Advertisement
E-Paper

বাংলায় টার্গেট কারা? ধৃত বাংলাদেশি জঙ্গিদের ‘সুপ্ত আগ্নেয়গিরি’ বলল অসম পুলিশ, কী কী তথ্য মিলল?

কেরল থেকে ধৃত জঙ্গি আব্দুল করিম মণ্ডলকে জিজ্ঞাসাবাদ করে মুর্শিদাবাদের মিনারুল শেখ এবং মোহাম্মদ আব্বাস সম্পর্কে তথ্য পায় অসম পুলিশের এসটিএফ। কী কী লক্ষ্য ছিল জঙ্গিদের?

জঙ্গিদের ধরপাকড়ের জন্য দেশের তিন রাজ্যের মোট ১৪ জায়গায় একই সঙ্গে শুরু হয় ‘অপারেশন প্রঘাত।’

জঙ্গিদের ধরপাকড়ের জন্য দেশের তিন রাজ্যের মোট ১৪ জায়গায় একই সঙ্গে শুরু হয় ‘অপারেশন প্রঘাত।’ —প্রতিনিধিত্বমূলক চিত্র।

প্রণয় ঘোষ

শেষ আপডেট: ২০ ডিসেম্বর ২০২৪ ২০:০৯
Share
Save

জঙ্গি সংগঠন আল কায়দার ভারত উপমহাদেশীয় শাখা আনসার-উল্লাহ বাংলা টিমটি ভারত জুড়ে নাশকতার ছক কষছে। গোপন সূত্রে খবর পেয়ে গত ১০ ডিসেম্বর ‘অপারেশন প্রঘাত’ শুরু করে অসম পুলিশের স্পেশ্যাল টাস্ক ফোর্স (এসটিএফ)। গত ১৭ এবং ১৮ ডিসেম্বর, দু’দিনের অভিযানে অসম, কেরল এবং পশ্চিমবঙ্গ থেকে ৮ জঙ্গিকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বাংলার মুর্শিদাবাদ থেকে ধৃত দুই সন্দেহভাজন। দেশবিরোধী কার্যকলাপের প্রশ্নে ধৃতদের ‘সুপ্ত আগ্নেয়গিরির মতো ভয়ানক’ বলে বর্ণনা করেছেন অসম পুলিশের স্পেশ্যাল ডিজি হরমিত সিংহ। বস্তুত, ধৃতদের কাছ থেকে মিলেছে বিভিন্ন নিষিদ্ধ বই, উস্কানিমূলক নথিপত্র। পাওয়া গিয়েছে, বিভিন্ন জঙ্গি নেতার বক্তব্য সম্বলিত পেন ড্রাইভ। ধৃতদের মোবাইলগুলিও বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে।

সংশ্লিষ্ট অপারেশন নিয়ে অসম পুলিশের বিশেষ তদন্তকারী দলের একটি সূত্র জানাচ্ছে, ভারতবিরোধী জিহাদি সংগঠনের একাধিক মডিউলের প্রধান পরামর্শদাতাদের গ্রেফতার করতে পশ্চিমবঙ্গ পুলিশের এসটিএফের সাহায্য চাওয়া হয়। দেশের তিনটি রাজ্যের মোট ১৪ জায়গায় একই সঙ্গে শুরু হয়েছিল ‘অপারেশন প্রঘাত’। গত ১০ ডিসেম্বর অসম পুলিশের এসটিএফ সূত্র মারফত খবর পায়, নাশকতামূলক কার্যকলাপের উদ্দেশ্যে বাংলাদেশ থেকে ভারতে ঢুকেছে বেশ কিছু জঙ্গি। তার পর টানা ৪৮ ঘণ্টার অভিযানে পুলিশের জালে ৮ জঙ্গি ধরা পড়ে। পুলিশ সূত্রে আরও খবর, আনসার-উল্লাহের বাংলা শাখার ‘প্রধান’ জসিমউদ্দিন রহমানির সহযোগী মহম্মদ ফারহান ইশরাকের নির্দেশে বাংলাদেশ থেকে ভারতে ঢোকে একটি দল। ওই দলের সদস্যদের মধ্যে অন্যতম ছিলেন মহম্মদ শাদ রদি। ওই অভিযুক্তের বাড়ি বাংলাদেশের রাজশাহি এলাকায়। তাঁর কাছ থেকে বাংলাদেশের পরিচয়পত্র-সহ বেশ কিছু কাগজপত্র পেয়েছে অসম এসটিএফ।

কেরল থেকে ধৃত জঙ্গি আব্দুল করিম মণ্ডলকে জিজ্ঞাসাবাদ করে মুর্শিদাবাদের মিনারুল শেখ এবং মোহাম্মদ আব্বাস সম্পর্কে তথ্য পায় অসম পুলিশের এসটিএফ। গত ১৮ ডিসেম্বর, বুধবার দুপুরে পশ্চিমবঙ্গ পুলিশের এসটিএফের প্রধান বিনীত গোয়েলকে বিষয়টি সম্পর্কে অবগত করা হয়। তার পর গোপনীয়তার সঙ্গে গত বুধবারই বিকেল থেকে বিশেষ নজরদারি শুরু করে পশ্চিমবঙ্গ পুলিশ। গ্রেফতার করা দু’জনকে। ধৃতদের মধ্যে আব্বাসের বাড়ি মুর্শিদাবাদের নিশ্চিন্তপুরে। মিনারুল থাকত হরিহরপাড়ায়। বুধবার মধ্যরাত থেকে অসম এবং পশ্চিমবঙ্গ পুলিশের স্পেশ্যাল টাস্ক ফোর্স ও মুর্শিদাবাদ জেলা পুলিশের যৌথ অভিযান চলে মুর্শিদাবাদের ওই দুই ঠিকানায়। রাত ১২টা থেকে ভোর ৪টে পর্যন্ত অপারেশন চলে। জানা গিয়েছে, ধৃতেরা পরিবারের মহিলা সদস্যদের এগিয়ে দিয়ে তদন্তকারীদের বাধার মুখে ফেলতে চেয়েছিল। কিন্তু তাদের সেই ছক কাজে আসেনি। ভোর সাড়ে ৪টে নাগাদ ধৃতদের নিয়ে অসমের উদ্দেশে রওনা দেয় সে রাজ্যের এসটিএফ। ধৃতদের কাছ থেকে বিভিন্ন মৌলবাদী সংগঠনের প্রচার পুস্তিকা, উস্কানিমূলক বক্তব্য সম্বলিত একাধিক পেনড্রাইভ, বিদেশি সিম কার্ড, ‘সন্দেহজনক’ মোবাইল অ্যাপ্লিকেশনের খোঁজ মিলেছে। বাংলাদেশ থেকে প্রকাশ হওয়া একাধিক জঙ্গি নেতার বক্তব্য সম্মিলিত বইও পাওয়া গিয়েছে। চারটি পেনড্রাইভে জঙ্গি সংগঠনের বিভিন্ন সদস্যদের ডেটাবেস বাজেয়াপ্ত করেছে অসম পুলিশের এসটিএফ।

পুলিশের চোখে ধুলো দিতে নানা ভাবে থাকত জঙ্গিরা। কেউ দিনমজুরের কাজ নিয়েছিল, কেউ জলের পাম্পের কাজ শিখে টুকটাক কাজ করত। ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তের নদিয়া এবং মুর্শিদাবাদ সীমান্ত জুড়ে পাক জঙ্গি সংগঠনের বাংলাদেশি শাখার ‘স্লিপার সেল’-এর সদস্যদের নিয়ে অসম পুলিশের স্পেশ্যাল ডিজি হরমিত বলেন, ‘‘এরা সুপ্ত আগ্নেয়গিরির মতো ছড়িয়ে পড়ছে। যে কোনও সময়ে বড় রকমের নাশকতা ঘটানোর ছক ছিল এদের।’’

ধৃত জঙ্গিদের জিজ্ঞাসাবাদ করে কি তথ্য পাওয়া গেল? ‘অপারেশন প্রঘাত’-এর প্রধান পার্থসারথি মহন্ত বলেন, ‘‘মুর্শিদাবাদের ধর্মীয় সংগঠনের একাধিক নেতাকে খুনের পরিকল্পনা করেছিল ধৃতেরা। শদ রবি নামের লোকটি জঙ্গি সংগঠনের নতুন সদস্যদের কাছে অত্যাধুনিক আগ্নেয়াস্ত্র পৌঁছে দেওয়ার চেষ্টা করছিল। প্রাথমিক ভাবে মনে করা হচ্ছে পশ্চিমবঙ্গের বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী এলাকায় বড় ধরনের নাশকতার ছক ছিল এদের। আরও জিজ্ঞাসাবাদ চলছে।’’

শুক্রবার পশ্চিমবঙ্গ পুলিশের এডিজি (দক্ষিণবঙ্গ) সুপ্রতিম সরকার জানান, ভারতবিরোধী জঙ্গি সংগঠনের স্থানীয় মডিউল হিসাবে কাজ করছিল মুর্শিদাবাদ থেকে ধৃত দুই ব্যক্তি। তাঁর কথায়, ‘‘ওদের ব্যাপারে আমাদের (রাজ্য) গোয়েন্দারাও তথ্য সংগ্রহের কাজ করছিলেন। অসম পুলিশের সঙ্গে যৌথ অভিযানে আমরা দু’জনকে গ্রেফতার করেছি। অসম পুলিশের এসটিএফ তাদের নিয়ে গিয়েছে। সেখানে আমাদের আধিকারিকেরা গিয়েও জিজ্ঞাসাবাদ করছেন।’’

Anti Terror Operation Assam Police West Bengal Police arrest Terrorists

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

এটি একটি প্রিন্ট আর্টিক্‌ল…

  • এমন অনেক খবরই এখন আপনার হাতের মুঠোয়

  • সঙ্গে রোজ পান আনন্দবাজার পত্রিকার নতুন ই-পেপার পড়ার সুযোগ

  • ই-পেপারের খবর এখন শুধুই ছবিতে নয়, টেক্সটেও

প্ল্যান সিলেক্ট করুন

মেয়াদ শেষে নতুন দামে আপনাকে নতুন করে গ্রাহক হতে হবে

Best Value
এক বছরে

৫১৪৮

১৯৯৯

এক বছর পূর্ণ হওয়ার পর আপনাকে আবার সাবস্ক্রিপশন কিনতে হবে। শর্তাবলী প্রযোজ্য।
*মান্থলি প্ল্যান সাপেক্ষে
এক মাসে

৪২৯

১৬৯

এক মাস পূর্ণ হওয়ার পর আপনাকে আবার সাবস্ক্রিপশন কিনতে হবে। শর্তাবলী প্রযোজ্য।