Advertisement
২৪ নভেম্বর ২০২৪

ভোর রাতে ব্যাঙ্ক ছাড়ছি, আকাশে তখনও চাঁদ

মোবাইলটা বেজে উঠলেই চমকে উঠি। মনে হয় এই বুঝি সহোদর কোনও ব্যাঙ্ক ম্যানেজার টাকার জন্য কাতর অনুরোধ করছেন।

হেড ক্যাশিয়ার ইউনাইটেড ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া (কৃষ্ণনগর শাখা)

হেড ক্যাশিয়ার ইউনাইটেড ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া (কৃষ্ণনগর শাখা)

আশিস চক্রবর্তী
শেষ আপডেট: ০৯ ডিসেম্বর ২০১৬ ০১:৫২
Share: Save:

মোবাইলটা বেজে উঠলেই চমকে উঠি। মনে হয় এই বুঝি সহোদর কোনও ব্যাঙ্ক ম্যানেজার টাকার জন্য কাতর অনুরোধ করছেন।

সত্যি বলছি— বড় আতঙ্কে রয়েছি! এক দিকে বাড়িতে টাকা নেই, আর ব্যাঙ্কে পা দিলেও সেই এক কাঁদুনি, ভাল লাগছে না আর।

জেলায়, আমাদের ব্যাঙ্কের ২৯টি শাখা রয়েছে, পাশাপাশি সাতটি লিঙ্ক ব্যঙ্কের টাকাও সরবরাহ করতে হয় আমাকেই। এই মুহুর্তে আমাদের কম করে আট কোটি টাকার প্রয়োজন। কিন্তু কোনও ভাবেই তিন কোটি বেশি ব্যবস্থা করতে পারছি না। কী যে জ্বালা, কেই বা বুঝবেন!

নিজেদের শাখাতেই কাউন্টারে ঘন্টার পর ঘন্টা মানুষের ভিড়। বাইরে রোদ, বৃষ্টিকে উপেক্ষা করে হাজার মানুষের লম্বা লাইন। অথচ আমার অসহায় হয়ে দেখা ছাড়া করার কিছু নেই।

অথচ মানুষ তা বুঝছেন না। দিনভর ওঁদের মুখ ঝামটা খেয়ে চলেছি। সকালে অফিসে ঢোকার পরে একটু গুছিয়ে নিয়ে যখন মুখ তুলি ততক্ষণে দুপুর গড়িয়ে গেছে। পেট চোঁ চোঁ করছে। কিন্তু সামনেপ লাইন এড়িয়ে খেতে যাব, মানে ফের অন্য ঝক্কি। সাঁঝ গড়িয়ে গেলেও অনেক দিন খাবার জোটে না।

একটু পরের দিকে, বিভিন্ন ব্যঙ্ক থেকে পাঁচশো-হাজার টাকার নোট ঢোকে। সেগুলো সংগ্রহ করে তাকে তাকে গুছিয়ে যখন ফাঁকা হই তখন রাত অনেক। মাথাটা ঝিমঝিম করে। টনটন করে পা দুটো। কাজ শেষ হয় না। হিসাবে বসতে হয়। সব কিছু সেরে যখন রিজার্ভ ব্যঙ্কের কাছে দিনের হিসাব পাঠাই তখন রাত গভীর হয়েছে।

কোন কোন দিন ব্যঙ্ক থেকে বের হতেই ভোর চারটে-সাড়ে চারটে বেজে গিয়েছে। তবে সব চাইতে আতঙ্কের বিষয় হল সেই সব করুণ মুখের সামনে দাঁড়ানো যারা বয়সের ভারে নুয়ো পড়ছেন। লাইনে দাঁড়িয়ে আছেন তিন চার ঘন্টা। অথচ তাঁদের হাতে সামান্য ক’টা টাকাও তুলে দিতে পারছি না।

অন্য বিষয়গুলি:

Demonetisation
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy