাজারে ছোট ছোট ব্যবসায়ীদের কিছুটা বিক্রিবাটা হয়েছে। রোজার সময়েও বিক্রিবাটা হচ্ছিল। তবে নতুন বিধিনিষেধের জেরে মাথায় হাত পড়েছে ছোট ব্যবসায়ীদের। এই ঘোষণায় বিপাকে পড়েছেন ছোট যানচালক থেকে ফুটপাতের ছোট ব্যবসায়ীরাও। ইদের দিন পর্যন্ত রাস্তাঘাটে লোকজন কম থাকায় এমনিতেই বেচাকেনা কমেছিল অনেকটাই। আজ থেকে সমস্ত সরকারি অফিস, বাস, বাণিজ্য প্রতিষ্ঠান ১৫ দিন বন্ধ হয়ে যাওয়ার ঘোষণা শনিবার হতেও এদিন বিকেল থেকে কার্যত শুনশান হয়ে যায় অধিকাংশ রাস্তাঘাট। দিনেরবেলাতেই যান চলাচল একেবারে তলানিতে ঠেকায় রাস্তায় নিত্যযাত্রীও বিশেষ চোখে পড়েনি দুপুরের পর। এমনকি ছোট যানবাহনও রাস্তায় দুপুরের পর বিশেষ চোখে পড়েনি। তবে গত বারের মতো এবারও জেলার বিভিন্ন মদের দোকানে সুরাপ্রেমীদের দীর্ঘ লাইন চোখে পড়েছে। আজ থেকে বিধিনিষেধ না মানলে যে প্রশাসন আরও কড়া হবে, সেই ঘোষণা করে এদিন থেকেই প্রচার শুরু করে দিয়েছে পুলিশ। এদিকে, ইদের পর বিধিনিষেধ আরও কড়া হবে বলে জল্পনা কয়েক দিন ধরেই ছিল। এদিন সরকারি ভাবে সেই ঘোষণার পর হঠাৎই রাস্তা থেকে যানবাহন উঠে যাওয়ায় ভোগান্তির শিকার হন নিতান্ত নিরুপায় হয়ে রাস্তায় বেরনো লোকজন। সুতির অরঙ্গাবাদের সুমি বিবির বাবা ভর্তি রয়েছেন জঙ্গিপুর হাসপাতালে। গত তিন দিন ধরে ছোট গাড়ি বা বাসে বাড়ি থেকে হাসপাতালে যাতায়াত করছিলেন সুমি। শনিবার বিকেলের পর যানবাহন রাস্তা থেকে উঠে যাওয়ায় হাসপাতাল থেকে বাড়ি ফিরতে গিয়ে দুর্ভোগে পড়েন তিনি। দ্বিগুণ ভাড়া গুনে তাঁকে বাড়ি ফিরতে হয়। লালগোলা বাসস্ট্যান্ড চত্বরে ফলের রস বিক্রি করেন কৃষ্ণ মণ্ডল। তিনি বলেন, “এতদিন বেচাকেনা কমলেও কিছু লোক বাজারে আসতেন। সারা দিনে কয়েকশো টাকার বেচাকেনা হচ্ছিল। আজ (শনিবার) দুপুর থেকে গোটা এলাকা খাঁখাঁ করছে। সারাদিনে দেড়শো টাকারও রস বিক্রি করতে পারিনি। বৃহস্পতিবার প্রায় দেড় হাজার টাকার ফল কিনেছি। কী যে হবে সে সবের!’’ সুতির বাসিন্দা চা বিক্রেতা রমজান আলি বলছেন, “আগামী দু’সপ্তাহ অফিস, কাছারি বন্ধ থাকবে। কিন্তু ওঁরা তো বেতন পাবেন ঠিক সময়েই আমাদের মতো মানুষের কী হবে! সরকারের উচিত দুঃস্থদের সাময়িক ভাতা দেওয়া। করোনা ঠেকাতে অবশ্য এমন সিদ্ধান্ত প্রয়োজন ছিল।’’ তবে জেলায় চিকিৎসকদের সংগঠন আইএমএ-র সম্পাদক রঞ্জন ভট্টাচার্য বলেন, “এত সব সমস্যা সত্ত্বেও একজন চিকিৎসক হিসেবে বলব, এই ঘোষণায় সামগ্রিক ভাবে সাধারণ মানুষের ভালই হবে। করোনার সংক্রমণ রোজ যে ভাবে লাফিয়ে বাড়ছে তাতে সকলকে চিকিৎসা পরিষেবা দেওয়া রোজই কঠিন হয়ে পড়ছে। শৃঙ্খল ভাঙতে না পরালে সংক্রমণ কমানো যাবে না।

অন্য বিষয়গুলি:

Coronavirus in America COVID-19
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE