Advertisement
২৪ নভেম্বর ২০২৪
TMC

কেন ভিডিয়ো, দলেই মহুয়ার সমালোচনা

বিরোধীরা দাবি করেছেন যে, এই ভিডিও বার্তায় তিনি আসলে রাজ্য সরকার তথা মুখ্যমন্ত্রীর ব্যর্থতাকেই তুলে ধরেছেন।

ফাইল চিত্র।

ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কৃষ্ণনগর শেষ আপডেট: ১০ জুন ২০২০ ০৩:১৭
Share: Save:

জেলায় তৃণমূল পরিচালিত পঞ্চায়েতের কাজের ব্যর্থতার অভিযোগ তুলে সোশ্যাল মিডিয়ায় ভিডিয়ো পোস্ট করেছেন দলেরই সাংসদ তথা কৃষ্ণনগর সাংগঠনিক জেলা সভাপতি মহুয়া মৈত্র। যা নিয়ে রীতিমতো ক্ষুব্ধ তৃণমূলের নেতা-কর্মীদের একাংশ। পাশাপাশি, বিরোধীরা দাবি করেছেন যে, এই ভিডিও বার্তায় তিনি আসলে রাজ্য সরকার তথা মুখ্যমন্ত্রীর ব্যর্থতাকেই তুলে ধরেছেন।

সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করা ভিডিয়োয় মহুয়া বলেন, ‘‘ডিসেম্বরের মধ্যে ৬০ শতাংশ টাকা খরচ করা নিয়ম। বহু পঞ্চায়েত সেটা করতে পারেনি। এই বিপুল টাকা পরিকল্পনা মাফিক খরচ করলে গ্রামীণ এলাকায় একটা কাঁচা রাস্তাও থাকার কথা নয়।’’ দলীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, শুধু মহুয়ার বিরোধী গোষ্ঠীর লোকজনই নন, তাঁর অনুগামীরাও এই ভিডিয়ো বার্তায় ক্ষুব্ধ। তাঁদের দাবি, এই ভিডিয়ো বার্তায় রাজ্য সরকারের ভাবমূর্তি নষ্ট হয়েছে। এই প্রসঙ্গে প্রশ্ন করা হলে ক্ষোভ প্রকাশ করেন দলের জেলা পর্যবক্ষক রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়ও। তিনি বলেন, “উনি এলাকার দলের সাংসদ। কোনও গ্রাম পঞ্চায়েতের বিরুদ্ধে তাঁর অভিযোগ থাকতেই পারে। তিনি নিজে সেই পঞ্চায়েতের সঙ্গে বসতে পারতেন। তিনি জেলা প্রশাসনের সঙ্গে কথা বলে সমস্যার সমাধান করতে পারতেন।”

পাশাপাশি রাজীব জানান, দল বিষয়টিকে ভাল ভাবে দেখছে না। তিনি বলেন, “এ ভাবে ভিডিয়ো বার্তা দিয়ে তিনি কী প্রমাণ করতে চাইলেন বুঝতে পারছি না। সমস্যার সমাধান না করে তিনি কি নিজের প্রচার করতে চাইলেন?”

কাজ হয়নি বলে তিনটি গ্রাম পঞ্চায়েতের নাম উল্লেখ করেছেন সাংসদ। যার মধ্যে সাহেবনগর পলাশিপাড়া বিধানসভা এবং কানাইনগর ও বেতাই ২ তেহট্ট বিধানসভার অন্তর্গত। আর ওই তিনটি গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধানই তৃণমূলের। যা নিয়ে দলের অন্দরেই উঠেছে নানা প্রাশ্ন। দলের নেতা-কর্মীদের একাংশের বক্তব্য, তাঁর এলাকায় অনেক গ্রাম পঞ্চায়েতই বিজেপি, সিপিএমের দখলে। তিনি সেই সব পঞ্চায়েতের নাম না করে তৃণমূল পরিচালিত পঞ্চায়েতের নাম করে আসলে দলকেই হেয় করতে চেয়েছেন।

তেহট্টের যে দু’টি গ্রাম পঞ্চায়েতের টাকা পড়ে থাকা সত্ত্বেও কাজ হয়নি বলে অভিযোগ করেছেন মহুয়া, সে দুটোই গৌরীশঙ্কর দত্তের বিধানসভা এলাকার। যিনি দলে মহুয়ার বিরোধী গোষ্ঠীর নেতা হিসাবে পরিচিত। আর একটি পঞ্চায়েত আছে বিধায়ক তাপস সাহার এলাকায়। দলের নেতা-কর্মীদের একাংশের অভিযোগ, তিনি ওই বিধায়কদের ব্যর্থ প্রতিপন্ন করে হেয় করতেই এমনটা বলেছেন। এই প্রসঙ্গে গৌরীশঙ্কর কোনও মন্তব্য করতে না চাইলেও তাপস বলেন, “মহুয়া ব্যর্থ বললেই তো আমি ব্যর্থ হয়ে যাব না। সেটা বলবে মানুষ।”

এরই মধ্যে এই ভিডিয়ো বার্তাকে হাতিয়ার করে রাজ্যের শাসক দলকে বিঁধতে শুরু করেছে বিরোধীরা। বিজেপির নদিয়া উত্তর সাংগঠনিক জেলার মিডিয়া কনভেনর সন্দীপ মজুমদার বলেন, “আমরা তো প্রথম থেকে বলে আসছি যে, পঞ্চায়েত পরিচালনায় রাজ্য সরকার ব্যর্থ। মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে ব্যর্থ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মহুয়াদেবীর বক্তব্য সেই ব্যর্থতাকেই প্রমাণ করে।”

সিপিএমের জেলা সম্পাদক মণ্ডলীর সদস্য এস এম সাদি বলেন, “মহুয়া সব জানেন। পঞ্চায়েতে ভোট লুঠ করে জিতে আসা এই প্রধান, সদস্যরাই তাঁকে জিতিয়েছে। এখন মানুষ যখন তৃণমূলের ব্যর্থতা নিয়ে প্রশ্ন তুলতে শুরু করেছেন তখন নিজেকে বাঁচাতেই তিনি এ সব বলছেন।” বারবার ফোন করেও মহুয়াকে পাওয়া যায়নি।

অন্য বিষয়গুলি:

TMC BJP Politics
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy