উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার প্রস্তুতি। ডোমকলের একটি পরীক্ষাকেন্দ্রে। ছবি: সাফিউল্লা ইসলাম
সদ্য মাধ্যমিক ও মাদ্রাসা পরীক্ষা শেষ হয়েছে। তাতে দেখা গিয়েছে গত বছরের তুলনায় কিছুটা হলেও ওই দু’টি পরীক্ষায় মোট পরীক্ষার্থী বেড়েছে। তবে এ বারে মুর্শিদাবাদে গত বারের তুলনায় উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী কমে গিয়েছে। জেলা শিক্ষা দফতর সূত্রের খবর, গত বছরের তুলনায় প্রায় ৬১০০ জন উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী কমে যাওয়ায় প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। যেখানে ড্রপ আউট ঠেকাতে রাজ্য সরকার, শিক্ষা দফতর একাধিক কর্মসূচি নিয়েছে। সেখানে কিভাবে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী কমে যায়? শিক্ষা দফতরের কেউ কেউ বলছেন, করোনাকালে কিছুটা ড্রপ আউটের কারণে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী কম হতে পারে বলে অনুমান করা হচ্ছে। আজ থেকে রাজ্য জুড়ে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা শুরু হচ্ছে। সেই পরীক্ষা নির্বিঘ্নে করতে জেলা শিক্ষা দফতর এবং জেলা প্রশাসন থেকে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করা হয়েছে।
জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শক (মাধ্যমিক) অমর কুমার শীল বলেন, ‘‘উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার জন্যে যাবতীয় প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। তবে পরীক্ষার্থী কম কেন সেটা জানি না।’’ উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার পরিচালনার জন্য উচ্চ মাধ্যমিক কাউন্সিলের যুগ্ম আহ্বায়ক আশরাফ রাজবী বলেন, ‘‘সম্ভবত করোনাকালে ড্রপ আউটের কারণে মোট পরীক্ষার্থী হতে পারে। তবে এ বারেও ছাত্রী পরীক্ষার্থী বেশি রয়েছে।’’
তবে মাদ্রাসা এবং মাধ্যমিক পরীক্ষার মতো উচ্চ মাধ্যমিকেও এ বারেও ছাত্রী পরীক্ষার্থী বেশি রয়েছে। ছাত্র পরীক্ষার্থীর তুলনায় জেলায় ১২ হাজার ২২১ জন ছাত্রী পরীক্ষার্থী বেশি রয়েছে। শিক্ষা দফতরের কর্তারা জানান, বিগত কয়েক বছর ধরেই মাধ্যমিক, মাদ্রাসা এবং উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় মুর্শিদাবাদে ছাত্রদের তুলনায় ছাত্রী পরীক্ষার্থীর সংখ্যা বেশি হচ্ছে। এ বারেও সেই ধারা অব্যাহত রয়েছে। শিক্ষা দফতরের কর্তারা জানান, কন্যাশ্রী, সবুজ সাথী সহ নানা প্রকল্প নিয়েছে রাজ্য সরকার। যার যেরে পড়াশোনায় ছাত্রীদের আগ্রহ বেড়েছে। সেই সঙ্গে বিগত কয়েক বছর ধরে ছাত্রীরা যাতে পড়াশোনায় এগিয়ে আসে সেই চেষ্টা চালাচ্ছে শিক্ষা দফতর। পরিবারেরও আগ্রহ বেড়েছে বাড়ির মেয়েদের বিদ্যালয়মুখী করার ক্ষেত্রে। যার ফল হাতে হাতে পেয়েছে মুর্শিদাবাদ জেলা।
তবে লালগোলার এমএন একাডেমির সহ শিক্ষক জাহাঙ্গীর মিঞা বলছেন, ‘‘ছাত্রীরা পড়াশোনায় এগিয়ে আসায়, ছাত্রী পরীক্ষার্থী সংখ্যা বেশি হওয়া একটি ভাল দিক। তবে ছাত্ররা কেন পিছিয়ে যাচ্ছে সেটার সমীক্ষা করা দরকার। তাদেরও এগিয়ে আনা দরকার।’’
ডোমকলের এক শিক্ষক বলছেন, ‘‘মাধ্যমিকের পর থেকেই ছাত্রদের একাংশকে দারিদ্রতার কারণে আয়ের পথে নেমে যেতে হচ্ছে। যার জেরে মাঝপথে পড়াশোনা ছেড়ে অনেকেই পরিযায়ী শ্রমিকের কাজে ভিন রাজ্যে পাড়ি দিচ্ছে, আবার অনেকেই স্থানীয় স্তরে কাজে লেগে যাচ্ছে। ফলে ছাত্ররা পিছিয়ে যাচ্ছে। সেটা আটকাতে পদক্ষেপ করা উচিত।’’ জেলা শিক্ষা দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, গত বছর ৭১ হাজার ৬৭৯ জন উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা দিয়েছিল। এ বছর উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা দিচ্ছে ৬৫ হাজার ৫৭৯ জন। অর্থাৎ গত বারের তুলনায় ৬১০০ জন উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী কম রয়েছে। এ বছর ছাত্র পরীক্ষার্থী রয়েছে ২৬ হাজার ৬৭৯ জন এবং ছাত্রী পরীক্ষার্থী রয়েছে ৩৮ হাজার ৯০০ জন। অর্থাৎ ছাত্র পরীক্ষার্থীর তুলনায় ১২ হাজার ২২১ জন ছাত্রী বেশি পরীক্ষার্থী রয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy