প্রতীকী ছবি।
পনেরো দিনের মধ্যে একই গ্রামে জ্বরে আক্রান্ত হয়ে দু’জনের মৃত্যু হল। পরিবার ও স্থানীয় সূত্রে দু’টি ক্ষেত্রেই মৃত্যুর কারণ ডেঙ্গি বলে দাবি করা হয়েছে। যদিও জেলার স্বাস্থ্য দফতর একে ডেঙ্গি বলতে রাজি নন। তবে মৃত্যু ডেঙ্গিতে হয়নি এমন কথাও তারা জোর দিয়ে বলতে পারছেন না। কারণ, তাঁদের ডেঙ্গির চিকিৎসা করা হয়েছে বলে শক্তিনগর জেলা হাসপাতাল সূত্রের খবর।
হাঁসখালির এই তারকনগর গ্রামে কিছু দিন আগেই মাখন বিশ্বাস নামে এক জনকে জ্বর নিয়ে শক্তিনগর জেলা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল। চিকিৎসা চলাকালীন সেখানেই তাঁর মৃত্যু হয়। কিন্তু হাসপাতালে ভর্তির পর এত দ্রুত তিনি মারা গিয়েছিলেন যে রক্ত পরীক্ষার সময় পাওয়া যায়নি বলে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ দাবি করেছিল। তাঁকে অবশ্য মৃত্যুর আগে ডেঙ্গির সমস্ত রকম চিকিৎসা দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু যেহেতু রক্তপরীক্ষা হয়নি তাই আনুষ্ঠানিক ভাবে ডেঙ্গি হয়েছে তা প্রমাণ করা যায়নি। একই ঘটনা ঘটেছে ওই গ্রামের আর এক বাসিন্দা সুমিত্রা গাইনের ক্ষেত্রে।
রবিবার অসুস্থ সুমিত্রাদেবীকে বগুলা গ্রামীণ হাসপাতাল থেকে শক্তিনগর জেলা হাসপাতালে রেফার করা হয়। রাতে সেখানেই তাঁর মৃত্যু হয়। ডেথ সার্টিফিকেটে ডেঙ্গি লেখা না থাকলেও হাসপাতাল জানিয়েছে, তাঁর ডেঙ্গির চিকিৎসা শুরু করা হয়েছিল। তারকনগর এলাকার একটি বেসরকারি প্যাথলজিক্যাল ল্যাবরেটরি থেকে তাঁর রক্ত পরীক্ষা করিয়েছিলেন আত্মীয়েরা। তাঁদের দাবি, পরীক্ষায় এনএসওয়ান-পজিটিভ বলে উল্লেখ করা হয়েছে। তবে নিশ্চিত ভাবে ডেঙ্গি হয়েছে বলে এই পরীক্ষায় বলা যায় না। তার জন্য এলাইজা টেস্ট প্রয়োজন হয়। সেই সময় পাওয়া যায়নি। তার আগেই সুমিত্রাদেবী মারা যান।
শক্তিনগর জেলা হাসপাতালের সুপার শচীন্দ্রনাথ সরকার বলছেন, “বেসরকারি কোনও প্রতিষ্ঠানের রিপোর্ট দেখে আমরা ডেঙ্গি হয়েছে বলতে পারি না। এর জন্য সরকারি জায়গা থেকে এলাইজা টেস্ট করা প্রয়োজন। আমরা সুমিত্রাদেবী জীবিত থাকাকালীন রক্তের নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষার জন্য পাঠিয়েছিলাম। সেই রিপোর্ট এখনও আসেনি। এলে নিশ্চিত হওয়া যাবে।’’ তবে স্বাস্থ্যকর্তাদের আক্ষেপ, দু’টি ক্ষেত্রেই রোগী একেবারে শেষ মুহূর্তে হাসপাতালে এসেছিল। আরও আগে এলে হয়তো বাঁচানো যেত। কিন্তু এত প্রচার সত্ত্বেও প্রথম দিকে লোকজন জ্বরকে হেলাফেলা করছে।
মৃত সুমিত্রা গাইনের ছেলে অপূর্ব গাইন বলেন, “প্রায় এক মাস ধরে মায়ের জ্বর ছিল। স্থানীয় গ্রামীণ চিকিৎসকের থেকে ওষুধ এনে খাইয়েছিলাম। কিন্তু প্রথমে জ্বর সেরে গিয়ে আবার আসছিল।” তার কথায়, “দু’দিন আগে আবার জ্বর আসে। সঙ্গে দুর্বলতা আর গায়ের ভিতরে জ্বালা ভাব ছিল। তখন বগুলা গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে দিয়েছিলেম।”
সরাসরি ডেঙ্গিতে মৃত্যু হয়েছে বলতে না-চাইলেও বিষয়টি হালকা ভাবে নিতে রাজি নন জেলার স্বাস্থ্যকর্তারা। তারকনগরের পাশেই বৈশরকুঠি গ্রামে ১৬ জনের ডেঙ্গি ধরা পড়েছিল। সেখানে টানা মেডিক্যাল ক্যাম্প করা হয়। এ বার সেই একই পদক্ষেপ করা হবে তারকনগরে। জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক তাপস রায় বসছেন, “মঙ্গলবারই ওই গ্রামে মেডিক্যাল টিম পাঠানো হবে। এলাকায় যাঁদের জ্বর রয়েছে তাঁদের রক্ত পরীক্ষা করা হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy