রাস্তায় নেমে এল জনতা। সোমবার উমরপুরে। ছবি: অর্কপ্রভ চট্টোপাধ্যায়
চেনা চেহারায় না ফিরলেও আঁচ পড়ে এসেছে বিক্ষোভের। সোমবার, নয়া নাগরিকত্ব আইন বিরোধী আন্দোলনের চতুর্থ দিনে, মুর্শিদাবাদ জেলা জুড়ে বিক্ষিপ্ত উত্তেজনা কিংবা ইতস্তত তাণ্ডবের খবর মিললেও আপাতভাবে তা ছিল উত্তাপহীন, শান্তিপূর্ণ।
যার মূল কৃতিত্ব অবশ্যই দাবি করতে পারে, দিনভর জেলা প্রশাসন এবং ধর্মীয় সংগঠনের প্রধানদের নিরবিচ্ছিন্ন শান্তির পক্ষে প্রচার। আর তার জেরে ঝাড়খন্ড লাগোয়া বারালা এলাকায় প্রায় মাইল দীর্ঘ বিভিন্ন গ্রামের কাতারে কাতারে মানুষের মিছিল এবং ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়কে তাঁদের অবস্থান সত্ত্বেও গন্ডগোল হয়নি। যথেষ্ট সংখ্যক পুলিশ মোতায়েন থাকলেও তাদের সক্রিয় হওয়ার প্রয়োজন পড়েনি। ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়ক জুড়ে ঘণ্টা তিনেকের সেই অবস্থানে স্থানীয় ইমামেরা বার বার আবেদন জানান— আন্দোলন হোক, কিন্তু তা যেন অশান্তির বাতাবরণ তৈরি না করে।
রবিবার, জেলা ইমাম নিজামুদ্দিন বিশ্বাস নিজেই বার্তা দিয়েছিলেন, ইমাম-মোয়াজ্জিনদের। তিনি বলেছিলেন, ‘নয়া আইন বিরোধী আন্দোলন চলুক, কিন্তু তার জেরে যেন সরকারি সম্পত্তির ক্ষয়ক্ষতি না হয়। প্রশাসনের সঙ্গে সহযোগিতা করে তাদের কাছে অনুমতি নিয়েই আন্দোলনের রূপরেখা তৈরি
করতে হবে’। সেই বার্তায় যে সাড়া মিলেছে, এ দিনের ওই বিপুল জনসামগম সত্ত্বেও কোনও অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটা তারই প্রমাণ। জেলা ইমামদের বার্তার পাশাপাশি প্রশাসনের বিভিন্ন স্তরের কর্তারাও এ দিন গ্রাম-শহর ঘুরে লাগাতার প্রচার চালিয়ে গিয়েছেন— ‘কোনও প্ররোচনায় পা দেবেন না’।
এ দিন সকাল ৯টা থেকে রঘুনাথগঞ্জের উমরপুরে জমতে থাকে আশপাশের গ্রামের মানুষের ভিড়। ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়ক গত কয়েক দিনের মতোই যানহীন। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে সেই সড়কে প্রায় দু’কিলোমিটার দীর্ঘ পথে জনসমাগম ক্রমেই বাড়তে থাকে। জনতার সেই অবস্থানে ইমামদের বার বার বলতে শোনা যায়— দয়া করে উন্মত্ততাকে প্রশ্রয় দেবেন না। তাণ্ডব যেন না হয় কোথাও। কয়েকশো জাতীয় পতাকা, মাইকে ইমামদের বার্তা, কিন্তু জনতার মধ্যে কোনও উত্তেজনা দেখা যায়নি। মানুষের ঢল রাস্তায় নেমে এলে জাতীয় সড়ক একেবারেই স্তব্ধ হয়ে পড়ে। নয়া নাগরিকত্ব আইন বিরোধী সেই মিছিল ধীরে ধীরে এগোতে থাকে উমরপুরের দিকে। প্রায় ঘণ্টা তিনেক ধরে চলে এই প্রতিবাদ সভা।
লালবাগের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার তন্ময় সরকারের নেতৃত্বে পুলিশের বড়সড় বাহিনী হাজির থাকলেও সমাবেশস্থল থেকে তারা ছিল কিছুটা দূরে। মিছিলে হাজির হওয়া মানুষজনকে জিজ্ঞেস করতেই শোনা যায়, স্থানীয় পঞ্চায়েতের নির্দেশেই এই জমায়েতে শামিল হয়েছেন তাঁরা। পরিস্থিতি যাতে কোনও ভাবেই হাতের বাইরে চলে না যায় সে জন্য জেলা পুলিশ সুপারও পৌঁছে যান ঘটনাস্থলে। তবে নির্বিঘ্ন সেই সভায় তাঁদের সক্রিয় হওয়ার প্রয়োজন পড়েনি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy