Advertisement
১৩ নভেম্বর ২০২৪

কথা রাখেনি কংগ্রেস, জেদ চড়ছে বামেদের

জোটের আবহে খোঁজ মিলল কিঞ্চিৎ ‘জেহাদ-এর।কংগ্রেসের সঙ্গে তাদের জোট অক্ষুন্ন রাখতে সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক মুর্শিদাবাদ জেলা সফরে এসে জানিয়ে গিয়েছিলেন— তৃণমূল কিংবা বিজেপি সুবিধা পেয়ে যাচ্ছে দেখলে, প্রয়োজনে ‘বন্ধুত্বপূর্ণ’ লড়াই থেকেও সরে দাঁড়াবেন তাঁরা। প্রতিশ্রুতি সত্ত্বেও, সে কথা যে সব সময় রাখা যাচ্ছে না, জঙ্গিপুর অন্তত সে কথাই বলছে।

জঙ্গিপুরে কংগ্রেসের মহম্মদ সোহরাবের সমর্থনে দেওয়াল লিখন। ছবি:নিজস্ব চিত্র

জঙ্গিপুরে কংগ্রেসের মহম্মদ সোহরাবের সমর্থনে দেওয়াল লিখন। ছবি:নিজস্ব চিত্র

বিমান হাজরা
জঙ্গিপুর শেষ আপডেট: ২৭ মার্চ ২০১৬ ০১:৪০
Share: Save:

জোটের আবহে খোঁজ মিলল কিঞ্চিৎ ‘জেহাদ-এর।কংগ্রেসের সঙ্গে তাদের জোট অক্ষুন্ন রাখতে সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক মুর্শিদাবাদ জেলা সফরে এসে জানিয়ে গিয়েছিলেন— তৃণমূল কিংবা বিজেপি সুবিধা পেয়ে যাচ্ছে দেখলে, প্রয়োজনে ‘বন্ধুত্বপূর্ণ’ লড়াই থেকেও সরে দাঁড়াবেন তাঁরা। প্রতিশ্রুতি সত্ত্বেও, সে কথা যে সব সময় রাখা যাচ্ছে না, জঙ্গিপুর অন্তত সে কথাই বলছে।

ওই কেন্দ্রে কংগ্রেস প্রার্থী দেওয়ায় এ বার পুরনো মেজাজেই সিপিএম জানিয়ে দিচ্ছে— শুধু জঙ্গিপুর নয়, কথার খেলাপ করলে এ বার মুর্শিদাবাদের অন্যত্রও কংগ্রেসের বিরুদ্ধে প্রার্থী দেবে তারা। এবং সেক্ষেত্রে জেলায় বাম-কংগ্রেস জোট ভাঙার দায় কংগ্রেসের ঘাড়েই চাপিয়ে দিচ্ছে তারা।

শনিবার জঙ্গিপুর বিধানসভা কেন্দ্রের শ্রীকান্তবাটি মাঠে কর্মীসভা করে দলীয় নির্বাচনী প্রচার শুরু করেছেন দলের রাজ্য সম্পাদকমন্ডলীর সদস্য নৃপেণ চৌধুরী। তিনি বলছেন, ‘‘অনেকের মনেই প্রশ্ন জাগছে, জঙ্গিপুরে আমরা প্রার্থী দিলাম কেন?”

উত্তরটা ধরিয়ে দিচ্ছেন তিনি নিজেই—‘‘কারণটা খুব সহজ। কথা হয়েছিল আমাদের জেতা আসনে আমরাই প্রার্থী দেব। সেখানে কংগ্রেস প্রার্থী দিতে গেল কেন?’’ তাঁর ব্যাখ্যা, হিসেব অনুযায়ী জঙ্গিপুর কংগ্রেসের। কিন্তু বামেদের শক্ত ঘাঁটিতে কংগ্রেস তাদের ‘জেদ’ বজায় রেখে প্রার্থী দেওয়ায় এ বার পাল্টা জেহাদ সিপিএমের।

নৃপেণবাবু জানান, বামেদের মনে হয়েছে ওই কেন্দ্রে কংগ্রেসের প্রার্থী শাসক দলের সঙ্গে লড়াই করার প্রশ্নে তেমন পোক্ত নন। তাই এখানে প্রার্থী দিচ্ছে বামেরা।

তিনি জানান, রাজ্যে বাম ও গণতান্ত্রিক জোটের নিয়ম মেনে স্থির হয়েছিল, যে কেন্দ্রে যে দলের বিধায়ক রয়েছে, সেই আসনে প্রার্থী দেবে তারাই। নৃপেণ বলেন, ‘‘আমরা তার বাইরেও কংগ্রেসের জন্য আসন ছেড়েছি। তৃণমূলকে হারানোর লক্ষ্যেই এই স্বার্থ ত্যাগটা কংগ্রেসের মনে রাখা উচিত ছিল।’’

জোটের শর্ত মেনে সহজ অঙ্কেই মুর্শিদাবাদে কংগ্রেসের ১৪টি এবং বামেদের ৮টি আসন পাওয়ার কথা। সাগরদিঘি তৃণমূলের দখলে থাকলেও সিপিএম ছিল দ্বিতীয় স্থানে। জঙ্গিপুর আসনটি সিপিএম দাবি করে প্রথমে প্রার্থী ঘোষণা করলেও পরে জোটের স্বার্থে দলের রাজ্য কমিটির নির্দেশে সেই ঘোষিত প্রার্থীকে তুলে নেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়। কিন্তু তারপরেও দেখা য়ায় সিপিএমের প্রাপ্য তিনটি কেন্দ্র ডোমকল, হরিহরপাড়া এবং সাগরদিঘিতে কংগ্রেস প্রার্থী ঘোষণা করে দিয়েছে। সিপিএমের তরফে বার বার কংগ্রেস নেতাদের এ ব্যাপারে অনুরোধ করা সত্ত্বেও সাড়া মেলেনি। পাল্টা চাপ দিতে তাই এ বার জহ্গিপুরে প্রার্থী ঘোষণা করেছে সিপিএম।

বামেদের দাবি, কংগ্রেস ২০১৪ সালের লোকসভা নির্বাচনের ফল দেখিয়ে বিভ্রান্তি তৈরির চেষ্টা করছে।। লোকসভা নির্বাচনেও সাগরদিঘিতে সিপিএম দ্বিতীয় স্থানে ও কংগ্রেস তৃতীয় স্থানে ছিল। একই হিসেব দেখিয়ে বলা যেতেই পারে জঙ্গিপুরে লোকসভায় সিপিএম সাড়ে ৮ হাজার ভোটে এগিয়ে ছিল। জঙ্গিপুর পুরসভায়ও তাদেরই দখলে। রঘুনাথগঞ্জ ১ ও ২ পঞ্চায়েত সমিতি সিপিএমের। তবে, এ দিনও জোটসঙ্গীর কাছে বামেদের আবেদন— রাজ্যে এখন কঠিন সময় চলছে। সচেতন কংগ্রেস সমর্থকরা নিজেরা ভেবে দেখুন জঙ্গিপুরে কে তৃণমূলকে হারাতে পারবে। সেই মতো সিদ্ধান্ত নিন। তৃণমূলকে হারাতে সেই ভোট প্রয়োগ করুন।

অন্য বিষয়গুলি:

assembly election 2016 congress cpm
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE