আগে ‘টিআই প্যারেড’ করানো না থাকলেও আদালত কক্ষে শনাক্তকরণ গ্রহণযোগ্য বলে দাবি করলেন সরকার পক্ষের আইনজীবী অশোক মুখোপাধ্যায়। ঘুঘড়াগাছির অপর্ণা বাগ হত্যা মামলার সওয়াল-জবাবের শেষ দিন, শনিবার সুপ্রিম কোর্টের একটি মামলার নজির উল্লেখ করে এমনটাই দাবি করেন তিনি।
বিচারপক্রিয়া চলাকালীন অপর্ণা বাগের দুই মেয়েকে আদালতে সাক্ষী হিসেবে হাজির করিয়ে আসামিদের শনাক্তকরণে আপত্তি জানিয়েছিলেন আসামি পক্ষের আইনজীবীরা। তাঁদের বক্তব্য ছিল, পুলিশ ‘টিআই প্যারেড’ করিয়ে যে ভাবে আসামি শনাক্ত করায় তা না হয়ে থাকলে আদালতে শনাক্তকরণ গ্রাহ্য নয়। সুপ্রিম কোর্টের মামলার নজির উল্লেখ করে সরকারি কৌঁসুলি পাল্টা দাবি করেন, সাক্ষীর পক্ষে যদি আসামিদের চেনা বা দেখার সময়-সুযোগ থাকে তা হলে আদালত কক্ষেও শনাক্তকরণ গ্রাহ্য। এই ক্ষেত্রে সেই সুযোগ ও সময় ছিল।
আসামি পক্ষের আইনজীবীরা দাবি করেছিলেন, পুলিশের তৈরি করা ‘স্কেচম্যাপ’ অসম্পুর্ণ। তাতে ঘটনাস্থল স্পষ্ট হয় না। অশোকবাবু বলেন, এমন কোনও সাক্ষ্যপ্রমাণ মেলেনি যে মৃতদেহ পুলিশের স্কেচম্যাপ থেকে বহু দূরে পড়েছিল। ফের সুপ্রিম কোর্টের মামলার আর একটি নজির উল্লেখ করে তিনি দাবি করেন, পারিপার্শ্বিক সমস্ত কিছু বিচার করে বা উদ্ধার হওয়া ব্যবহৃত জিনিসের অবশিষ্টাংশ এবং প্রত্যক্ষদর্শীর বর্ণনা থেকেও ঘটনাস্থল চিহ্নিত করা সম্ভব।
বিচার চলাকালীন আদালতের অুনমতি ছাড়াই তদন্ত চালিয়ে অপর্ণা বাগের দুই মেয়েকে সাক্ষী হিসাবে হাজির করায় আপত্তি জানিয়েছিলেন আসামি পক্ষের আইনজীবীরা। এ দিন অশোকবাবু বলেন, আসামি পক্ষ সেই সময়ে কোনও আপত্তি জানায়নি এবং তাদের সাক্ষ্য নিয়েছিল। অর্থাৎ ধরে নেওয়া যায়, তারা ওই দু’জনকে সাক্ষী হিসেবে গ্রহণ করেছিল।
আসামি পক্ষের আইনজীবী বিধান সিকদার ও কাজল ঘোষ অবশ্য পাল্টা দাবি করেন যে, তাঁরা সেই সময়েই ওই দু’জনকে সাক্ষী করার বিষয়ে বিচারকের কাছে লিখিত আপত্তি জানিয়েছিলেন। কিন্তু বিচারপতি তা গ্রাহ্য করেননি। সরকারি আইনজীবীর উল্লিখিত সুপ্রিম কোর্টের মামলার নজির, প্রেক্ষিত আলাদা হওয়ায় এই ক্ষেত্রে প্রযোজ্য নয় বলেও তাঁরা দাবি করেন।
২০১৪ সালের ১৪ নভেম্বর জমি রক্ষা করতে গিয়ে দুষ্কৃতীদের গুলিতে খুন হন কৃষ্ণগঞ্জের ঘুঘড়াগাছির বাসিন্দা অপর্ণা বাগ। মূল অভিযুক্ত, তৃণমূলের সক্রিয় কর্মী লঙ্কেশ্বর ঘোষ ওরফে লঙ্কা-সহ ১১ জন গ্রেফতার হন। গত বছর ২ ফেব্রুয়ারি কৃষ্ণনগর আদালতের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা বিচারক (তৃতীয়) পার্থসারথী মুখোপাধ্যায় সকলেরই ফাঁসির সাজা ঘোষণা করেন। কিন্তু ফৌজদারি কার্যবিধির ৩১৩ ধারা অনুযায়ী হাইকোর্ট আসামিদের বক্তব্য শোনা থেকে গোটা প্রক্রিয়া ফের শুরু করে পুনরায় রায়দানের নির্দেশ দেয়। অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা (তৃতীয়) আদালতের বিচারক মধুমিতা রায়ের এজলাসে তারই সওয়াল জবাব শেষ হল। ১৪ জুলাই রায় ঘোযণার দিন দিন ধার্য করেছে আদালত।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy