প্রতীকী ছবি।
মাত্র কিছু দিন আগের কথা। তেহট্ট মুসলিম পাড়ার দরিদ্র ভাগচাষি সুখেন বিশ্বাস তাঁর পেঁয়াজ চাষের প্রায় সব টাকা মুখ্যমন্ত্রীর করোনা তহবিলে দান করেছিলেন। যাতে রোগ প্রতিরোধের কাজের জন্য সঞ্চয় করা সরকারি পুঁজি কিছুটা হলেও বাড়ে। সঙ্কটের মুহূর্তে নিজের ক্ষমতার অতিরিক্ত এগিয়ে প্রশাসনকে সাহায্য করেছিলেন।
কিন্তু কিছু দিনের মধ্যেই যখন বিধ্বংসী ঘূর্ণিঝড় সেই ভাগচাষির বহু শ্রমের ফসল শেষ করে দিয়ে চলে গেল, তখন তাঁর কথা ভাবার সময় থাকল না কারও। প্রশাসন তরফে তখন ক্ষতিপূরণ দূরে থাক, পাঁচ দিন কেটে গেলেও কোনও কর্তা এক বার এসে সান্ত্বনাটুকু দিলেন না সুখেনকে।
ঝড় ও বৃষ্টিতে তাঁর জমির সমস্ত ফসল নষ্ট হয়ে গিয়েছে। মাথা গোঁজার ঠাঁইটুকু রয়েছে কোনওরকম। আপাতত পরিবার নিয়ে কী ভাবে দিন কাটাবেন, তা নিয়ে দুশ্চিন্তায় রয়েছেন তিনি। গত কয়েক দিনে এক বারও সরকারের তরফে কেউ এসে ক্ষতিপূরণের কথা বলেননি তাঁকে।
তাঁর কথায়, ‘‘আমার ১৬ বিঘা জমির পাট, ২ বিঘার কলা, ২বিঘা জমির ধান ঝড়ে শেষ হয়ে গিয়েছে। ভেবেছিলাম, এই পাট বিক্রি করে আরও ১০ হাজার টাকা সাধারণ মানুষের জন্য মুখ্যমন্ত্রীর করোনা তহবিলে দান করব। কিন্তু প্রাকৃতিক দুর্যোগে সব শেষ হয়ে গেল। এখন পেট চালাবো কী করে সে চিন্তাই করছি।’’
হাবরিপাড়া এলাকার এক সমাজসেবী প্রশান্ত বিশ্বাসকে সঙ্গে নিয়ে গত মাসের ২১ তারিখে সুখেন তেহট্ট ব্লক অফিসে যান। সেখানেই মুখ্যমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিলে সাহায্য করবার জন্য বিডিও অচ্যুতানন্দ পাঠকের হাতে ৫০০০ টাকা তুলে দেন। সেই সময় বিডিও, পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি স্থানীয় মানুষরা এবং তেহট্ট বিধানসভার বিধায়ক গৌরীশংকর দত্ত তাঁকে ফোনে ধন্যবাদ জানিয়েছিলেন।
প্রশান্তবাবুর কথায়, ‘‘এক জন ভাগচাষি কত কষ্টে টাকা রোজগার করেন। তাঁর কাছে ৫ হাজার টাকা অনেক। সেই টাকা তিনি অনায়াসে প্রশাসনের হাতে তুলে দিয়েছিলেন। কিন্তু আজ তাঁর দুঃসময়ে পাশে প্রশাসনের কেউ নেই। তাঁর মতো ক্ষতিগ্রস্ত বহু চাষি এখনও কোনও সাহায্য পাননি।’’
স্থানীয় বাসিন্দারা সবাই মিলে তেহট্ট পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি ছন্দা বিবি খানের কাছে বিষয়টি জানান, উনি পাশে দাঁড়ানোর আশ্বাস দিয়েছেন। তাঁর কথায়, ‘‘আপাতত তাঁর মতো ঝড়-বিধ্বস্ত তাষিদের খাবারের সংস্থান করা হবে। উনি মানুষের জন্য ভাবেন। আজ তিনি নিজে অসহায়, তাই তাঁর পাশে দাঁড়ানোর জন্য যথাসম্ভব চেষ্টা আমরা চালাবো।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy