প্রতীকী ছবি।
একটা শব্দেই এখন বার্নিয়ার অবস্থাকে বর্ণনা করা চলে—‘আতঙ্কিত।’
যে অদৃশ্য শত্রুর ভয় নিয়ে গোটা বিশ্ব দিনযাপন করছে সে একেবারে সরাসরি আক্রমণ শানিয়েছে পলাশিপাড়া থানার এই গ্রামে। ফলে এলাকার মানুষ দিশেহারা।
লকডাউন চলাকালীন বাজারে ভিড় ভালই হচ্ছিল। শনিবার বার্নিয়ার বাজারে সেই চেনা ভিড় উধাও। চায়ের দোকানে ক্রেতা নেই। যে বাড়ির পাঁচ জনের দেহে করোনাভাইরাস পজিটিভ এসেছে তার থেকে কিছু দূরে বাড়ি এক কৃষকের। তিনি এ দিন বার্নিয়া বাজারে গিয়েছিলেন গরুর খাবার কিনতে। তাঁকে বাজারে ঢুকতে দেওয়া হয়নি। অগত্যা বিচালি কেটে ফিরতে হয়েছে তাঁকে। নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিস কিনতে প্রায় ১৪ কিলোমিটার দূরে বেথুয়াডহরি বাজারে গিয়েছিলেন শ্রীকৃষ্ণপুর গ্রামের দুই ব্যক্তি। তাঁদের বাড়ি বার্নিয়ায় শুনে দোকান থেকে বের করে দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ। পলসন্ডা হাইস্কুলের শিক্ষক লক্ষ্মণ মণ্ডলের বাড়ি আক্রান্তদের বাড়ি থেকে মেরেকেটে পাঁচশো ফুট দূরে। তাঁর কথায়, “বাইরের লোকের এমন একটা ভাব যেন, শ্রীকৃষ্ণপুরের সকলেই করোনাভাইরাসে আক্রান্ত।” লক্ষ্মণবাবুর দাদা বিনয় মণ্ডলের সঙ্গে এরই মধ্যে এক দিন বাজার থেকে ফেরার সময় রাস্তায় দাঁড়িয়ে কথা হয়েছিল আক্রান্ত পরিবারের এক জনের। ভয়ে সিঁটিয়ে রয়েছেন তাঁরা। শনিবার সকাল থেকে এলাকার অনেকেই ভয়ে জল আনতে বাইরে যাচ্ছেন না। কলের জল গরম করে ফুটিয়ে খাচ্ছেন।”
তিন প্রতিবেশী ২০ মার্চ ওই বাড়িতে গিয়ে কথা বলেছিলেন। তাঁরা স্বাস্থ্য দফতরের সঙ্গে যোগাযোগ করে কোয়রান্টিনে যাওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করেন। সেই মতো শুক্রবার গভীর রাতেই তাদের কৃষ্ণনগরে নিয়ে এসে কোয়রান্টিনে রাখা হয়েছে। কোয়রান্টিনে রয়েছেন ওই বাড়ির পরিচারিকাও।
গ্রামের ভিতরে একটি বড় পুকুরে স্নান করতেন গ্রামের মহিলারা। ভয়ে প্রায় কেউ স্নান করতে যাচ্ছেন না। তেহট্ট এলাকার কিছু মানুষ দাবি তুলেছেন, তেহট্ট পলাশিপাড়া সংযোগকারী জলঙ্গি নদীর উপর নির্মিত সাঁকো অবিলম্বে বন্ধ করতে হবে। কারণ, এই সাঁকো দিয়ে সহজেই বার্নিয়া যাওয়া যায়।
ইতিমধ্যেই প্রশাসনের তরফ থেকে ওই বাড়ির চারি দিকে তিন কিলোমিটারের মধ্যে সমস্ত পরিবারের সদস্যদের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা ইতিমধ্যে শুরু করা হয়েছে। শনিবার সকাল থেকে স্বাস্থ্যকর্মীদের চারটি দল এই কাজ শুরু করেছে। বাড়ি বাড়ি গিয়ে আক্রান্ত ব্যক্তির সংস্পর্শে কেউ এসেছে কিনা জানা হচ্ছে। শনিবার সকাল থেকে মাইকে প্রচার চলছে। তেহট্ট মহকুমা শাসক অনীশ দাশগুপ্ত বলেন, “রবিবার ওই এলাককে ভাইরাস মুক্ত করতে কলকাতা থেকে ট্রাকে করে ন’ হাজার লিটার হাইড্রোক্লোরাইড সলিউশনের মিশ্রণ আনা হচ্ছে যা। সকাল থেকেই ওই এলাকায় স্প্রে করা হবে।”
অভূতপূর্ব পরিস্থিতি। স্বভাবতই আপনি নানান ঘটনার সাক্ষী। শেয়ার করুন আমাদের। ঘটনার বিবরণ, ছবি, ভিডিয়ো আমাদের ইমেলে পাঠিয়ে দিন, feedback@abpdigital.in ঠিকানায়। কোন এলাকা, কোন দিন, কোন সময়ের ঘটনা তা জানাতে ভুলবেন না। আপনার নাম এবং ফোন নম্বর অবশ্যই দেবেন। আপনার পাঠানো খবরটি বিবেচিত হলে তা প্রকাশ করা হবে আমাদের ওয়েবসাইটে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy