—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।
প্রায় দু'বছর ধরে বিধবা ভাতার টাকা পাচ্ছিলেন শান্তিপুর শহরের এক তরুণী। যদিও তাঁর স্বামী জীবিত। তবে তরুণীর দাবি, তিনি বিধবা ভাতা নয়, লক্ষ্মীর ভান্ডারের জন্য আবেদন করেছিলেন। এক তৃণমূল কর্মী ‘ঘুষের বিনিময়ে’ তা পাইয়ে দেওয়ার আশ্বাস দেয়। এর পরে তাঁর ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে মাসে হাজার টাকা করে ঢুকতে শুরু করেছিল। তাঁর ধারণা ছিল, তিনি লক্ষ্মীর ভান্ডারের টাকাই পাচ্ছেন। শান্তিপুরের বিডিও দু’জনের বিরুদ্ধেই পুলিশের কাছে অভিযোগ দায়ের করেছেন। গত দু'বছরে পাওয়া ভাতার টাকাও ফেরত চাওয়া হয়েছে।
যাঁর বিরুদ্ধে অবৈধ ভাবে বিধবা ভাতা নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে, তিনি শান্তিপুর শহরের ২১ নম্বর ওয়ার্ডের বিশ্বশুক পল্লির বাসিন্দা শেফালী দে। মঙ্গলবার তিনি দাবি করেন, "লক্ষ্মীর ভান্ডারের জন্য এর আগে বেশ কয়েক বার আবেদন করেছিলাম। কিন্তু কোনও ভাবেই অনুমোদন হচ্ছিল না। উত্তম হালদার নামে এলাকার এক তৃণমূল কর্মী জানান, তিনি ব্যবস্থা করে দেবেন। তার জন্য তিন হাজার টাকা দিতে হবে। তাঁর কাছে বিভিন্ন নথিপত্র জমা দিই। কিছু দিন পর অ্যাকাউন্টে টাকা আসতে শুরু করে। ওঁকে দু’দফায় টাকা মিটিয়ে দিয়েছি।” শেফালীর প্রশ্ন, “এই টাকা যে বিধবা ভাতা তা বুঝব কী করে? আমি তো বিধবা ভাতার জন্য আবেদনই করিনি!” তাঁর শাশুড়ি পদ্ম দে বলেন, "আমার জীবিত ছেলে পরেশ দে কী করে সরকারি খাতায় মৃত হয়ে গেল, বুঝতে পারছি না। আমরা তো লক্ষ্মীর ভান্ডার চেয়েছিলাম।"
তবে শান্তিপুরের বিডিও সন্দীপ ঘোষ বলেন, "শেফালী দে-র নামে লক্ষ্মীর ভান্ডারের কোনও আবেদন জমা পরেনি। তিনি বিধবা ভাতার টাকা পাচ্ছিলেন। ওই মহিলা এবং যাকে তিনি টাকা দিয়েছিলেন, দু’জনের বিরুদ্ধেই লিখিত অভিযোগ জানানো হয়েছে।" প্রশ্ন হল, বিধবা ভাতা পেতে গেলে স্বামীর মৃত্যুর শংসাপত্র এবং উপভোক্তার লিখিত প্রতিশ্রুতি দিতে হয় যে তিনি ফের বিয়ে করবেন না। এ ক্ষেত্রে সেই দু’টি নথি কী করে জমা পড়ল? বিডিও বলেন, “গোটা বিষয়টাই আমরা খতিয়ে দেখছি। পুলিশকে জানানো হয়েছে।”
স্থানীয় সূত্রের দাবি, বছর তিনেক আগেও শান্তিপুর শহরের প্রান্তিক এলাকা এবং হরিপুর গ্রাম পঞ্চায়েতে অবৈধ ভাবে বিধবা ভাতা বার জন্য একটি দুষ্টচক্র কাজ করত। শান্তিপুরের ২১ নম্বর ওয়ার্ডের পুরপ্রতিনিধি উৎপল সাহা বলেন, "আমরা মানুষকে বার বার বলেছি, সরকারি সুবিধা পেতে সরাসরি পুরসভা, প্রশাসন বা জনপ্রতিনিধিদের কাছে আসুন। দুয়ারে সরকারে আসুন। কিন্তু অনেকেই না বুঝে ফাঁদে পা দিচ্ছেন।”
কিন্তু উত্তম হালদার তো তাঁদের দলেরই কর্মী? উৎপলের দাবি, "এক সময় ও হয়তো আমাদের সঙ্গে ছিল। কিন্তু দীর্ঘ দিন দলের সঙ্গে ওর যোগ নেই। এখন এখানে ঠিকমত থাকেও না।" এ দিৈন চেষ্টা করেও উত্তম হালদারের সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি। বিজেপির নদিয়া দক্ষিণ সাংগঠনিক জেলা সভাপতি পার্থসারথি চট্টোপাধ্যায়ের কটাক্ষ, "তৃণমূলের লোকেদের কাজই হল, মানুষকে ভুল বুঝিয়ে নানা কাজে কাটমানি খাওয়া। আর তৃণমূল নেতারা যা বলেন প্রশাসন তা বেদবাক্য মনে করে। শুধু শান্তিপুর নয়, গোটা রাজ্যেই এই চলছে।"
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy