Advertisement
২৫ নভেম্বর ২০২৪
Shantipur

গ্রেফতার কুমারেশ, দেখতে গেলেন অরিন্দম

কুমারেশ চক্রবর্তী নামে ওই অভিযুক্ত স্থানীয় তৃণমূল নেতা এবং শান্তিপুরের বিধায়ক অরিন্দম ভট্টাচার্যের অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ হিসাবে পরিচিত। অরিন্দমের বিরুদ্ধে এই খুনের ষড়যন্ত্রে যুক্ত থাকার অভিযোগ রয়েছে। তবে তিনি এখনও পর্যন্ত বহাল তবিয়তে বিভিন্ন অনুষ্ঠানে, সভায় যাচ্ছেন বলে অভিযোগ। এমনকি শুক্রবার কুমারেশকে গ্রেফতার করার পরে অরিন্দম শান্তিপুর থানায় তাঁর সঙ্গে দেখা করতেও যান। তা সত্ত্বেও পুলিশ বিধায়ককে এখনও পর্যন্ত জিজ্ঞাসাবাদ করেননি।

প্রতীকী চিত্র।

প্রতীকী চিত্র।

সম্রাট চন্দ
শান্তিপুর শেষ আপডেট: ১৮ জানুয়ারি ২০২০ ০৪:১১
Share: Save:

ভরদুপুরে জুয়ার ঠেকে তৃণমূল কর্মী শান্তনু মাহাতো ওরফে গনা খুন হওয়ার তিন দিনের মাথায় দ্বিতীয় অভিযুক্তকে গ্রেফতার করল পুলিশ। তাঁর বিরুদ্ধে খুন ও চক্রান্তের অভিযোগ আনা হয়েছে।

কুমারেশ চক্রবর্তী নামে ওই অভিযুক্ত স্থানীয় তৃণমূল নেতা এবং শান্তিপুরের বিধায়ক অরিন্দম ভট্টাচার্যের অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ হিসাবে পরিচিত। অরিন্দমের বিরুদ্ধে এই খুনের ষড়যন্ত্রে যুক্ত থাকার অভিযোগ রয়েছে। তবে তিনি এখনও পর্যন্ত বহাল তবিয়তে বিভিন্ন অনুষ্ঠানে, সভায় যাচ্ছেন বলে অভিযোগ। এমনকি শুক্রবার কুমারেশকে গ্রেফতার করার পরে অরিন্দম শান্তিপুর থানায় তাঁর সঙ্গে দেখা করতেও যান। তা সত্ত্বেও পুলিশ বিধায়ককে এখনও পর্যন্ত জিজ্ঞাসাবাদ করেননি।

যিনি নিজে খুনের ষড়যন্ত্রে জড়িত তিনি দিব্যি থানায় গিয়ে খুনের অন্য অভিযুক্তকে দেখে আসছেন, অথচ পুলিশ তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করছে না, এমন পরিস্থিতিতে শান্তিপুরে তৃণমূলের একাংশের মধ্যেই ক্ষোভ তৈরি হয়েছে। কারণ, নিহত ব্যক্তিও এলাকার তৃণমূল কর্মী ছিলেন এবং শান্তিপুরের পুরপ্রধান অজয় দে-র অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ হিসাবে পরিচিত ছিলেন। রানাঘাট পুলিশ জেলার সুপার ভিএসআর অনন্তনাগ এ ব্যাপারে বলেন, “তদন্তের প্রয়োজনে যখন যাঁর সঙ্গে কথা বলা বা জিজ্ঞাসাবাদের দরকার হবে সেইমতো বলা হবে।” আর বিধায়ক নিজে বলেন, “কুমারেশ অসুস্থ। তাই এ দিন তাঁকে দেখতে গিয়েছিলাম। প্রশাসনের উপরে আমার ভরসা আছে। মিথ্যা মামলায় কাউকে ফাঁসানো হবে না। যা সত্যি সেটাই প্রকাশিত হবে।”

কুমারেশের সঙ্গে ইদানিং বিধায়কের ভাল সম্পর্ক হলেও অতীতে তা ছিল না বলে রাজনৈতিক সূত্রের খবর। এক সময়ে শান্তিপুরে কংগ্রেসের নেতা ছিলেন কুমারেশ। শান্তিপুরের উপ পুরপ্রধানও হন। তৃণমূল তৈরির সময় তিনি তৃণমূলে যোগ দেন। তবে প্রথম থেকেই অজয় দে বিরোধী হিসাবে তিনি পরিচিত। ২০০১ সালে তৃণমূল এবং কংগ্রেসের জোট হওয়ায় তিনি বিজেপি প্রার্থী হয়ে দাঁড়ান শান্তিপুর বিধানসভায়। পরে ফের তৃণমূলে ফেরেন। এর মাঝে এক বার পৃথক মঞ্চের হয়ে পুরভোটেও লড়েছিলেন। ২০১৪ সালের উপনির্বাচনে অজয় দে-র বিরুদ্ধে দাঁড়িয়েছিলেন কংগ্রেস প্রার্থী হিসাবে। ২০১৬ সালের বিধানসভা ভোটে তিনি ছিলেন কংগ্রেস শিবিরে। ২০১৭ সালে তৃণমূলে ফেরেন।

বছর খানেক আগে বিধায়ক অরিন্দমের সঙ্গে তাঁর দূরত্ব তৈরি হয়েছিল। সেই সময়ে অরিন্দমের বিরুদ্ধে তিনি দলীয় নেতৃত্বের কাছে লিখিত অভিযোগও জানান। তবে অরিন্দম ও কুমারেশ দু’জনেই বরাবর অজয় বিরোধী ছিলেন এবং এ ব্যাপারে তাঁদের মিলই তাঁদের শেষ পর্যন্ত কাছাকাছি নিয়ে এসেছিল বলে দলীয় সূত্রের খবর। সম্প্রতি তাঁদের সম্পর্ক যথেষ্ট ভাল হয়েছিল।

শুক্রবার সকালে কুমারেশকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করে শান্তিপুর থানার পুলিশ। সন্ধ্যার দিকে তাঁকে গ্রেফতার করা হয়। এর আগে একই ঘটনায় ধরা পড়েছিলেন সন্তু চৌধুরী নামে এক জন। তিনি পুলিশ হেফাজতে রয়েছেন। গত বৃহস্পতিবার বিকেলে শান্তিপুর থানার পুলিশের একটি দল গয়েশপুরের টেঙরিডাঙায় খুনের অন্যতম অভিযুক্ত শান্তিপুর পঞ্চায়েত সমিতির তৃণমূল সদস্য আনোয়ার হোসেন মণ্ডলকে ধরতে যায়। অভিযোগ, সেই সময়ে অজ্ঞাতপরিতয় কয়েক জন এসে পুলিশকে বাধা দেয় এবং জোর করে অভিযুক্তকে ছাড়িয়ে নিয়ে যায়। পুলিশের গাড়ির কাচে সেই সময় ইট পড়ে বলে দাবি করা হয়েছে। আনোয়ারও অরিন্দম-ঘনিষ্ঠ হিসাবে পরিচিত।

অন্য বিষয়গুলি:

Shantipur TMC Murder Gambling
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy