Advertisement
২৩ নভেম্বর ২০২৪

সুনসান জেএনএম, নিধিরাম কেবল জরুরি বিভাগই

জুনিয়র ডাক্তারদের আন্দোলনের জেরে রবিবার, ষষ্ঠ দিনও কার্যত অচল ছিল রাজ্যের সব মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল। কল্যাণীর হাসপাতালও তার ব্যতিক্রম নয়।

চালু শুধু জরুরি বিভাগ। রবিবার। —নিজস্ব চিত্র

চালু শুধু জরুরি বিভাগ। রবিবার। —নিজস্ব চিত্র

সৌমিত্র সিকদার
কল্যাণী শেষ আপডেট: ১৭ জুন ২০১৯ ০০:৩৪
Share: Save:

রাত থেকে পেটে অসহ্য যন্ত্রণা। সঙ্গে পায়খানা-বমি। শনিবার রাতভর চোখের পাতা এক করতে পারেননি উত্তর ২৪ পরগনার গোপালনগর থানার ভবানীপুরের বাসিন্দা, বছর ছাপ্পান্নের হিরন্ময় সরকার।

কোনও রকমে রাত কাটে। রবিবার ভোরের আলো ফুটতেই কল্যাণীর জওহরলাল নেহরু মেমোরিয়াল হাসপাতালে তাঁকে নিয়ে আসেন পরিজনেরা। জরুরি বিভাগে এক চিকিৎসক তাঁকে দেখে ওষুধ দিয়ে বাড়ি ফিরিয়ে নিয়ে যেতে বলেন।

জরুরি বিভাগের সামনেই কাঁচুমাচু মুখে দাঁড়িয়েছিলেন হিরন্ময়ের ছেলে বেচারাম সরকার। তাঁর আক্ষেপ, “ভেবেছিলাম, যদি দু’এক দিন বাবাকে হাসপাতালে ভর্তি রেখে সুস্থ করে তোলা যায়। কিন্তু ডাক্তারবাবু দুটো ইঞ্জেকশন দিয়ে বাড়ি নিয়ে যেতে বললেন। গাড়ি ডাকছি। কিন্তু ওঁরা যে ভাবে তাড়া দিতে শুরু করেছেন, তাতে আর বেশিক্ষণ জরুরি বিভাগের শয্যায় বাবাকে রাখা যাবে না। বাড়ি নিয়ে যাওয়া ছাড়া পথ নেই। আমাদের এত টাকা নেই যে, বাবাকে বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যাব।”

জুনিয়র ডাক্তারদের আন্দোলনের জেরে রবিবার, ষষ্ঠ দিনও কার্যত অচল ছিল রাজ্যের সব মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল। কল্যাণীর হাসপাতালও তার ব্যতিক্রম নয়। ইতিমধ্যে গোটা হাসপাতাল প্রায় ফাঁকা হয়ে গিয়েছে। ওয়ার্ড থেকে চত্বর শুনশান। দিনভর কয়েক জন নিরাপত্তারক্ষী মূল ফটক থেকে এ দিক ও দিক ঘোরাঘুরি করেছেন। খোলা ছিল শুধু জরুরি বিভাগে। রোগীরা এসে সোজা চলে গিয়েছেন সেখানে। প্রায় কাউকেই ভর্তি নেওয়া হয়নি।

জরুরি বিভাগের সামনে বসার জায়ৈগায় ছড়িয়ে-ছিটিয়ে বসেছিলেন গুটি কয়েক লোকজন। হরিণঘাটা থানার মোল্লাবেলিয়ার বাসিন্দা, বছর পঞ্চাশের সীতা মণ্ডল শুয়ে ছিলেন সেখানেই। তাঁর আত্মীয় সুমিতা মণ্ডল বলেন, “পরিস্থিতি খারাপ হওয়ায় কাকিশাশুড়িকে হাসপাতালে নিয়ে এসেছি। কিন্তু ভর্তি নেওয়া হল না। ডাক্তারবাবু কয়েকটি ওষুধ দিয়ে এবং কয়েকটি ওষুধ কিনতে বলে বাড়ি নিয়ে যেতে বললেন।”

জরুরি বিভাগে এক চিকিৎসক আর কয়েক জন নার্স রোগীদের সামলাচ্ছিলেন। চিকিৎসক জানান, বেশির ভাগ ডাক্তার প্রায় না থাকায় রোগী নেওয়া যাচ্ছে না। তাই খুব খারাপ অবস্থা না হলে ভর্তি করা হচ্ছে না কাউকে। আজ, সোমবার পরিস্থিতি আরও খারাপের দিকে যেতে পারে বলে তাঁদের আশঙ্কা।

জেএনএম হাসপাতালের সুপার অভিজিৎ মুখোপাধ্যায় বলেন, “বেশ কিছু চিকিৎসক ইস্তফা দিয়েছেন। কয়েক জন সিনিয়র চিকিৎসক এবং আমি নিজেও রোগী দেখছি। যতটা সম্ভব পরিষেবা দেওয়ার চেষ্টা হচ্ছে।”

অন্য বিষয়গুলি:

Kalyan JNM Hospital Bengal Doctors Strike
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy