Advertisement
০৯ নভেম্বর ২০২৪

কী ভাবে চলবে সংসার, ভেবেই আকুল সায়রা

ভূস্বর্গে জঙ্গি হানায় নিহত হয়েছেন বাহালনগরের পাঁচ জন শ্রমিক। কেমন আছে তাঁদের পরিবার, খোঁজ নিল আনন্দবাজার।

ছবি: অর্কপ্রভ চট্টোপাধ্যায়

ছবি: অর্কপ্রভ চট্টোপাধ্যায়

বিমান হাজরা
বাহালনগর শেষ আপডেট: ১১ নভেম্বর ২০১৯ ০১:৩১
Share: Save:

মুরসালিম শেখ দিনমজুরি করতেন। নুন আনতে পান্তা ফুরোনো সংসারে কয়েকটি ছাগল পুষে বাড়তি আয়ের চেষ্টা করতেন তাঁর স্ত্রী সায়রা বিবিও। এ ভাবেই টেনেটুনে চলে যাচ্ছিল বাহালনগরের মুরসালিমের সংসার।

সায়রা বলছেন, ‘‘শ্বশুরের চিকিৎসা, দুই ছেলের পড়াশোনার সঙ্গে সংসারের খরচটাও তো কম নয়। বাড়ি তৈরির সময়ের দেনাটাও এখনও মেটেনি। স্বামীর দিনমজুরির রোজগারে আর চলছিল না। তাই কাশ্মীরে পাড়িয়ে দিয়েছিল লোকটা। প্রায় ১২ বছর ধরে কাশ্মীরে যাতায়াত ছিল ওর। কখনও মনে হয়নি এমনটাও ঘটতে পারে। অথচ সেটাই ঘটল।’’

পরিবারের কেউ জানেন না কাশ্মীর কত দূরে, আপেল বাগানটাই বা কেমন? তাঁরা শুধু জানেন, জঙ্গিরা গুলি করে মেরেছে মুরসালিমকে। গ্রামের আরও চার জনের সঙ্গে বাড়ি ফিরেছে মুরসালিমের নিথর দেহ। মুরসালিমের বাবা আমির হোসেনের বয়স ৭৫ বছর। ৬৬ পেরিয়ে মা মাসুদা বিবিও তেমন চলতে ফিরতে পারেন না। দুই ছেলেমেয়ের বড় সোহানা অষ্টম শ্রেণির ছাত্রী। ছেলে জহিদুল চতুর্থ শ্রেণির পড়ুয়া।

মাসুদা বিবি বলছেন, “আমার ছেলে তো কখনও কারও ক্ষতি করেনি। তা হলে ছেলেকে এ ভাবে গুলি করে মারল কেন ওরা? ওদের কী লাভ হল আমাদের এ ভাবে পথে বসিয়ে?”

পড়শি গ্রামের এক মাদ্রাসার প্রধান শিক্ষক আব্দুল হামিদ বলছেন, “জানি মৃত মানুষগুলো আর ফিরবে না। কিন্তু তাঁদের পরিবারের কী হবে ? কে মারল, কেন মারল। কোন আক্রোশে মরতে হল নিরীহ শ্রমিকদের তা নিয়ে উচ্চ পর্যায়ের তদন্তের ব্যাপারেও টুঁ শব্দ নেই কারও। কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে ক্ষতিপূরণের আশ্বাসও মেলেনি।”

বৃদ্ধ আমির হোসেন বলছেন, ‘‘ছেলের দেহের সামনে দাঁড়িয়ে পাশে থাকার আশ্বাস দিয়েছেন তো অনেকেই। কিন্তু তার পরে পেরিয়ে গেল দু’সপ্তাহ। আমরা কেমন আছি, সে খোঁজ নিতে আর কেউ আসেনি!

অন্য বিষয়গুলি:

Bahalnagar Labbourer died in Kashmir
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE