—প্রতীকী ছবি।
বিজেপির নদিয়া উত্তর সাংগঠনিক জেলার পর্যবেক্ষক পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হল মুর্শিদাবাদের মাফুজা খাতুনকে। তাঁর পরিবর্তে নতুন পর্যবেক্ষক করা হল রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সঙ্ঘের (আরএসএস) ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত গোপাল সরকারকে। দলের অন্দরের একটি সূত্রের খবর, যে ভাবে দিন-দিন গোষ্ঠী কোন্দল বাড়ছে তাতে উদ্বিগ্ন রাজ্য নেতৃত্ব। সেই কারণেই সংগঠনের রাশ শক্ত হাতে ধরতে আরএসএস ঘনিষ্ঠ এই নেতাকে পর্যবেক্ষক করে নিয়ে আসা হল।
বিজেপি সূত্রে জানা গিয়েছে, এর আগেও একাধিক জেলার গোষ্ঠী কোন্দল থামাতে গোপালবাবুকে পর্যবেক্ষক করে পাঠানো হয়েছিল। তার ফলও নাকি মিলেছিল হাতেনাতে। এর আগে তাঁকে পুরুলিয়া, উত্তর ২৪ পরগনার বারাসত ও পূর্ব মেদিনীপুর জেলার পর্যবেক্ষক করা হয়েছে। জেলার এক নেতার কথায়, “আগের জেলাগুলিতে গোপালবাবু সফল হয়েছিলেন। এ বার নদিয়া একটা চ্যালেঞ্জ। কারণ সামনেই বিধানসভা ভোট। হাতে বেশি সময় নেই।”
বর্তমানে কলকাতায় থাকলেও গোপাল সরকার আদতে নদিয়ার লোক। তাঁদের বাড়ি ছিল তাহেরপুর এলাকায়। তাহেরপুরের নেতাজি হাইস্কুলে পড়া শেষ করে রানাঘাট কলেজ থেকে স্নাতক হয়েছেন। মাধ্যমিক পাশ করার পর থেকেই তিনি এবিভিপি-র সক্রিয় কর্মী। পরবর্তী কালে তিনি সক্রিয় ভাবে বিজেপি করতে থাকেন। ইতিমধ্যে তিনি কলকাতা উত্তর ‘শহরতলি’ সাংগঠনিক জেলার সভাপতি হয়েছেন দু’বার। ওই জেলায় যুবমোর্চার সভাপতিও ছিলেন। হাওড়া জেলার ‘পালক’ হিসাবেও কাজ করেছেন।
বর্তমানে বিজেপির শ্রমিক সংগঠন ভারতীয় জনতা মজদুর সেলের সর্বভারতীয় কার্যকরী সভাপতি। এর বাইরে গোপালবাবুর অন্যতম পরিচয়, তিনি সঙ্ঘের প্রথম বর্ষের প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত। অনেকেই মনে করছেন, তাঁকে পর্যবেক্ষক করে নিয়ে আসার পিছনে শুধু গোষ্ঠী কোন্দল সামলানোই নয়, ভোটের আগে সংগঠনের উপরে সঙ্ঘের নিয়ন্ত্রণ কায়েম করার উদ্দেশ্যও রয়েছে।
নদিয়া জেলায় বিজেপির অভ্যন্তরে কোন্দলের সংস্কৃতি দীর্ঘদিনের। এখন প্রাক্তন জেলা সভাপতি মহাদেব সরকারের সঙ্গে বর্তমান জেলা সভাপতি আশুতোষ পালের বিরোধ আর গোপন নেই। সম্প্রতি দলীয় কার্যালয়ের ভিতরেই আশুতোষকে শারীরিক ভাবে নিগ্রহ করার অভিযোগ ওঠে মহাদেব অনুগামীদের বিরুদ্ধে। দুই পক্ষে প্রকাশ্যে কৃষ্ণনগরের রাস্তায় মারপিটে জড়িয়ে পড়েছিল। ওই দিনই কৃষ্ণনগর শহরে উপস্থিত ছিলেন রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ। বিষয়টি নিশ্চিত ভাবেই ভাল চোখে দেখেননি দলের রাজ্য নেতৃত্ব। কিন্তু ভোটের আগে দলের অভ্যন্তের ভাঙনের পরিস্থিতি যাতে তৈরি না হয় তার জন্য কারও বিরুদ্ধেই কোনও পদক্ষেপ করা হয়নি বলে দাবি জেলা নেতাদের একটা অংশের।
বিজেপি নেতৃত্বের একাংশের অভিযোগ, এই ধরনের একের পর ঘটনা ঘটতে থাকলেও কোন্দল থামাতে ব্যর্থ হন রাজ্য কমিটির সহ-সভানেত্রী মাফুজা খাতুন। বরং তাঁকে আঁকড়ে ক্ষমতায় ফিরতে মরিয়া হয়ে ওঠেন নানান কারণে নেতৃত্ব থেকে দূরে সরে যাওয়া নেতাকর্মীরা। সব মিলিয়েই মাফুজাকে সরিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত বলে নেতাকর্মীদের একটা অংশের দাবি। বারবার চেষ্টা করেও ফোনে পাওয়া যায়নি মাফুজা খাতুনকে। সদ্য দায়িত্বপ্রাপ্ত গোপাল সরকার বলেন, “দলকে নির্বাচনমুখী করা এবং আলোচনার মাধ্যমে দলের সবাইকে এক ছাতার তলায় নিয়ে এসে তৃণমূলকে নিশ্চিহ্ন করাই হবে আমরা কাজ।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy