ভারতীয় আত্মীয়ের মৃতদেহকে শেষ শ্রদ্ধা সীমান্তে বাংলাদেশি পরিজনদের। ছবি: অর্কপ্রভ চট্টোপাধ্যায়
সোমবার সকালে অসুস্থ হয়ে মৃত্যু হয় লালগোলার কালিকাপুর গ্রামের উত্তম সাহার (৪৬)। তাঁর শ্বশুরবাড়ি সীমান্ত লাগোয়া বাংলাদেশের গ্রামে। তাঁদের ইচ্ছে ছিল, এক বারের জন্য হলেও মৃত পরিজনকে শেষ দেখার। পরিবারের সেই ইচ্ছের কথা জানিয়ে লালগোলার বিলবোড়া কোপড়া গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান শেখ রফিকুল ইসলাম দ্বারস্থ হন আটরশিয়া সীমান্ত চৌকির বিএসএফের ৩৫ নম্বর ব্যাটালিয়ানের কোম্পানি কমান্ড্যান্টের।
তিনি বিএসএফ কর্তাকে জানান, মৃতের শ্বশুরবাড়ি সীমান্তের পাশেই এক গ্রামে। সেখানে তাঁর আত্মীয় স্বজনেরা চান উত্তম সাহার মৃতদেহকে শেষ শ্রদ্ধা জানিয়ে একবার চোখের দেখা দেখতে। হলই বা ভারত ও বাংলাদেশ দু’টি পৃথক দেশ। থাকলইবা আন্তর্জাতিক সীমান্তের বেড়া। পরিবারের মানবিক এই আবেদন ফেরাননি বিএসএফ জওয়ানেরা। তাঁরা যোগাযোগ করেন বাংলাদেশ বর্ডার গার্ডের কর্তাদের সঙ্গে। মানবিক কারণে না করেননি তাঁরাও।
এরপর দুই দেশের সীমান্ত বাহিনীর সম্মতিতে কালিকাপুরের বাড়ি থেকে খাটে করে দেহ নিয়ে যাওয়া হয় আটরশিয়া সীমান্তের নো ম্যানস ল্যান্ডে। বিএসএফ জওয়ানদের পাহারা ছিল সারাক্ষণ। বাংলাদেশের আত্মীয়দের সীমান্তে নিয়ে আসেন সে দেশের জওয়ানেরা। শোকে কান্নায় ভেঙে পড়েন বাংলাদেশি স্বজনেরা। আধ ঘণ্টার পরে যে যার দেশে ফিরে গেলেন বুকে শোক চেপে রেখেই। শেষ দর্শনের পরে মৃতের আত্মীয়রা দুই দেশের সীমান্ত রক্ষী বাহিনীর এই উদ্যোগের জন্য আন্তরিক কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে শুভেচ্ছা জানান।
বিএসএফের দক্ষিণবঙ্গের ডিআইজি ও জনসংযোগ আধিকারিক এ কে আর্য বলেন, ‘‘শুধু সীমান্ত পাহারা নয়, সীমান্তের মানুষজনের সুখ দুঃখের সাথী হয়ে মানবিক আচরণও অত্যন্ত জরুরি। এক্ষেত্রেও সেটা করতে পেরে আমরা খুশি।’’
এই ঘটনার পরে এলাকার বাসিন্দাদের মনেও নতুন করে বল এসেছে। আগে লালগোলা সীমান্ত ছিল চোরাচালানের এক রকম স্বর্গরাজ্য। কিন্তু পরে তাতে রাশ টানা হয়েছে। এখন পারস্পরিক সম্পর্ক ভাল হওয়ায় সীমান্তের বাসিন্দারা খুশি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy