কল্যাণী এমস। —ফাইল চিত্র।
দলের বিধায়কের সামনেই বিজেপির দুই গোষ্ঠীর সংঘাত। আর তার জেরেই বৃহস্পতিবার রাতে উত্তপ্ত হয়ে উঠল নদিয়া জেলার কল্যাণী। ভাঙা হয় বিধায়কের গাড়িও। এই ঘটনায় বিজেপিকে কটাক্ষ করেছে রাজ্যের শাসকদল তৃণমূল।
বৃহস্পতিবার রাতে কল্যাণীর বিজেপি বিধায়ক অম্বিকা রায়ের কার্যালয়ে এমসে নিয়োগ দুর্নীতি এবং স্বজনপোষণের অভিযোগ তুলে বিজেপি টাউন সভাপতির নেতৃত্বে কর্মীদের একাংশ বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন। টাকার বিনিময়ে কল্যাণীর এমসে চাকরি দিচ্ছেন বিজেপির বিধায়ক, এমনটাই অভিযোগ ছিল তাঁদের। এমনকি টাকার বিনিময়ে বিধায়ক তৃণমূল কর্মীদের কাজ পাইয়ে দিচ্ছেন বলেও অভিযোগ তোলা হয়। দলীয় কার্যালয়ে বিধায়ককে ঘিরে বিক্ষোভের মধ্যেই তাঁর গাড়িতে ভাঙচুর চালান দলীয় কর্মী-সমর্থকেরা। বিধায়ককে হেনস্থা করা হয় বলে অভিযোগ। কিছু ক্ষণের মধ্যেই ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন বিধায়কপন্থী কর্মী-সমর্থকেরা। তাঁদের পাল্টা মারে এলাকা ছেড়ে চম্পট দেন বিক্ষোভকারী বিজেপি কর্মী-সমর্থকেরা। বিজেপির মহিলা কর্মীদের বিধায়ক গোষ্ঠীর লোকজন ব্যাপক হেনস্থা করেন বলে অভিযোগ। দু’পক্ষের সংঘর্ষ ঘিরে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে কল্যাণী।
এই ঘটনায় বিজেপিকে কটাক্ষ করেছে তৃণমূল। দলের রানাঘাট সাংগঠনিক জেলার সভাপতি দেবাশিস গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, “বিজেপির বিধায়ক যে দুর্নীতিগ্রস্ত, সেটা কেবল বিরোধীরা বলছে না। বলছেন তাঁরই দলের নেতা-কর্মীরা। বিধায়কের অনুগামীদের বিরুদ্ধে মহিলাদের হেনস্থা করার অভিযোগ তুলছেন দলেরই নেত্রী। তার পরে রাজ্য বিজেপির চরিত্র বুঝতে আর কারও অসুবিধা থাকার কথা নয়।” এই প্রসঙ্গে বিধায়ক বলেন, “যাঁরা বিক্ষোভ দেখিয়েছেন, তাঁরা প্রকৃত বিজেপি কর্মী-সমর্থক নন। তৃণমূলের সঙ্গে ষড়যন্ত্র করে আমার ভাবমূর্তিকে কালিমালিপ্ত করতেই এই নাটক করা হয়েছে।” বিজেপির বিক্ষোভকারী নেতা-কর্মীদের তরফে শম্পা বৈরাগী বলেন, “বিধায়ক তাঁর আত্মীয় এবং ঘনিষ্ঠদের কল্যাণী এমসে চাকরি পাইয়ে দিচ্ছেন। তৃণমূলের লোক টাকা দিয়ে বিধায়কের হাত ধরে চাকরি পাচ্ছে। এই ঘটনার প্রতিবাদ করতে গেলে উনি মস্তান বাহিনী দিয়ে আমাকে এবং আমার মতো কর্মী-সমর্থকদের হেনস্থা করেন। আমরা ওঁর পদত্যাগ দাবি করছি।”
প্রসঙ্গত, কল্যাণীর বিধায়কের বিরুদ্ধে এমসে কাজ দেওয়া নিয়ে দুর্নীতির অভিযোগ এই প্রথম নয়, স্বজনপোষণের অভিযোগে বিধায়কের উপর দলের একাংশ দীর্ঘ দিন ধরে ক্ষুব্ধ। গত বিধানসভা নির্বাচনের সময়ে যে কর্মী-সমর্থকেরা তাঁর পাশে দাঁড়িয়েছিলেন, তাঁরাই এমসের বরাত পাওয়া ঠিকাদার সংস্থায় কাজ পাচ্ছেন না বলে অভিযোগ। বিধায়কের সুপারিশে অন্যেরা, এমনকি জেলার বাইরের লোকজন কাজ পাচ্ছেন, এমনটাই অভিযোগ বিজেপি কর্মীদের।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy