—ফাইল চিত্র
দুপুর থেকেই টিভি খোলা। ঢাউস টিভিটার মুখোমুখি প্রায় হুমড়ি খেয়ে পড়েছেন কর্মীরা। মেজো নেতার কাঁধ উঁচিয়ে নিচুতলার কর্মীর গভীর শ্বাস, ছোট নেতার হাতের তলা দিয়ে মাথা গলিয়ে টিভি দেখছেন দাপুটে কাউন্সিলর। ভূগোল ভুলে বহরমপুর তৃণমূল কার্যালয় পৌঁছে গিয়েছিল মেদিনীপুর কলেজ মাঠে।
দেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী তাচ্ছিল্য এবং হাত সঞ্চালনে রাজ্য সরকারকে প্রায় কুপোকাত করে কী ‘বাণী’ দিচ্ছেন, কারও কান সেদিকে নেই। তিল পতনের নিস্তব্ধতায় তৃণমূল কার্যালয়ের সবক’টি চোখ। শনিবার শেষ দুপুর তখন আতিপাতি করে খুঁজছে একটা মুখ, শুভেন্দু অধিকারী। ‘দাদা’কে খুঁজে পাওয়ার পরে চোখ ঘুরতে থাকল অন্য চেনা মুখের খোঁজে। তবে এদিন অন্তত শুভেন্দুর দলত্যাগের মঞ্চে জেলার সেই সব মুখ দেখা যায়নি, যাঁদের নিয়ে গুজব ছিল তুঙ্গে। জেলা তৃণমূলের সভাপতি আবু তাহের খান তাই আপাত স্বস্তির শ্বাস ফেলে বলছেন, “যাক, মুর্শিদাবাদের কাউকে তো দেখা গেল না!”
যাদের দেখার কথা ছিল বলে গত এক মাস ধরে কৌতূহল আকাশ ছুঁয়েছিল জেলায়, এদিন বাস্তবিকই ওই মঞ্চের ধারে-কাছে কাউকে দেখা যায়নি তাঁদের। ক’দিন আগেও মুর্শিদাবাদ জেলা পরিষদের সভাধিপতি মোশারফ হোসেন মণ্ডলের ঠোঁটে চেনা লব্জ ছিল “শুভেন্দুদা আমার রাজনৈতিক অভিভাবক। তিনি যা বলবেন তাই হবে।” এদিন অবশ্য ১৮০ ডিগ্রি ঘুরে গিয়ে সেই মোশারফের গলায় শোনা গেল, “আমি জেলার জন্য উন্নয়ন নিয়ে ব্যস্ত আছি। কে, কী করল তা আমার নজরে নেই।” ‘দাদা’র আর এক ঘোর ভক্ত খাদ্য কর্মাধ্যক্ষ মইদুল হাসান শুভেন্দুর হাত ধরে তাঁর দলত্যাগের প্রশ্নে বলেছিলেন “সময় বলবে।” শনিবার দুপুরে অবশ্য তাঁর গলায় শোনা গেল, “প্রত্যেক মানুষেরই ব্যক্তিগত স্বাধীনতা আছে, পছন্দ আছে। সেই মতো তিনি নতুন দলে গিয়েছেন। কিন্তু আমি তো তৃণমূলেই আছি।” সম্ভাব্য দলত্যাগীদের এহেন বার্তায় জেলা তৃণমূলের এক প্রবীণ নেতা বলছেন, “আগেই বলেছিলাম, সংখ্যালঘু অধ্যুষিত মুর্শিদাবাদ থেকে সহজে কেউ বিজেপি-তে যাবে না। কারণ, এ জেলায় বিজেপি-র ভবিষ্যৎ সম্পর্কে তাঁদের ধারণা আছে।” তবে, দলের অন্দরের খবর, দাদার অনুগামীদের অনেকেই অদূর ভবিষ্যতে দল বদল করবেন। অনেকেই মনে করছেন, মুর্শিদাবাদেও যেভাবে কংগ্রেস ভেঙে তৃণমূল ভরিয়ে ছিলেন, একই পদ্ধতিতে আগামী দিনে ‘টোপ’ দিয়ে এ জেলার তৃণমূল ভাঙবেন শুভেন্দু। জেলা কংগ্রেসের মুখপাত্র জয়ন্ত দাস কটাক্ষ করে বলছেন, “শুভেন্দুর যোগদানের পরে যে হারে দলত্যাগের হিড়িক পড়েছে, তাতে মুর্শিদাবাদেও তৃণমূলের পদত্যাগপত্র গ্রহণ করার জন্য আলাদা কার্যালয় খুলতে হবে!”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy