—প্রতীকী চিত্র।
প্রচণ্ড গতিতে মোটরবাইক চালানোর দৃশ্য এখন অহরহ দেখা যাচ্ছে জেলার নানা প্রান্তে। কোনও অনুষ্ঠানের দিন যেন আরও বাড়াবাড়ি হয়। এ বার ইদে সারা দিনভর গ্রামের রাস্তা থেকে শুরু করে জাতীয় সড়ক বিভিন্ন জায়গায় এমন প্রচণ্ড গতির মোটরবাইক দেখা গিয়েছে। আরোহীরা অনেকে হেলমেটও পরেন না। এমনই পরিস্থিতি যে, মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে বাড়ানো হল শয্যা। মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের এমএসভিপি অনাদি রায় চৌধুরী বলেন, ‘‘দুর্ঘটনা কখনও বলে আসে না। ইদে কিশোররা মোটরবাইক নিয়ে ঘুরতে বের হয়। তখন গাড়ির গতিবেগ বেশি থাকায় দুর্ঘটনা ঘটে। তার ফলে আরও ১৫টি শয্যা বাড়ানো হল।’’
গত রোজার ইদে মোটরবাইক আরোহীদের দৌরাত্ম্য রুখতে লাঠি হাতে রাস্তায় দেখা গিয়েছিল নওদার ভিকুতলা এলাকার কয়েক জন বাসিন্দাকে। ইদের দিন দুর্ঘটনা রুখতে ইমামদের মাধ্যমে আগাম সতর্ক করেছিল প্রশাসনও। বিভিন্ন মসজিদ, ইদগাহ ময়দান থেকে সে বিষয়ে বার্তাও দেন ইমামেরা। দ্রুত গতিতে মোটরবাইক না চালানোর পাশাপাশি, নাবালকদের হাতে মোটরবাইক না দেওয়ার আর্জি জানান ইমামেরা। মোটরবাইক দুর্ঘটনা রুখতে পুলিশের টহলের পাশাপাশি বিভিন্ন মোড়ে পুলিশ, সিভিক ভলান্টিয়ার মোতায়েন ছিল।
তবে প্রশাসন, ইমামদের সচেতনতাকে উপেক্ষা করে ইদের পরদিনও মোটরবাইক নিয়ে বিভিন্ন রাজ্য সড়ক, মফসসলের রাস্তায় দাপাদাপি করতে দেখা যায় অনেককে। স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশের দাবি, ওই সমস্ত মোটরবাইক আরোহীদের অধিকাংশই নাবালক। হরিহরপাড়ার বাসিন্দা জিন্নাহ মণ্ডল বলেন, “অল্পবয়সী ছেলেরা যে ভাবে বেপরোয়া ভাবে মোটরবাইক চালাচ্ছে তাতে সাবধানে রাস্তা দিয়ে যাতায়াত করেও ভয় করছে। দুর্ঘটনাও ঘটছে।”
ইদের দিন নওদার বাগাছাড়া, শ্যামনগর, চণ্ডীপুর সহ একাধিক জায়গায় দুর্ঘটনা ঘটেছে। হরিহরপাড়া, জলঙ্গি, ডোমকলের বিভিন্ন এলাকাতেও মোটরবাইক দুর্ঘটনায় জখম হয়েছেন বহু মোটরবাইক আরোহী। নওদা, হরিহরপাড়া, ডোমকল, জলঙ্গির বিভিন্ন হাসপাতালের পাশাপাশি মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজেও ছিল দুর্ঘটনাগ্রস্তদের ভিড়। নওদার বাগাছাড়া এলাকায় দুটি মোটরবাইকের মুখোমুখি সংঘর্ষে গুরুতর জখম হন নদিয়ার দুই তরুণ।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বহরমপুর নিয়ে যাওয়ার পথে তাদের মধ্যে এক জনের মৃত্যু হয়েছে। নওদার ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক সফিকুল হাসান বলেন, “ইদের দিন পথ দুর্ঘটনায় জখম হয়ে অনেকেই হাসপাতালে এসেছেন। তাদের মধ্যে দু-তিন জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক ছিল। তাদের মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে রেফার করা হয়েছে।” মঙ্গলবার ইদের পর দিনও জেলার বিভিন্ন জায়গায় মোটরবাইক দুর্ঘটনায় অনেকেই জখম হয়েছেন। জেলা পুলিশের এক কর্তা বলেন, “দুর্ঘটনা রুখতে আগাম সতর্কতা নেওয়া হয়েছিল। তবুও বিভিন্ন জায়গায় বিক্ষিপ্তভাবে কিছু দুর্ঘটনা ঘটেছে।”
পথ দুর্ঘটনা বেড়ে যাওয়ায় প্রায় প্রতিদিনই দুর্ঘটনাগ্রস্ত রোগীদের ভর্তি করা হয় মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। সোমবার ইদ উল আযহা। আর এই ইদ উপলক্ষে রাস্তায় কিশোর যুবক থেকে সব বয়সের মানুষদেরই আনাগোনা বেশি লক্ষ্য করা যায়। অনেকেই সদ্য গাড়ি চালানো শিখেছেন। আর এই অবস্থাতেই গাড়ি নিয়ে বেরিয়ে পড়েছেন রাস্তায়। সে ক্ষেত্রে দুর্ঘটনা ঘটার সম্ভাবনা প্রবল তাই আগে থেকেই শয্যা সংখ্যা বাড়িয়ে সব রকম চিকিৎসা পরিষেবা দিতে প্রস্তুত মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল।
প্রতিবছরই এই দিনে দুর্ঘটনার কবলে পড়ে প্রচুর মানুষ চিকিৎসা পরিষেবা নিতে মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালেকেই বেছে নেন। রোগীদের হাসপাতালে পরিষেবা পেতে কষ্ট না হয় সেই কথা মাথায় রেখেই মুর্শিদাবাদ মেডিক্যালে আরও ১৫টি শয্যা বাড়ানো হয়। রোগীর আত্মীয় আমিনুল শেখ বলেন, "হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ এটা ঠিক করেছেন। ইদের দিনে দুর্ঘটনার আগেভাগেই শয্যা বাড়িয়েছে। ইদের দিন দুর্ঘটনা ঘটে। তার জন্য শয্যা বাড়ানো দরকার ছিল।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy