ব্যারিকেডের সামনে মাইক হাতে মীনাক্ষী মুখোপাধ্যায়। কৃষ্ণনগরে। ছবি: সুদীপ ভট্টাচার্য
সিপিএম প্রভাবিত ছাত্র ও যুব সংগঠনের নদিয়া জেলা পরিষদ অভিযান ঘিরে কার্যত ধুন্ধুমার পরিস্থিতি তৈরি হল কৃষ্ণনগরে। প্রায় আড়াই ঘণ্টা জেলাসদরের একাংশে যান চলাচল শিকেয় তুলে কার্যত দাপিয়ে বেড়াল প্রায় আড়াই-তিন হাজার মানুষের মিছিল। ব্যারিকেড ভাঙা, থানা ঘেরাও কিছু বাদ যায়নি। পুরোভাগে ছিলেন ডিওয়াইএফের রাজ্য সম্পাদক মীনাক্ষী মুখোপাধ্যায়। মিছিল নিয়ন্ত্রণে সিভিক পুলিশের ব্যবহার নিয়েও তিনি প্রশ্ন তুলেছেন।
বৃহস্পতিবার দুপুরে এসএফআই ও ডিওয়াইএফের মিছিল পোস্ট অফিস মোড় থেকে জেলা পরিষদের দিকে রওনা হয়। প্রথম ব্যারিকেড ভেঙে এগিয়ে তারা দ্বিতীয় ব্যারিকেড ভাঙার চেষ্টা করে। পুলিশের সঙ্গে ধস্তাধস্তিতে জনা সাতেক বামকর্মী অসুস্থ হয়ে পড়েন। তাঁদের শক্তিনগর জেলা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। তিন জন সেখানে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। দ্বিতীয় ব্যারিকেড ভাঙার সময়ে পুলিশ ১৩ জনকে গ্রেফতার করে। পরে তাঁদের ব্যক্তিগত জামিনে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।
এ দিন ১৩ দফা দাবি নিয়ে জেলা পরিষদ অভিযানের ডাক দিয়েছিল সিপিএমের ছাত্র-যুব সংগঠন। সেই মতো জেলার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে কৃষ্ণনগর শহরের পোস্ট অফিস মোড়ে জমায়েত হন ওই দুই সংগঠনের নেতাকর্মীরা। মীনাক্ষী ছাড়াও ছিলেন ডিওয়াইএফের রাজ্য সভাপতি ধ্রুবজ্যোতি সাহা, এসএফআইয়ের সর্বভারতীয় সম্পাদক ময়ূখ বিশ্বাস প্রমুখ। পোস্ট অফিস মোড়ে একটি ছোট মঞ্চ থেকে বক্তৃতা করে তাঁরা মিছিল নিয়ে জেলা পরিষদের দিকে রওনা দেন। মিছিলে প্রায় হাজার তিনেক মানুষের জমায়েত ছিল বলে নেতৃত্বের দাবি। তবে পুলিশ সূত্রের দাবি, সংখ্যাটা হাজার দুয়েক।
কৃষ্ণনগর কলেজ মাঠের সামনে প্রথম ব্যারিকেড করে মিছিল আটকানোর চেষ্টা করে পুলিশ। সেই ব্যারিকেড ভেঙে মিছিল এগিয়ে যায়। কিছুটা দূরে রবীন্দ্রভবনের সামনে আরও বেশি শক্তপোক্ত ব্যারিকেড করা ছিল। তৈরি ছিল জলকামানও। সেই ব্যারিকেডও ভাঙার চেষ্টা হয়। পুলিশের সঙ্গে ধস্তাধস্তি বেধে যায়। মিছিল থেকে পুলিশকে লক্ষ্য করে ইট ছোড়া হয় বলে অভিযোগ। ব্যারিকেডের কিছুটা ভেঙে ফেলতে সক্ষম হন বিক্ষোভকারীরা। যাঁরা ব্যারিকেড ভাঙার চেষ্টা করছিলেন, তাদের মধ্যে থেকে ১৩ জনকে পুলিশ গ্রেফতার করে।
এর পর পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। মীনাক্ষী এগিয়ে এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। ধৃতদের মুক্তির দাবিতে রাস্তায় বসে পড়ে বিক্ষোভ দেখানোর নির্দেশ দেন তিনি। মিছিলের কর্মীরা ব্যারিকেডের সামনে রাস্তায় বসে পড়েন। মীনাক্ষী মাইকে ঘোষণা করেন, ধৃতদের মুক্তি না দিলে তাঁরা থানা ঘেরাও করবেন। এর পরেই মিছিল মুখ ঘুরিয়ে কোতোয়ালি থানার সামনে চলে যায়। সেখানে বিক্ষোভ চলতে থাকে। পুলিশ ১৩ জনকেই ব্যক্তিগত জামিনে মুক্তি দিলে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়। এর পর মিছিল চলে আসে কৃষ্ণনগর পুরসভার মোড়ে। সেখানেও একপ্রস্ত বিক্ষোভ ও পথসভা হয়।
পরে মীনাক্ষী দাবি করেন, “হাই কোর্টের নির্দেশ হল, সিভিক ভলান্টিয়ারদের ভিড় নিয়ন্ত্রণে বা আইনশৃঙ্খলা রক্ষার জন্য ব্যবহার করা যাবে না। কোন আক্কেলে পুলিশ সুপার, থানা ও পুলিশমন্ত্রী সেই নির্দেশ আমান্য করে তাদের ব্যবহার করলেন, সেটা এখানকার পুলিশকে কোর্টে জবাবদিহি করতে হবে।”
তবে কৃষ্ণনগর পুলিশ জেলার সুপার ঈশানী পালের দাবি, “মিছিল নিয়ন্ত্রণ করার জন্য পুলিশ ছিল। সিভিক ভলান্টিয়ারদের ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণের জন্য ব্যবহার করা হয়েছিল।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy