— প্রতিনিধিত্বমূলক চিত্র।
শ্বাসকষ্টের উপসর্গ নিয়ে হাসপাতালে এসেছিল দু’মাসের এক শিশু। কিন্তু চিকিৎসা তো দূর, মিলল না খালি শয্যাও। শেষমেশ চিকিৎসার অভাবে মায়ের কোলেই মৃত্যু হল শিশুটির। শনিবার রাতে মুর্শিদাবাদের মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে ঘটনাটি ঘটেছে।
মৃত শিশুটির পরিবার মুর্শিদাবাদের বহরমপুর থানার পর্বতপুরের বাসিন্দা। আচমকা শ্বাসকষ্টের উপসর্গ দেখা দেওয়ায় দু’মাসের কন্যাকে নিয়ে শনিবার দুপুরে মুর্শিদাবাদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এসেছিলেন তার বাবা-মা। কিন্তু সেখানে পৌঁছে জানা যায়, খালি বেড নেই। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে শিশুটির শারীরিক অবস্থার অবনতি হতে শুরু করলে তাকে মায়ের কোলে থাকা অবস্থাতেই অক্সিজেন দেওয়া শুরু করেন চিকিৎসকেরা। যদিও এত করেও শেষ রক্ষা হয়নি। মায়ের কোলেই মৃত্যু হয়েছে শিশুটির।
মৃত শিশুর পরিবারের তরফে জানা গিয়েছে, শনিবার সকালে হঠাৎ শ্বাসকষ্ট শুরু হয় দু’মাসের ওই শিশুকন্যার। তড়িঘড়ি তাকে মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে নিয়ে যান বাবা-মা। কিন্তু অভিযোগ, হাসপাতালে খালি শয্যা না থাকায় শিশুটিকে কোলে নিয়েই অক্সিজেন দেওয়াতে বাধ্য করেন কর্তব্যরত চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীরা। শুধু তাই নয়, বার বার অনুরোধ করা সত্ত্বেও কোনও চিকিৎসকই শিশুটির চিকিৎসা করেননি বলেও অভিযোগ তুলেছে শিশুটির পরিবার। শেষমেশ শনিবার রাত ৮টা নাগাদ মৃত্যু হয় শিশুটির।
শিশু মৃত্যুকে কেন্দ্র করে শনিবার রাতে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে মেডিকেল কলেজ চত্বর। চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীদের ঘিরে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন রোগীদের পরিজনদের একাংশ। শেষমেশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে কোনও রকমে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে পুলিশ। তবে বেডের অপ্রতুলতার কথা স্বীকার করে নিলেও চিকিৎসায় গাফিলতির অভিযোগ অস্বীকার করেছেন মুর্শিদাবাদ মেডিকেল কলেজ কর্তৃপক্ষ।
মৃত শিশুটির দাদু বলেন, “শনিবার বেলা ১২টার সময় আমার নাতনিকে ভর্তি করি। সিস্টার এবং ডাক্তারদের বার বার বলেছি, একটু দেখুন। কিন্তু ওঁরা দেখলেন না। আধ ঘণ্টা পর অক্সিজেন দিল। তাও কোলে বসিয়েই অক্সিজেন দিতে হল। বেড পর্যন্ত নেই। এক-একটা বেডে চার জন করে রোগী। কিছুক্ষণ পর নাতনির অবস্থা খারাপ হলে সিস্টারকে বললাম দেখুন। রাত ৮টার সময় মারা গেল বাচ্চাটা।” তবে হাসপাতাল সূত্রে পাল্টা বলা হয়েছে, সে সময় হাসপাতালে পর্যাপ্ত খালি শয্যা ছিল না। মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজের সুপার অনাদিকুমার চক্রবর্তী বলেন, ‘‘শ্বাসকষ্টের সমস্যা নিয়ে শিশুটি হাসপাতালে এসেছিল। প্রয়োজনীয় সব রকম চিকিৎসাও দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু রাতের দিকে হঠাৎ অবস্থার অবনতি হয়। তাতেই দুর্ভাগ্যজনক ভাবে শিশুটির মৃত্যু হয়েছে। তবে চিকিৎসায় কোনও রকম গাফিলতির প্রশ্নই নেই।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy