পুরবোর্ড গঠনের আগে ধুলিয়ানে পথে নামল বিজেপি, কংগ্রেস। দলত্যাগীদের বিশ্বাসঘাতক বলে শহরে লিফলেট বিলি করলেন বিজেপি নেতারা। রবিবার সন্ধ্যায় দলত্যাগীদের কুশপুতুলও পোড়ানো হয়। এ দিকে, কংগ্রেস সোমবার থেকে সামশেরগঞ্জ থানার সামনে অনির্দিষ্টকালের জন্য ধর্নায় বসার কথা ঘোষণা করেছে। তা জেনে থানার ২০০ মিটার এলাকা জুড়ে ১৪৪ ধারা জারি করেছে প্রশাসন। সব মিলিয়ে পুরবোর্ড গঠনকে কেন্দ্র করে ধুলিয়ানে নতুন করে অশান্তির আশঙ্কা দানা বাঁধছে।
এ বারের পুরভোটে ২১ সদস্যের ধুলিয়ান পুরসভায় তৃণমূল মাত্র ছ’টি আসনে পায়। কংগ্রেস ৮, বিজেপি ৪, সিপিএম ২ ও একটি আসনে নির্দল প্রার্থী জয়ী হন। কংগ্রেস যখন একক সংখ্যাগরিষ্ঠ দল হিসেবে পুরবোর্ড গঠনের তোড়জোড় শুরু করেছিল—ঠিক তখনই বিজেপির ৩, সিপিএমের ২ এবং নির্দল সদস্য তৃণমূলে যোগ দেন। ১২ জনের সমর্থনে ধুলিয়ানে তৃণমূল বোর্ডের দখল নিশ্চিত করে। গত বারের পুরভোটেও তৃণমূল একটিও আসনে না জিতে ধুলিয়ানে বোর্ডের দখল নিয়েছিল তৃণমূল।
এ দিন বিরোধী নেতারা তৃণমূলের দল ভাঙানোর রাজনীতিকে কার্যত তুলোধনা করেন। শাসক দলের প্রতি আক্রমণ প্রসঙ্গে তাঁরা রেয়াত করেননি দলবদলে তৃণমূলে যোগ দেওয়া কাউন্সিলরদের। বিজেপির জেলা মুখপাত্র সুভাষ মণ্ডল বলেন, ‘‘দলের ৩ কাউন্সিলরকে প্রলোভন দেখিয়ে শাসক দলে যোগ দিতে বাধ্য করা হয়েছে। দলীয় প্রতীকে জিতে দলত্যাগ ধুলিয়ানের মানুষের প্রতি বিশ্বাসঘাতকতা বই অন্য কিছু নয়।’’ কংগ্রেসের ব্লক সভাপতি আমিরুল ইসলামের দাবি, সমশেরগঞ্জ থানার পুলিশ এলাকার বিভিন্ন ঘটনায় দলের চার কাউন্সিলর সফর আলি, ইয়াসিন শেখ, হাসেন বিশ্বাস বাদশা ও মাজাহার হোসেন-সহ দলের একাধিক নেতা ও কর্মীকে মিথ্যে মামলায় জড়িয়ে দিতে চাইছে। পুরবোর্ড গঠনে তাঁরা যেন কোনও ভাবেই তৃণমূলের বাধা হয়ে না দাঁড়াতে পারেন, সে জন্যই পুলিশের এই বাড়তি তৎপরতা বলে কংগ্রেস নেতৃত্বের অভিযোগ।
পুলিশের পক্ষপাতিত্বের অভিযোগে আজ, সোমবার থেকে থানার সামনে লাগাতার অবস্থান বিক্ষোভের ডাক দিয়েছে কংগ্রেস। এ দিন সন্ধ্যায় ধুলিয়ান সি জে প্যাটেল মোড়ে বিক্ষোভ সভা করে কংগ্রেস। সেখানে ফরাক্কার কংগ্রেস বিধায়ক মইনুল হক বলেন, ‘‘তৃণমূল যত চেষ্টাই করুক মুর্শিদাবাদ থেকে কংগ্রেসকে কোনও ভবেই মুছে ফেলা যাবে না। তার প্রমাণ মিলেছে এ বারের পুরভোটেই।’’
তৃণমূলের ব্লক সভাপতি কাউসার আলির বক্তব্য, ধুলিয়ানের শান্তির পরিবেশ নষ্ট করতেই বিরোধীরা এ সব করছে। দলত্যাগী বিজেপির কাউন্সিলরদের অন্যতম সুবল সাহা ও প্রশান্ত সরকার বিজেপি নেতাদের অভিযোগ উড়িয়ে বলেন, ‘‘ধুলিয়ানের জলপ্রকল্প ও নিকাশি ব্যবস্থাকে বাস্তবায়িত করে মানুষের দুর্ভোগ কমাতে তৃণমূলে যোগ দিয়েছি।’’ তৃণমূল সূত্রে খবর, দুই দলত্যাগী বিজেপি কাউন্সিলরের কাউকে ধুলিয়ানের পুরপ্রধান করা হতে পারে। জঙ্গিপুরের মহকুমাশাসক প্রিয়াঙ্কা সিংলা জানান, আইন শৃঙ্খলা নিয়ে সমস্যা হতে পারে আশঙ্কা করেই সোমবার ধুলিয়ানে থানা চত্বরে ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে। পরিস্থিতি এখন নিয়ন্ত্রণে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy