—ছবি সংগৃহীত
জেল থেকে জামিনে ছাড়া পেয়ে আশরফ ঘরামি গ্রামে ঢুকতেই নতুন করে অশান্তি শুরু হল বেতবেড়িয়ায়।
সোমবার রাতে গ্রামে বোমাবাজি হয়, দু’রাউন্ড গুলিও চলে বলে গ্রামবাসীর দাবি। পুলিশ গেলে গ্রামের মহিলারা তাদের ঘিরে ধরে বিক্ষোভ দেখায়। তৃণমূল বিধায়ক রুকবানুর রহমানের অভিযোগ, ওই সময়ে পুলিশ মহিলাদের মারধরও করেছে। এই ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতেই মঙ্গলবার বিকেলে আশরফের বাড়িতে বোমা ফাটে। স্থানীয় একটি সূত্রের দাবি, আশরফের বাড়িতে বোমা বাঁধার সময় ফেটে এক জন আহত হয়েছে। পুলিশ আহতের সন্ধান না পেলেও এক জনকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করছে বলে চাপড়া থানা সূত্রের খবর। গোটা ঘটনা নিয়ে শাসক দলের বিধায়ক ও ব্লক সভাপতির মধ্যে চাপানউতোর শুরু হয়েছে।
বেতবেড়িয়া গ্রামে অশান্তির ইতিহাস দীর্ঘদিনের। ২০১৩ সালে এই অশান্তির জেরে স্কুল ভোটের দিন খুন হয়েছিলেন এক সিপিএম নেতা। ওই রাতেই প্রায় ৫০ জন সিপিএম কর্মীর ঘর পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছেল। গ্রামছাড়া হয়েছিল ১১৫টি সিপিএম পরিবার। সেই ঘটনায় নাম জড়িয়েছিল আশরফ ঘরামির। আশরফ তখন ছিলেন তৃণমূলের হৃদয়পুর অঞ্চল সভাপতি। তাঁর স্ত্রী ছিলেন পঞ্চায়েত প্রধান, বর্তমানে তিনি উপপ্রধান। আশরফের এতটাই দাপট ছিল যে তাঁর বিরুদ্ধে খুন-সহ একাধিক অভিযোগ থাকলেও পুলিশ এক সময়ে তাঁকে স্পর্শও করতে পারেনি। তিনি ছিলেন চাপড়ার তৎকালীন দাপুটে নেতা শুকদেব ব্রহ্মের অনুগামী। পরে শুকদেবের ক্ষমতা কমতে থাকায় আশরফের দাপটও কমতে থাকে। দলের ভিতরেই বিরোধী গোষ্ঠী তৈরি হতে থাকে। গত বছর পাশের গ্রাম ব্রহ্মনগরে এক তৃণমূল কর্মী খুনের ঘটনায় নাম জড়ালে পুলিশ আশরফকে গ্রেফতার করে। দিন কয়েক আগে তিনি জামিন ছাড়া পেয়ে শিবির বদল করে গ্রামে ঢোকেন এবং শুকদেব তথা বিধায়কের শিবির ছেড়ে ব্লক সভাপতি জেবের শেখের শিবিরে যোগ দেন।
ওই সময়েই আশরফের গ্রামে ঢোকা নিয়ে প্রবল আপত্তি জানায় গ্রামবাসীদের একটা বড় অংশ। মহিলারা মিছিলও বের করেন। সোমবার রাতে বোমাবাজি ও গুলি চালানোর ঘটনায় গ্রামে নতুন করে অশান্তির পরিস্থিতিটাই স্পষ্ট হচ্ছে। আর সেখানেই পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। গ্রামবাসীদের একাংশের দাবি, সোমবার রাতে বেতবেড়িয়ার পাশে ফুলবাড়ি গ্রামের দিক থেকে বেশ কিছু লোক এসে বোমাবাজি করে। গুলি চালায়। খবর পেয়ে পুলিশ গেলে তাদের ঘিরে ধরে বিক্ষোভ দেখান গ্রামের মহিলারা। চলে আসেন বিধায়ক রুকবানুর রহমান। তাঁর অভিযোগ, “আশরফ নতুন করে গ্রামটাকে অশান্ত করতে চাইছে। ওর বাড়িতে সমাজবিরোধীরা আশ্রয় নিয়েছে। তারাই সোমবার রাতে বোমাবাজি করেছে।” তাঁর অভিযোগ, “মঙ্গলবার আশরফের বাড়িতে বোমা বাঁধা হচ্ছিল। সেটা ফেটে যায়।”
ব্লক সভাপতি জেবের শেখের দাবি, “আশরফ বদলে গিয়েছে। সে শান্তিতে বাস করতে চায়। কিন্তু কিছু সমাজবিরোধী তাকে গ্রামছাড়া করতে জন্য অশান্তি করছে।” কৃষ্ণনগর পুলিশ জেলার সুপার বিশ্বজিৎ ঘোষ বলেন, “পুলিশ কাউকে মারধর করেনি। এই অভিযোগ ঠিক না। তবে ওই গ্রামে যারাই অশান্তি পাকানোর চেষ্টা করবে তাদের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ
করা হবে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy