নবদম্পতিকে আশীর্বাদ করছেন হাতেমুল। নিজস্ব চিত্র
দীর্ঘদিন ধরে বাড়িতে বড় হওয়া এক দুঃস্থ তরুণীর বিয়ের বন্দোবস্ত করলেন চোঁয়ার এক বাসিন্দা। হাতেমুল ইসলাম নামে ওই ব্যক্তি তরুণীর বিয়ের আয়োজন করেই ক্ষান্ত থাকেননি। কন্যাদায়গ্রস্ত পিতার মতো যাবতীয় দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি ওই তরুণীর সম্প্রদানও তিনিই করেছেন।
হরিহরপাড়ার চোঁয়া এলাকার বাসিন্দা বছর পঁয়ষট্টির হাতেমুল এক সময় সাংবাদিকতা করেছেন। তাঁর বাড়িতেই প্রায় ১৪ বছর ধরে রয়েছেন ওই এলাকারই একটি পরিবারের মেয়ে চম্পা মাল। হাতেমুলের একমাত্র মেয়ের বিয়ে হয়ে যাওয়ার পর কার্যত চম্পাই তাঁর বাড়ির ‘ঘরের মেয়ে’ হয়ে উঠেছিলেন। বাড়ির টুকিটাকি কাজ করার পাশাপাশি অন্য খুঁটিনাটি বিষয়ও দেখাশোনা করতেন চম্পা। বছর পাঁচেক আগে চম্পার বাবা, পেশায় দিনমজুর শীতল মাল মারা যান। বেশ কিছু দিন ধরেই পিতৃহীন চম্পাকে সুপাত্রস্থ করার চেষ্টা চলছিল। পাশের ট্যাংরামারি গ্রামের এক যুবক বছর পঁচিশের আশুতোষ সরকারের সঙ্গে শেষ পর্যন্ত তাঁর বিয়ে ঠিক হয়। পরিবারের লোকদের সঙ্গে নিয়ে আশীর্বাদ করা থেকে শুরু করে পাত্রপক্ষের সঙ্গে যাবতীয় কথাবার্তা চালানো— সবই করেন হাতেমুল। বুধবার ছিল বিয়ে। চম্পাকে উপহার হিসেবে দেওয়া আসবাব আশুতোষের বাড়িতে পৌঁছে দেন হাতেমুল। তাঁর বাড়িতেই কনেকে সাজিয়ে নিয়ে আসা হয় ট্যাংরামারি গ্রামের শিবমন্দিরে। বিয়ে উপলক্ষে সেজে উঠেছিল মন্দির চত্বর। ছাদনাতলায় বিয়ের অনুষ্ঠান সম্পন্ন হয়। চম্পা-আশুতোষের বিয়ে দেখতে ভিড় জমিয়ে ছিলেন আশপাশের গ্রামের বহু মানুষ। সকলের জন্য ছিল মিষ্টিমুখের আয়োজন।
হাতেমুলের এই ভূমিকায় খুশি চম্পার আত্মীয়-পরিজন থেকে স্থানীয় বাসিন্দারাও। চম্পার মা শ্যামলী চোখের জল মুছে বলেন, ‘‘ওর বাবা থাকলেও হয় তো এ ভাবে ধুমধাম করে বিয়ে দিত পারত না। আজ খুব ভাল লাগছে।’’ এলাকার প্রবীণ বাসিন্দা রণেন দে বলেন, ‘‘হাতেমুল যে ভাবে কন্যাদায়গ্রস্ত পিতার মতো চম্পার বিয়ের যাবতীয় আয়োজন করেছেন, তা প্রশংসনীয়। এ ভাবেই সুদৃঢ় হোক সম্প্রীতি।’’ আর হাতেমুল বলছেন, ‘‘চম্পা আমারবাড়িরই মেয়ে। ’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy