Advertisement
২৪ নভেম্বর ২০২৪
Coronavirus

লাফিয়ে বাড়ছে করোনা, তবুও উদাসীন প্রশাসন

নদিয়ায় মঙ্গলবার সকাল সাতটা পর্যন্ত করোনা আক্রান্তের সংখ্যাটা ছিল ২৬ জন। বুধবার সেটা এক ধাক্কায় বেড়ে হয়ে যায় ৩৮ জন।

প্রতীকী ছবি

প্রতীকী ছবি

নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ২৮ মে ২০২০ ০৪:৫৫
Share: Save:

চলতি মাসের শেষ দিক থেকে জেলায় করোনা কেস বাড়তে পারে, এমন একটা আশঙ্কা ছিল স্বাস্থ্যকর্তাদের। সেটাই সত্যি প্রমাণিত হল। আগের সব রেকর্ড ভেঙে দিয়ে বুধবার এক সঙ্গে ১২ জন পরিযায়ী শ্রমিকের রিপোর্ট পজিটিভ এল।

কিন্তু সবচেয়ে যেটা চিন্তার তা হল, এমন জরুরি পরিস্থিতিতে প্রশাসন ও স্বাস্থ্য দফতরের উদাসীনতা। কারণ, মঙ্গলবার রাতে রিপোর্ট চলে এলেও বুধবার দুপুর পর্যন্ত আক্রান্তদের অনেককে বাড়িতেই দেখা গিয়েছিল বলে অভিযোগ। অনেক পড়ে তাঁদের কোভি়ড হাসপাতালে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়। করোনা মোকাবিলায় প্রশাসনের সক্রিয়তা নিয়ে তাই প্রশ্ন উঠছে।

নদিয়ায় মঙ্গলবার সকাল সাতটা পর্যন্ত করোনা আক্রান্তের সংখ্যাটা ছিল ২৬ জন। বুধবার সেটা এক ধাক্কায় বেড়ে হয়ে যায় ৩৮ জন। গত ১ মে থেকে যে ভাবে দলে-দলে পরিযায়ী শ্রমিক বাস, লরি এমনকি হেঁটে বা সাইকেলে ভিন রাজ্য থেকে বাড়ি ফিরতে শুরু করেছেন তাতে করোনা-আক্রান্তের সংখ্যা যে লাফিয়ে বাড়বে সেটা ধরেই রেখেছিলেন কর্তারা। বাস, ট্রেন ভালভাবে চালু হলে তা আরও চরমে উঠবে বলে মনে করা হচ্ছে। এই অবস্থায় সতর্কতা ও সচেতনতা মূল হাতিয়ার। সেখানে আক্রান্তদের খবর পাওয়ার পরও তাঁদের হাসপাতালে পাঠাতে প্রশাসনিক স্তরে দেরি হওয়াকে অনেকেই চরম গাফিলতি মনে করছেন।

প্রথম দিকে রিপোর্ট পাওয়া মাত্রই যে ভাবে পুলিশ, প্রশাসন ও স্বাস্থ্য দফতরের কর্তা-কর্মীরা আক্রান্তকে গ্রাম থেকে বের করে নিয়ে এসে কোভিড হাসপাতালে ভর্তি করতেন এবং তাঁর সংস্পর্শে আসা ব্যক্তিদের শনাক্ত করে কোয়রান্টিন সেন্টারে নিয়ে যেতেন তা এখন অতটা দেখা যাচ্ছে না বলে অভিযোগ।

যেমন গত মঙ্গলবার মুম্বই থেকে লরিতে করে কোতোয়ালি থানার কয়া গ্রামের বাড়িতে ফেরা দুই পরিযায়ী শ্রমিকের রিপোর্ট পজিটিভ এসেছে। তাঁরা হোম কোয়রান্টিনে আছেন। বুধবার দুপুরে তাঁদেরই এক জনকে ফোন করা হলে তিনি জানিয়ে দেন, “আমি বাড়ির পাশে একটা ঘরে একাই আছি। কী রিপোর্ট এসেছি জানি না।” একই কথা বলছেন তাহেরপুর থানার কয়া গ্রামের বাসিন্দা মহারাষ্ট্রের ভেমান্ডি এলাকা থেকে ১৮ তারিখ ফেরা এক ব্যক্তি। পজিটিভ রিপোর্ট হাতে পাওয়ার পর তাঁকে দ্রুত কোভিড হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া দূরের কথা বুধবার দুপুরেও তাঁকে ফোন করলে জানা যায় যে, তিনি তখনও বাড়িতেই আছেন।

করিমপুর ২ ব্লকের দীঘলকান্দির মৃত পনেরো বছরের কিশোরের লালারসের রিপোর্ট পজিটিভ এসেছে। তার মৃতদেহ পরিবারকে দেওয়া হয়নি। সোমবার তার রিপোর্ট পজিটিভ আসার পর ওই দিন রাতেই পরিবারের নয় জন সদস্যকে কোয়রান্টিন কেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হয়। বুধবার কালীগঞ্জের গহরাপোতা এলাকায় এক ব্যক্তির রিপোর্ট পজিটিভ এসেছে। তাঁকে মহারাষ্ট্র থেকে ফেরার পর পানিঘাটা কর্মতীর্থ কোয়ারেন্টাইন সেন্টারে রাখা হয়েছিল। অভিযোগ, ওই ব্যক্তি কোয়রান্টিন কেন্দ্র থেকে ফিরে আসার পর নানা জায়গায় ঘুরেছেন।

নবদ্বীপ পুর এলাকায় ২০ নম্বর ওয়ার্ডের তেঘড়িপাড়া ষষ্ঠীতলা বাসিন্দা এক যুবকের রিপোর্টও পজিটিভ এসেছে। ওই যুবক মার্চেন্ট নেভিতে কর্মরত। জানা গিয়েছে গেছে ২০১৯-এর নভেম্বরে তিনি ছুটিতে বাড়ি এসেছিলেন। গত ২৩মে তিনি চাকরিতে যোগ দেওয়ার জন্য কলকাতা অফিসে যান।

রানাঘাট ২ নম্বর ব্লকের তিন জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। এঁদের দু’জনের বাড়ি রঘুনাথপুর হিজুলি ২ নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েতের বঙ্কিমনগর এলাকায়। এঁরা রানাঘাট থানার ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়কের পাশে কোয়রান্টিন সেন্টারে ছিল। আর এক জনের বাড়ি যুগোলকিশোর গ্রাম পঞ্চায়েতের বিড়া এলাকায়। এণরা মহারাষ্ট্র থেকে ফিরেছেন। চাকদহের ঘেঁটুগাছি পঞ্চায়েতের কাশেমপুরে এক যুবকও করোনায় আক্রান্ত হয়েছে। তিনিও মহারাষ্ট্রে কাজ করতে গিয়েছিলেন।

হাঁসখালির পাটিকাবাড়ির বাসিন্দা এক যুবক সাত দিন আগে লরিতে বাড়ি ফেরেন। মঙ্গলবার রাতে তাঁর পজিটিভ রিপোর্ট আসে। কৃষ্ণগঞ্জের তারকনগরের বাসিন্দা এক যুবকও মহারাষ্ট্র থেকে ১৯ মে ফিরেছিলেন। তাঁরও করোনা রিপোর্ট পজিটিভ এসেছে।

অন্য বিষয়গুলি:

Coronavirus Nadia
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy