এই ভাবেই তোলা আদায় চলছে। কল্যাণীতে, মঙ্গলবার। নিজস্ব চিত্র।
দুই জেলার সংযোগকারী সেতু ঈশ্বরগুপ্ত। ওই সেতুই নদিয়া ও হুগলির সীমানা ভাগ করে দিয়েছে। সেতুর এক পাশে রয়েছে কল্যাণী-ব্যারাকপুর এক্সপ্রেসওয়ে। হুগলি থেকে ঈশ্বরগুপ্ত সেতু পেরোতে গেলেই ইমারতি সামগ্রীর ছোট গাড়ি থেকে এক সিভিক ভলান্টিয়ার এবং তাঁর সাঙ্গপাঙ্গরা তোলা তোলেন বলে অনেক দিনের অভিযোগ গাড়ির মালিকদের।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, সেখানে রাস্তার ধারে ছোট্ট একটি ইটের গাঁথনির ঘর রয়েছে। ভোর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত ওই ঘরেই বসে থাকেন কল্যাণী থানার এক সিভিক ভলান্টিয়ার। তাঁর সাগরেদ হিসেবে থাকেন কল্যাণী ও বীজপুর থানা এলাকার জনা চারেক যুবক। গাড়ি মালিকদের একাংশের অভিযোগ, ইমারতি সামগ্রী নিয়ে ছোট গাড়ি হুগলি থেকে ঈশ্বরগুপ্ত সেতু পেরোলেই ওই ঘর থেকে এক বা একাধিক যুবক এসে পথ আগলে দাঁড়িয়ে পড়েন। সঙ্গে সঙ্গে ওঁদের পকেটে ১৫০ টাকা গুঁজে দিতে হয়। সারা দিনে এক বার দিলেই পার পাওয়া যায় না। যত বার গাড়ি সেতু পেরোয় তত বারই সিভিক ভলান্টিয়ার ও তাঁর সাগরেদদের ১৫০ টাকা করে দিতে হয়। মঙ্গলবার সেখানে গিয়ে দেখা যায়, একটি বালি ভর্তি ছোট গাড়ি থেকে টাকা নেওয়া হচ্ছে। এ ভাবেই মিনিট কুড়ির মধ্যেই দেখা গেল অন্তত ১০টি গাড়ির চালক বা খালাসির হাত থেকে এক যুবক টাকা নিলেন। ততক্ষণে ওই যুবকের কার্যকলাপ ক্যামেরাবন্দি হয়ে গিয়েছে। এ নিয়ে প্রশ্ন করা হলে ওই যুবক প্রথমে বিষয়টি অস্বীকার করেন। পরে ভিডিও দেখালে তিনি ছুটে পালিয়ে যান। ততক্ষণে ঘরে থাকা সিভিক ভলান্টিয়ার ও একাধিক যুবক এসে জানতে চান কী হয়েছে। তোলাবাজির ভিডিও-র কথা জানাতে তাঁরাও ছুটে পালান। স্থানীয়দের অভিযোগ, থানার আধিকারিকদের একাংশও এই তোলাবাজির সঙ্গে জড়িত।
ব্যবসায়ীদের একাংশের দাবি, এত টাকা পুলিশকে দিয়ে বালি আনার ফলে বাজারে বালির দরও বেড়ে গিয়েছে। ১০০ সিএফটি মোটা বালি আগে ৩৭০০ টাকায় পাওয়া যেত। এখন তার দর হয়েছে ৪২০০ টাকা। মিহি ও ধুস বালি যথাক্রমে বিকোচ্ছে প্রতি ১০০ সিএফটি ৩৭০০ এবং ৩৫০০ টাকায়। অথচ আগে সব রকমের বালির দর ছিল কম।
কল্যাণী শহরের তৃণমূল নেতা কৃষ্ণ মাহাতো বলেন, ‘‘পুলিশের তোলাবাজির জন্য সাধারণ মানুষকে বহু টাকা অতিরিক্ত দিয়ে বালি কিনতে হচ্ছে। আর পুলিশ এই তোলাবাজি করে সরকারের দুর্নাম করছে।’’ কল্যাণী থানার আইসি মানস মজুমদার বলেন, ‘‘সেতুর কাছে একজন সিভিক ভলান্টিয়ার থাকেন। কারণ, সেতুটি দুই জেলার সীমান্তে রয়েছে। ফলে অনেক সময় নানা অপরাধ ঘটে। সে রকম কিছু ঘটলে ওই সিভিক ভলান্টিয়ার সঙ্গে সঙ্গে ঝামেলার কথা থানায় জানান। কিন্তু এ ভাবে গাড়ি থেকে টাকা তোলা হয় বলে তো জানি না।’’
রানাঘাট পুলিশ জেলার সুপার ভি এস আর অনন্তনাগ বলেন, ‘‘এটা তো গুরুতর অভিযোগ। এই অভিযোগ সত্যি কিনা তা আমি যাচাই করে দেখব।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy