প্রতীকী চিত্র।
মধ্যশিক্ষা পর্ষদের সভাপতি বলছেন, মাধ্যমিক দিতে সিলেকশন টেস্ট পাশ করে আসতে হবে। তা সত্ত্বেও নিজের সিদ্ধান্তে ‘অনড়’ মুর্শিদাবাদের জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শক অমরকুমার শীল। শনিবার নতুন করে নির্দেশ পাঠিয়ে বহরমপুর ব্লকের সব স্কুলেই মাধ্যমিকের টেস্ট পরীক্ষায় অকৃতকার্যদের পাশ করিয়ে দিতে বলেছেন তিনি।
গত মঙ্গলবার বহরমপুরের মহাকালী পাঠশালা গার্লস হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষিকাকে ই-মেল পাঠিয়েছিলেন ওই ডিআই। তাতে ওই স্কুলে মাধ্যমিকের টেস্টে অকৃতকার্য ২৭ পড়ুয়াকে পাশ করিয়ে দেওয়ার নির্দেশ দেন তিনি। এ নিয়ে বিতর্ক শুরু হয়েছে। শিক্ষামহলের বক্তব্য, ওই নির্দেশ ডিআই দিতে পারেন না। মধ্যশিক্ষা পর্ষদের নিয়ম অনু্যায়ী, কোনও পড়ুয়া অকৃতকার্য হলে তাকে পাশ করানোর সিদ্ধান্ত নিতে পারেন একমাত্র সংশ্লিষ্ট স্কুল কর্তৃপক্ষই।
সেই বিতর্কের মধ্যেই এদিন বহরমপুর ব্লকের সমস্ত মাধ্যমিক স্কুলের কর্তৃপক্ষকে ডিআই ই-মেল করে নির্দেশ দিয়েছেন, মাধ্যমিকের টেস্ট পরীক্ষায় অকৃতকার্য পড়ুয়াদের সকলকে পাশ করিয়ে দিতে হবে। তাঁর ই-মেল পেয়ে বিভিন্ন স্কুলের প্রধান শিক্ষকেরা ক্ষোভের সুরে বলছেন, “এর চেয়ে স্কুল তুলে দিলে তো হয়।” এ নিয়ে জানতে চাওয়া হলে মধ্যশিক্ষা পর্ষদের সভাপতি কল্যাণময় গঙ্গোপাধ্যায়ও এদিন বলেন, ‘‘আমি বিষয়টি জানি না। তবে মাধ্যমিক দিলে সিলেকশন টেস্ট পাশ করে আসতে হয়। অন্য নিয়ম কে তৈরি করল! বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দেখব।’’
তবে এদিন ডিআই’কে সমর্থন করেছেন মুর্শিদাবাদের অতিরিক্ত জেলাশাসক (সাধারণ) সিরাজ দানেশ্বর। তিনি বলেন, “ডিআই শুধু একটি স্কুলের অকৃতকার্য পড়ুয়াদের পাশ করানোর কথা বলেছেন। সেটা ঠিক নয়। আইন সকলের জন্যই সমান। তাই বহরমপুর ব্লকের সব স্কুলেই এ বছর মাধ্যমিকের টেস্টে অকৃতকার্য পড়ুয়াদের পাশ করিয়ে দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তারা আগামী বছর যাতে মাধ্যমিক পরীক্ষায় বসতে পারে, সে জন্য তাদের নির্দিষ্ট ফর্ম ফিল-ইন করার সুযোগও দিতে বলা হয়েছে স্কুলগুলিকে।”
কিন্তু ওই নির্দেশ জেলার সব স্কুলেই কেন কার্যকর করা হবে না। অতিরিক্ত জেলাশাসকের প্রতিক্রিয়া, “বহরমপুর ব্লকের ক্ষেত্রে যে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, তা গোটা জেলায় কার্যকর করতে হবে, এমন কোনও বাধ্যবাধকতা নেই।’’
তবে নতুন নির্দেশ নিয়ে ‘অবাক’ জেলার শিক্ষক মহল। গোরাবাজার আইসিআই স্কুলের প্রধান শিক্ষক জয়ন্ত দত্ত বলেন “এই সিদ্ধান্তে সহ-শিক্ষকদের সঙ্গে আমাদের ভুল বোঝাবুঝির সৃষ্টি হবে। পড়াবেন তাঁরা। প্রশ্ন করবেন তাঁরা, খাতা দেখবেন তাঁরা আর পাশ করাবেন সরকারি আধিকারিকরা?” এর ফলে বিদ্যালয় শিক্ষাকে পঙ্গু করে তোলা হচ্ছে বলে তাঁর ধারণা।
প্রশাসনের সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করে নিখিল বঙ্গ শিক্ষক সমিতির সম্পাদক দুলাল দত্ত বলেন “এই সিদ্ধান্ত অযৌক্তিক এবং গা-জোয়ারি।’’
পশ্চিমবঙ্গ শিক্ষক সমিতির (মুর্শিদাবাদ জেলা শাখা) সম্পাদক গোলাম মুস্তাফা সরকার বলেন “এই সিদ্ধান্ত শুধুমাত্র একটি ব্লক কিংবা জেলায় কেন! অকৃতকার্য পড়ুয়াদের পাশ করানোর নির্দেশ রাজ্যের শিক্ষা দফতরই তো দিতে পারে। একজন ডিআই’কে কেন তা দিতে হবে। যা তাঁর অধিকারের মধ্যেই পড়ে না।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy